কালিগঞ্জে স্ত্রীকে হত্যা করে থানায় নিখোঁজ জিডি: লাশ উদ্ধারসহ ঘাতক স্বামী আটক

কর্তৃক Ahadur Rahman Jony
০ কমেন্ট 81 ভিউস

হাফিজুর রহমান, কালিগঞ্জ প্রতিনিধি: পরকীয়া সন্দেহে কালিগঞ্জের পল্লীতে স্ত্রীকে নির্যাতনের পর শ্বাসরোধে হত্যা করে সেফটি ট্যাঙ্কে লুকিয়ে নাটক সাজাতে থানায় নিখোজ জিডি করে বাঁচতে পারলো না ঘাতক স্বামী শহিদুল। ১০ দিন পর বাড়ীর পাশে এক’শ গজ দূরে সেফটি ট্যাঙ্কের মধ্যে হতে লাশ উদ্ধার করে ঘাতক স্বামীকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে জনতা। ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার বেলা ১১টার সময় উপজেলার দঃশ্রীপুর ইউনিয়নের সোনাতলা পূর্ব পাড়া গ্রামে। পুলিশের হাতে আটক ঘাতক শহিদুল কারিকর (৩৫) উপজেলার দুধলী গ্রামের লালচাঁদ কারিকরের পুত্র বর্তমান সোনাতলা গ্রামে নানার বাড়ীতে বসবাস করতো। নিহত এক সন্তানের জননী গৃহ বধুর নাম মারুফা বেগম (২৫) শ্যামনগর থানার মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের আবাদচন্ডিপুর খোওড়াঘাট গ্রামের হত দরিদ্র ভাটা শ্রমিক আব্দুল মজিদ মোল্লার কন্যা ও ঘাতক শহিদুল কারিকরের তৃতীয় স্ত্রী। ঘাতক শহিদুল কারিকর এর সঙ্গে মারুফার ৫/৬ বছর পূর্বে বিবাহ হয়। তাদের ঘরে রিপন নামে ৪ বছরের একটি সন্তান আছে। স্ত্রী মারুফার সঙ্গে প্রতিবেশী আহসান গাজীর মাছুম বিল্লাহ সঙ্গে পরকীয়া নিয়ে প্রায় শহিদুল মারুফাকে নির্যাতন চালিয়ে আসছিল। উক্ত পরীকীয়ার জের ধরে গত ১৭ নভেম্ববর বাজারে ভাজা বিক্রি করে রাতে বাড়ী ফিরে স্ত্রীকে মারধরের এক পর্যায়ে লাইলনের রশি দিয়ে শ্বাস রোধ করে হত্যা করে বাড়ী পাশে পুকুরে ফেলে লাশ টেনে এক’শ গজ দূরে পরীকীয়ার অভিযুক্ত মাছুম বিল্লাহার ঘরের পিছনে লেট্রিনে সেফটি টাঙ্কের ঢাকনা খুলে লুকিয়ে রাখে। ১৮ নভেম্ববর ঘাতক শহিদুল স্ত্রী খোজার নামে শশুর বাড়ী আবাদ চন্ডিপুর খোওড়া ঘাট গ্রামে যেয়ে মারুফার বোন ফিরোজা এবং ভাবী রুপিয়াকে জানায় তাদের মেয়ে অন্য লোকের হাত ধরে রাতের আধারে পালিয়ে যাওযায় তাকে পাওয়া যাচ্ছে না। তখন সে তার পুত্র রিপনকে রাখতে বললে কান্নাকাটি করায় রাখতে পারিনি। বাড়ী এসে ১৯ নভেম্ববর ঘাতক স্বামী শহিদুল কারিকর ৪ বছরের ছেলে রিপনকে রেখে স্ত্রী মারুফা নিখোজ হয়েছে বলে কালিগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী অন্তভুক্ত করেন। যার ডায়েরী নং- ৭৯৬। স্ত্রী মারুফার মা মারা যাওয়ায় দরিদ্র বাবা আঃ মজিদ মোল্ল্যা এবং ভাই ফজলু আগে থেকেই ঢাকায় ইট ভাটায় কাজ করতে চলে যায় । যে কারণে মারুফার খোজ নেওয়ার মতন কেউ ছিল না। থানায় জিডির পর হতে ঘাতক শহিদুল ফুরফুরে মেজাজে ঘুরে বেড়ায়। এলাকাবাসী জানে শহিদুলের স্ত্রী চলে গেছে। বুধবার সকাল থেকে পচা গদ্ধে এলকাবাসীর সন্দেহ হলে ঘাতক শহিদুলকে আটকে রেখে থানায় খবর দেয় । খবর পেয়ে বেলা আনুমানিক ১০ টার সময় থানার অফিসার্স দেলোয়ার হুসেনের নেতৃত্বে ওসি তদন্ত আজিজুর রহমান জিডির তদন্তকারী কর্মকর্তা এস, আই জিয়ারত সঙ্গীয় ফোর্স পুলিশ ভ্যান যোগে বেলা ১১টায় ঘটনা স্থলে পৌছে ঘাতক শহিদুলকে আটক করে। জিঞ্জাসাবাদে সে স্ত্রীকে হত্যার ঘটনা অকপটে স্বীকার করে হত্যার ঘটনায় বণনা দেয়। তখন অফিসার্স ইনচার্জ দেলোয়র হুসেন স্বীকারউক্তি মোতাবেক সেফটি ট্যাঙ্ক থেকে লাশ উদ্ধার করে এবং তাকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে আসে। খবর পেয়ে বেলা ১টার সময় সাতক্ষীরা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও পদোন্নতি প্রাপ্ত পুলিশ সুপার ইলতুৎ মিশ ঘটনাস্থল যেয়ে পরিদর্শন করেন। তবে ঘটনার পর হইতে পরীকীয়া প্রেমিক মাসুম বিল্লাহকে এলাকায় খুজে পাইনি পুলিশ। নিহত মারুফার বাবা ভাই ঢাকায় ভাটা কাজে থাকায় তার চাচা আঃ সেলিম এবং চাচী আমিনা বেগম বোন ফিরোজা এবং ভাবী রুপিয়া বেগম সহ খবর পেয়ে বেলা ২টার সময় থানায় আসলে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়। ঐ সময় তারা বলেন আমাদের মেয়েকে সে প্রায় নির্যাতন চালাতো বলে জানায়। এ ব্যাপারে কালিগঞ্জ থানার অফিসার্স ইনচার্জ দেলোয়ার হুসেন জানান খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার এবং ঘাতক স্বামী শহিদুলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং জিঞ্জাসা বাদে স্ত্রীকে হত্যার ঘটনা স্বীকার করেছে। নিহত মারুফার পরিবার ফিরে আসলে মামলা নেওয়া হবে। বুধবার নিহত মারুফার লাশ ময়নাতদন্তের জন্য সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।



রিলেটেড পোস্ট

মতামত দিন

error: Content is protected !!