নিজস্ব প্রতিবেদক: আশাশুনির পল্লীতে চাঁদার দাবীতে চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা হাতুড়িপেটা করার ঘটনায় অবশেষে মামলা নিয়েছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (২৬ মার্চ) দিনগত রাতে আশাশুনি থানায় মামলাটি রেকর্ড হয়। জানা যায়, আশাশুনির আগরদাড়ী গ্রামে আওয়ামী লীগ নেতা মোশারাফ হোসেন মুসা ও রহমতকে চাঁদার দাবীতে চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা হাতুড়িপেটা করে। রোববার দিবাগত রাত সাড়ে এগারটায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় রহমত সরদার বাদী হয়ে ঘটনার পর দিনই আশাশুনি থানায় একটি লিখিত এজাহার জমা দেয়।
এজাহার সূত্রে ও আহতের কাছ থেকে জানা যায়, কূল্যা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আলমগীর হোসেন আংগুর একটি মামলায় সম্প্রতি জেলে যায়। জামিন পেয়ে সে বাড়ি ফিরে সে। এ সময় ২২ মার্চ বিকাল ৫টার সময় ধর্মতলা মোড়ে রহমতকে পেয়ে হুমকি দেয়। এসময় আংগুর মেম্বর শাঁসিয়ে বলে, ‘তুই মামলা করে আমাকে জেল খাটিয়েছিস। তুই আমাকে অনেক বেইজ্জতি করেছিস। এজন্য আমাকে ৫০ হাজার টাকা দিবি।’
সেদিন রাতে আমি ও মোশারাফ হোসেন মুসা বাড়ী ফেরার পথে আংগুর মেম্বর ও তার দলবল আমার গতিরোধ করে। এ সময় আমি বাধা দিলে আংগুর মেম্বরের নির্দেশে কূল্যমোড়ের চিহ্নিত সন্ত্রাসী ইয়াবা ব্যাবসায়ী ও ছিনতাইকারী সিন্ডিকেটের সদস্য বাবলু হাতুড়ি দিয়ে আমার মাথায় আঘাত করে। আঙ্গুর মেম্বাররের ভাই জাকির হোসেন লোহার রড দিয়ে আমার মাথার পিছন দিকে আঘাত করে। আমি মাটিতে লুটিয়ে পড়লে মোজাম্মেল হোসেন ওরফে ডাক্তার আমার মাথায় আবার আঘাত করতে গেলে আমি হাত দিয়ে ঠেকালে আমার হাতে লোহার রডের বাড়ি লাগে। এ সময় মুসা আমাকে বাঁচানোর জন্য ঠেকাতে গেলে মুসাকেও বেধড়ক মারপিট করা হয়। এ সময় আঙ্গুর মেম্বার রাম দা দিয়ে মুসার মাথায় কোপ দিলে সে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। বাবলু তার হাতের হাতুড়ি দিয়ে মুসার বুকে ও চোয়ালে আঘাত করে। এরপর সবাই মিলে আমাকে ও মুসাকে বেধড়ক মারপিট করতে থাকে। এ সময় আঙ্গুর মেম্বার আমাকে বলে, ‘তোর কাছে ৫০,০০০ টাকা চেয়েছিলাম দিসনাই কেন?’ তারপরই সে আমারগেঞ্জির পকেট থেকে নগদ ১৪,০০০ টাকা ছিনিয়ে নেয়। আর বলে বাকি ৩৬,০০০ টাকা তিন দিনের মধ্যে না দিলে আমার লাশ গুম করে দিবে। এক পর্যায়ে মোশারফ হোসেন, কদম আলী, রেজাউল করিম, আজিজুল ইসলাম সহ অন্যান্য পথচারীরা আমাদের উদ্ধার করে এ্যম্বুলেন্সের মাধ্যমে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করে।
এ ঘটনায় রহমত সরদার বাদী হয়ে বাবলুর রহমান(৩৫), জাকির হোসেন(৩০), মোজাম্মেল হোসেন ওরফে ডাক্তার, আলমগীর হোসেন ওরফে আঙ্গুর মেম্বার, রবিউল ইসলাম, রায়হানসহ অজ্ঞাতনামা ৩/৪ জনের নামে আশাশুনি থানায় এজাহার সোমবার (২৩ মার্চ) রাতে লিখিত এজাহার জমা দেয়। কিন্তু আশাশুনি থানার পুলিশ এক নেতার দ্বারা প্রভাবিত হয়ে মামলা নিতে গড়িমসি শুরু করে। তদন্তের নামেও করে কালক্ষেপন। এ নিয়ে একাধিক পত্র-পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হলে জেলা পুলিশের টনক নড়ে। এসবের জের ধরে বৃহস্পতিবার (২৬ মার্চ) দিনগত রাতে এজাহারটি নিয়মিত মামলা হিসেবে রেকর্ড হয়।
আঙ্গুর মেম্বার সহ ৬ জনের নামে চাঁদাবাজী মামলা
পূর্ববর্তী পোস্ট