সচ্চিদানন্দদে সদয়,আশাশুনি: আশাশুনি উপজেলার ৪১ নং যদুয়ারডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি ভবন পরিত্যক্ত ঘোষণা করায় ক্লাশ পরিচালনা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। উপায়ন্তর না পেয়ে পাশের মন্দির, স্কুলের বারান্দা ও মাঠে ঠাসাঠাসি করে বসে ক্লাশ পরিচালনা করতে বাধ্য হচ্ছে।
ধূ-ধূ বিলের মধ্যে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা গ্রামের মানুষের বাচ্চাদের পড়ালেখা করানোর কোন সুযোগ ছিলনা। গ্রামবাসী অতিকষ্টে ১৯৫০ সালে ৬২ শতক জমির উপর স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করেন। তখন মাটির দেওয়ালের উপর ছনের ছাউনি দিয়ে ক্লাশ চালানো হতো। পরবর্তীতে মাটির দেওয়ালে টালিদিয়ে ছাওয়া হয়। তখন ৩টি কক্ষে ক্লাশ চলতো। বাকী ক্লাশ গাছ তলায় করা হতো। সরকার ১৯৯৪ সালে ৪ কক্ষ বিশিষ্ট একটি বিল্ডিং নির্মান করেন। একটিতে অফিস অন্য দু’টিতে ক্লাশ চলতো। ১৯১ জন ছাত্রছাত্রী নিয়ে পরিচালিত স্কুলের কক্ষের অভাব প্রকট হয়ে দেখা দিলে ২০০৬ সালে পিডিপি-২ প্রকল্পের আওতায় ২ কক্ষ বিশিষ্ট একটি ভবন নির্মান করা হয়। তখন বেশ ভালভাবে ক্লাশ নেওয়া যেত। কিন্তু গত কয়েক বছর যাবৎ ৪ কক্ষের পুরাতন বিল্ডিংটি খুবই নাজুক হয়ে পড়ায় চরম ঝুঁকিতে ক্লাশ পরিচালনা করে আসা হচ্ছিল। বর্ষা মৌসুমে ছাদ দিয়ে পানি পড়া, ছাদের পলেস্তারা খসে খসে পড়ায় অনেক ছাত্র-শিক্ষক কমবেশী আহত হয়েছেন। দেওয়াল ও পিলার ফেটে যাওয়া, মেঝেতে ফাটল ধরা, জানালাগুলো নষ্ট হয়ে যাওয়ায় বাধ্য হয়ে কর্তৃপক্ষ ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করেন। তারপরও উয়ান্তর না থাকায় ৪টি কক্ষের দু’টিতে ঝুঁকি মাথায় নিয়ে ক্লাশ নেওয়া হচ্ছিল। এখন দুই শিফটে ক্লাশ চালান হলেও কক্ষের অভাবে পাশের মন্দিরে, অন্য বিল্ডিং এর বারান্দায়, অফিস কক্ষের মধ্যে ও মাঝে মধ্যে মাঠে ক্লাশ নিতে হচ্ছে। টিনের ছাউনি ছোট্ট মন্দিরে প্রচন্ড গরমে মেঝেতে বসে ক্লাশ করা, ঘরের ছোট্ট বারান্দায় ঠাসাঠাসি করিয়ে ক্লাশ চালান খুবই কষ্টকর হলেও বাধ্য হয়ে সেটি করা হচ্ছে। এছাড়া ১৯৯৪ সালে নির্মীত টয়লেটের অবস্থা খুবই বেহাল। টিউব ওয়েলের পানিতে আর্সেনিক থাকায় সুপেয় পানির সংকট বিরাজমান। বর্ষায় স্কুলের সামনের মাঠ নিমজ্জিত থাকায় খেলাধুলা পড়ে থাক চলাচল বিপদজনক হয়ে ওঠে। ফাকা মাঠের মধ্যে স্কুল অবস্থিত, সীমানা প্রাচীর না থাকায় স্কুলটি অরক্ষিত হয়ে থাকে। এজন্য নতুন ভবন নির্মান, টয়লেট নির্মান, সুপেয় পানির অভাব দুর করা, মাঠ ভরাট ও সীমান প্রাচীর নির্মানের জন্য এলাকাবাসী ও অভিভাবক মহল উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
আশাশুনির যদুয়ারডাঙ্গা প্রাইমারী স্কুল ভবন পরিত্যক্ত : ক্লাশ চলছে মন্দির, বারান্দা ও মাঠে
পূর্ববর্তী পোস্ট