সচ্চিদানন্দদেসদয়,আশাশুনি থেকে: আশাশুনি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসকদের অবহেলায় চিকিৎসা সেবা ভেঙ্গে পড়েছে। রোগিরা ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করেও চিকিৎসকের খোঁজ না পেয়ে ব্যর্থ মনোরথ হয়ে ফিরতে বাধ্য হচ্ছে।
হাসপাতালে দীর্ঘদিন চিকিৎসক সংকট চরম আকার ধারণ করেছিল। মাত্র ৩ জন চিকিৎসক অমানসিক কষ্ট করে চিকিৎসা দিয়ে এসেছেন। তখন বর্তমানের মত এতটা অবহেলার চিত্র দেখা যায়নি। বর্তমানে ১১ জন চিকিৎসক এখানে পোষ্টিং নিয়ে এসেছেন। প্রতিদিন নিয়মিত ভাবে চিকিৎসক ডিউটি বন্টন করা হয়ে থাকে। কিন্তু চিকিসকদের দায়িত্ব পালনে অবহেলার কারনে রোগিদেরা চিকিৎসা না পেয়ে ফিরতে বাধ্য হচ্ছেন। এতে হাসপাতালের উপর রোগিদের আস্থা হারাতে বসেছে। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ সুদেষ্ণা সরকার হাসপাতালে দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে তার সুদক্ষতার কারণে হাসপাতালের চিত্র পরিবর্তন হয়েছে। অবকাঠামোগত ও হাসপাতাল কমপাউন্ডের চিত্র নান্দনিক হয়েছে। চিকিৎসা সেবার মান উন্নয়নে আনা হয়েছে নতুন নতুন ব্যবস্থা। এতে রোগিদের আস্থা ফিরে আসলেও তার অনুপস্থিতি ও বিভিন্ন সময় সুযোগ কাজে লাগিয়ে কর্তব্যরত চিকিৎসকদের কারো কারো অবহেলায় চিকিৎসা সেবা থমকে যেতে বসেছে। ঘন্টার পর ঘন্টা রোগিরা বসে থাকলেও চিকিৎসকদের দেখা না পেয়ে তাদের অনেককে ফিরতে হয়ে থাকে।
বৃহস্পতিবার এমন অভিযোগের সত্যতা জানতে একদল সাংবাদিক হাসপাতালে গমন করেন। তখন বেলা পৌণে ১২ টা। হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায় ইমার্জেন্সিসহ তাদের চেম্বারে কোন চিকিৎসক নেই। ইউএইচএ ছুটি নিয়ে বাড়িতে গেছেন। এসুযোগে চিকিৎসকরা কর্মস্থলে না থাকায় রোগিরা লাইনে বসে আসেন। অসংখ্য রোগির মধ্যে দুর্গাপুর গ্রামের হালিমা খাতুন, পারভীন, শ্রীকলস গ্রামের মর্জিনা খাতুন, আশাশুনির রাফেজা খাতুন, রহমত গাজী, জালাল গাজী, আবুল হোসেন, সিরাজ গাজীসহ রোগিরা জানান, তারা বেলা ১১ টা কিংম্বা আগে পরে হাসপাতালে এসেছেন। বেলা সোয়া ১ টা পর্যন্ত তাড়া অপেক্ষায় থাকলেও কোন চিকিৎসককে না পেয়ে অপেক্ষা করে রয়েছেন। অনেকে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করেও চিকিৎসকের খোজ না পেয়ে ফিরতে বাধ্য হয়েছে।
এব্যাপারে খবর নিতে ইউএইচএ ডাঃ সুদেষ্ণা সরকারের মোবাইলে রিং করলে বন্ধ পাওয়া যায়। সিভিল সার্জনের সাথে মোবাইলে কথা বললে তিনি সাংবাদিকদের জানান, ইউএইচএ ছুটিতে থাকায় আরএমও ডাঃ দীপন বিশ্বাস দায়িত্বে আছেন। তারা অনুপস্থিত থাকলে অভিযোগ পেলে আইনী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এরপর আরএমও দীপন বিশ্বাসের সাথে মোবাইলে কথা বললে তিনি জানান, তিনি দ্বিতীয় তলায় আছেন। ইমার্জেন্সিতে ২ জন চিকিৎসকের দায়িত্ব আছে। কোন ডাক্তার ইমার্জেন্সিতে নাই বললে তিনি বলেন, আমি আসছি, দেখি কি হয়েছে। কিন্তু তিনি দীর্ঘক্ষণ আসেননি। এব্যাপারে তদন্ত পূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়েছে।