সচ্চিদানন্দ দে সদয়, আশাশুনি: টানা বৃষ্টিপাতের কারণে আশাশুনির অসহায় মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে জনজীবনে। সপ্তাহ ধরে টানা বৃষ্টিপাতের কারণে আশাশুনি সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রায় অনেকটা ছন্দপতন ঘটেছে। দিনমজুর থেকে শুরু করে অফিসগামী সবার স্বাভাবিক কাজে বাদ সেধেছে বৃষ্টি। বুধবার ভোররাত থেকেই আশাশুনিতে ভারী বর্ষণ শুরু হয়। এরপর তা থেমে থেমে চলে। এ ছাড়া সকাল থেকেই আকাশ মেঘাচ্ছন্ন হয়ে আছে। বৃষ্টির কারণে চারপাশ কর্দমাক্ত হয়ে পড়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন স্থানে দেখা দিয়েছে জলাবদ্ধতা। ফলে বেড়েছে দুর্ভোগ। এদিকে বৃষ্টির কারণে খেটে খাওয়া মানুষের স্বাভাবিক কাজকর্মে ব্যাঘাত ঘটছে। শ্রমজীবী মানুষের অনেকেই কাজ থেকে বঞ্চিত রয়েছে এই বৃষ্টিতে।সাধারণ মানুষেরা জানান, কয়েকদিন থেকে কখনো ভারী বর্ষণ আবার কখনো গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি। এ ছাড়া আকাশ কালো মেঘে ছেয়ে রয়েছে। বৃষ্টির কারণে বাড়ির আশপাশের ডোবা-নালা-খাল ডুবে গেছে। একাধিক কৃষক জানান, এমন বৃষ্টি মৌসুমের শুরুতে হলে পাট জাগ দেওয়া নিয়ে বিপাকে পড়তে হতো না। এখন ডোবা-নালা-পুকুরে বৃষ্টির পানি। এদিকে সকাল থেকে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন এবং মাঝেমধ্যেই গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হওয়ায় স্থানীয় হাটবাজারে মানুষের উপস্থিতি কমে গেছে। বেচাকেনাও কম হচ্ছে। অপর দিকে বেতনা নদী খননের কাজ পরিপূর্ণ না হওয়ায় জলবদ্ধতার কারনে বুধহাটা পূর্ব পাড়ার কয়েকহাজার মানুষ পানি বন্ধী হয়ে পড়েছে।তাদের মধ্যে ডেঙ্গু আতঙ্ক বিরাজ করছে।জরুরি ভিত্তিতে পানি সরানোর ব্যবস্থা করার জন্য ভুক্ত ভোগিরা জোর দাবি জানিয়েছেন। জাহাঙ্গীর নামের এক সবজি বিক্রেতা বলেন, ‘বৃষ্টির কারণে বাজারে ক্রেতাদের উপস্থিতি কম। বিক্রিও কম হচ্ছে। তিন দিন ধরে বৃষ্টির কারণে ব্যবসার কিছুটা ক্ষতি হচ্ছে।’ভ্যানচালক মো. আসাদুল বলেন, ‘সকাল থেকে বৃষ্টি। কোনো যাত্রী নাই। ভ্যান নিয়ে শুধু অলস বসে থাকা। দুই দিন ধরে এই অবস্থা।’খেটে খাওয়া মানুষের জন্য এই বৃষ্টি এক দুর্ভোগ হয়ে দেখা দিয়েছে। দিন মজুর শহিদুল বলেন, ‘মাথায় কিস্তির চাপ, তাই ঘরে না থেকে টাকা আয় করতে বেরিয়ে পড়লাম। তবে কিস্তির টাকা জোগাড় করা মনে হয় সম্ভব হবে না।’ অপর একজন কলার দোকানি আহাদ মোল্লা বলেন, ‘বৃষ্টির দিনে বেচা-কেনা খুবই কম। ছেলেডার প্রাইভেট খরচের টাকা জোগাড় করতেই কলা বিক্রি করতে এসেছি তবে পুরো কলা মনে হয় আজ বিক্রি হবে না।’ এদিকে নিত্যপ্রয়োজনীয় কাজ সারতে অনেকেই ছাতা মাথায় দিয়ে ছুটে যাচ্ছেন গন্তব্যের দিকে। বৃষ্টি ঘন দিনে চায়ের দোকানের আড্ডা চলছে সমানে। আসন্ন রাজনীতি নিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা চলছে বাজিমাত কথা। সঙ্গে সমানে ফুকাচ্ছেন চা ও বিড়ি। চায়ের দোকানে গল্পে মজে থাকা কয়েকজন লোকের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, সারাদিন বৃষ্টি হচ্ছে, বাড়ি থেকে আর কি করব, তাই চলে আসলাম চায়ের দোকানে। বৃষ্টিতে বাড়ি থাকতে ভালো লাগে না দোকানে এসে লোকের সঙ্গে কথা বললে সময় কেটে যায় তাই চায়ের দোকানে বসেই গল্প গুজব করছি।অন্যদিকে শরতে আষাঢ়ের বৃষ্টি উপভোগও করছেন অনেকে।
টানা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত জনজীবন
পূর্ববর্তী পোস্ট