এসএমআতিয়ার রহমান, মণিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধি:
‘মানুষের দুঃখ কষ্ট দেখলে মন কেঁদে ওঠে, প্রবাসী থেকেও তাদের মাঝে ছুটে আসেন, তাদের পাশে এসে দাঁড়ান, অসহায় ও হত-দরিদ্রদের শুধু খাবার নয়, তাদের মাথাগোঁজার ঠাঁইও করে দেন, নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি না হয়েও এসকল মানবতাবাদী কাজগুলো নি:স্বার্থভাবে যে মানুষটি করেন, তার নাম এস এম ইয়াকুব আলী’- কথাগুলো বলছিলেন নাগোরঘোপ গ্রামের হেরমত আলী।
যশোরের মণিরামপুর উপজেলার আগরহাটি গ্রামের সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে আলহাজ্ব জবেদ আলী সরদারের ছেলে দক্ষিণবঙ্গের সর্ববৃহৎ শপিংমল সিটি প্লাজার চেয়ারম্যান ও সৌদি প্রবাসী এস এম ইয়াকুব আলী। যিনি তার জীবন যৌবন সবকিছুই বিলীন করতে চান সমাজসেবা করে। সমাজসেবা যেন তার নেশায় পরিণত হয়েছে। গরীব দুঃখী মানুষ তার কাছে গিয়ে দাঁড়াতেই তিনি বুঝতে পারেন তার কি সেবা প্রয়োজন। সাথে সাথেই সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে দেন নিঃসন্দেহে। তিনি একজন সমাজসেবক ও দানশীল।
তিনি বিদেশে ব্যবসা করার পাশাপাশি জন্মভূমির মায়ায় দেশে কিছু করতে চান বলেই সেই চাওয়া থেকে যশোর শহরের প্রাণ কেন্দ্রে গড়ে তোলেন দেশের দক্ষিণ পশ্চিম অঞ্চলের সর্ববৃহৎ শপিংমল সিটি প্লাজা। তিনি ওই প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দেন হাজার হাজার মানুষের। শপিংমল করে হাত গুটায় নেননি, এরপর একই শপিংমলের ওপরে তৈরী করেন থ্রি স্টার মানের আবাসিক হোটেল, হোটেল সিটি প্লাজা ইন্টারন্যাশনাল। তিনি সৌদি আরবের তাবুকে একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। ২০০৯ সালে উল্লেখযোগ্য হারে দেশে রেমিটেন্স পাঠানোর কারণে বাংলাদেশ সরকারের প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রনালয় কর্তৃক সিআইপি (এনআরবি) কার্ড প্রদান করেন। ২০১৬ সালে আর্ন্তজাতিক অভিবাসী দিবসে জেলার সর্বোচ্চ রেমিটেন্স পাঠানোর কারণে সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়। এই জন্য এস এম ইয়াকুব আলী বাংলাদেশ সরকারের কাছে কৃতজ্ঞ। ইতিমধ্যে সফল ব্যবসায়ী ও সমাজ সেবায় অবদানের জন্য অর্জন করেছেন নানা সম্মাননা ও পুরস্কার।
গত ২০১৬ সালে অবিরাম ও কয়েকবার টানা বর্ষনের কারনে উপজেলার ১৭টি ইউনিয়নের মধ্যে ১৪টি ইউনিয়নে স্থায়ী জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয় শ্যামকুড় ইউনিয়ন। ওই ইউনিয়নের ১৯টি গ্রামের মধ্যে ১৪টি গ্রাম স্থানীয় জলাবদ্ধতার কারণে প্রায় আড়াই মাস যাবত পানিবন্দি হয়ে পড়ায় ওই এলাকার অধিকাংশ কাঁচা-ঘর বাড়ী, আাঁধাপাকা বাড়ী ভেঙ্গে ভেসে পড়ে। ফলে গৃহহারা হয়ে পড়ে প্রায় আড়াই হাজার পরিবার।
এদের মধ্যে অনেকেই বিভিন্ন উঁচু জায়গা এবং রাস্তার দু’ধারে আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নেয়। বসত ভিটে থেকে পানি সরে গেলে বানভাসি হত-দরিদ্র যে সকল মানুষের বাড়ী ঘর ভেঙ্গে ধসে পড়ে তাদের মাথা গোজার ঠাই টুকুও ছিলো না। এ সকল জলাবদ্ধ ক্ষতিগ্রস্থদের দুঃখ দূদর্শার চিত্র সিটি প্লাজার চেয়ারম্যান এস এম ইয়াকুব আলীর নজর কাড়ে। সেই উদ্দেশ্যেকে মাথায় রেখে তিনি (ইয়াকুব আলী) জলাবদ্ধ আমিনপুর গ্রামের ২০ পরিবারকে সেমিপাকা টিনের ঘর নির্মাণ করে দেন। এছাড়া উপজেলার বিভিন্ন মসজিদ, স্কুল, কলেজ ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে আর্থিক অনুদান দিয়ে সহযোগিতা করে যাচ্ছেন। যার অপর নাম একজন মহৎ দানবীর। এছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সাথে জড়িত রয়েছেন। যশোর মণিরামপুর সমিতির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান, বীর শ্রেষ্ট নূর মোহাম্মদ এপেক্স ক্লাবের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান ও ইন্টারন্যাশনাল হিউম্যান রাইটস অফ বাংলাদেশ এর যশোর জেলা শাখার সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
শ্যামকুড় ইউপি চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান মনি বলেন, আর্তমানবতার সেবা করে যাচ্ছন আমাদের ইয়াকুব সাহেব। অসহায় ও দরিদ্রদের মাঝে সবসময় তাকে পাওয়া যায়। তিনি দরিদ্র শিক্ষার্থীদের শিক্ষা উপকরণ, অসহায়দের মাঝে নগদ অর্থ বিতরণ, কখনোবা গৃহীনদের মাথাগোঁজার ঠাঁই নির্মাণ করে দিচ্ছেন। এমনই একজন সমাজসেবক দেশ ও জাতীর জন্য মডেল হতে পারে।
এস.এম ইয়াকুব আলী বলেন, সমাজের অসহায় ও হত-দরিদ্রদের জন্য কিছু করতে পারলে আমার ভাল লাগে। আমি এসকল মানুষের পাশে থেকে আর্তমানবতার সেবায় কাজ করছি। ভবিষ্যতেও এ ধারা অব্যাহত থাকবে।