হাফিজুর রহমান, কালীগঞ্জ থেকে: জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) বর্তমান সরকারের অধীনে কোন নির্বাচনে অংশগ্রহণ না নেওয়ার ঘোষণা দিলেও সে সিদ্ধান্ত মানছেনা তৃণমূলের প্রার্থীরা। সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলার তৃতীয় ধাপের নির্বাচনে ১২টি ইউনিয়নের সব কয়টি তে জামায়াত বিএনপি’র নেতাকর্মীরা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পত্র সংগ্রহ এবং দাখিল করেছে। এবারকার নির্বাচন ফেয়ার এবং নিরপেক্ষ হবে এমন খুশিতে জামায়াতের সঙ্গে জোট বেঁধে প্রার্থী হয়েছেন। বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে জাতীয় সংসদসহ সব ধরনের নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি’র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামসহ অনেক কেন্দ্রীয় নেতারা। চলমান ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলগতভাবে বয়কটের কথা বললেও কালিগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগকে খালি মাঠে গোল দিতে দেবে না। বিএনপি-জামায়াত নির্বাচনে কোনো ছাড় দিতে নারাজ। বিএনপি-জামাত জোটের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত প্রার্থীরা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে দলীয় প্রতীক ছাড়া অংশ নিচ্ছেন। নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের কোন্দল কে পুঁজি করে বর্তমান যারা নৌকার পক্ষে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন তাদেরকে শায়েস্তা এবং পরাজিত করতে কৌশলগতভাবে আওয়ামী লীগের একটি গ্রæপ তাদের ইন্ধন দিয়ে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে গত শনিবার রাতে আওয়ামী লীগের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ড কর্তৃক নির্বাচিত কালিগঞ্জ উপ জেলার বারোটি ইউনিয়নের ১২ জনকে দলীয় প্রার্থী হিসেবে নাম ঘোষণা করেছেন। সেটা নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে মিছিল মিটিং সমাবেশ পাল্টা সমাবেশ করে যাচ্ছে দলীয় নেতাকর্মীরা। ইতিমধ্যে জেলা এবং কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে আওয়ামী লীগের একাধিক প্রার্থী মনোনয়নপত্র কেনা এবং জমা দেওয়ার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। আগামী ২ নভেম্বর প্রার্থীদের মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ তাই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের দলীয় কোন্দলের সুযোগটা হাতছাড়া করতে চায়না বিএনপি-জামায়াত জোটের নেতারা। আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী বেড়ে যাওয়ায় উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা চায় কোন্দল ঢাকতে কালীগঞ্জ উপজেলায় ইউনিয়ন পরিষদের আওয়ামী লীগের দলীয় প্রতীক না রেখে উন্মুক্ত করে দেওয়া হোক। কালীগঞ্জ উপজেলায় ১২টি ইউনিয়নের স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে বিএনপি-জামায়াত জোটের যারা মনোনয়নপত্র সংগ্রহ এবং জমা দিয়েছেন এবং দেওয়ার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের সাবেক থানা ছাত্রদলের সভাপতি রবিউল্লাহ বাহার, জামায়াত নেতা কে এম রওশান আলি। বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের থানা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবং বর্তমান স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম। চাম্পাফুল ইউনিয়নে থানা বিএনপি সাবেক সহ-সভাপতি বর্তমান আওয়ামী লীগে মনোনয়ন চেয়ে বঞ্চিত সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ মোড়ল। দক্ষিণ শ্রীপুর ইউনিয়ন এ থানা বিএনপি’র সহ-সভাপতি সাবেক চেয়ারম্যান দিদারুল ইসলাম এবং বিএনপি নেতা জুলফিকার সাপুই। কুশুলিয়া ইউনিয়ন এ থানা বিএনপি’র সহ-সভাপতি বর্তমান চেয়ারম্যান শেখ এবাদুল ইসলাম এবং থানা বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শেখ নুরুজ্জামান। নলতা ইউনিয়নে বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ড্যাবের মহাসচিব ডাক্তার শহিদুল আলমের একান্ত ঘনিষ্ঠভাজন বিএনপি নেতা বর্তমান চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান পাড়। তারালী ইউনিয়নে জামাতের সাবেক শূরা সদস্য সাবেক চেয়ারম্যান মাওলানা আব্দুল গফুর। ভাড়া সিমলা ইউনিয়নে থানা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক বর্তমান চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ বিশ্বাস এবং থানা বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক আক্তারুজ্জামান বাপ্পি। মথুরেশপুর ইউনিয়নে থানা বিএনপি’র যুগ্ম সম্পাদক নাজমুল ইসলাম বাবু এবং বিএনপি নেতা মারুফ হোসেন ধলবাড়িয়া ইউনিয়নে ইউনিয়ন বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আব্দুল করিম। রতনপুর ইউনিয়ন থানা বিএনপি’র সহ-সভাপতি সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল ওয়াহেদ এবং মৌতলা ইউনিয়নে থানা বিএনপি’র সহ-সভাপতি সাবেক চেয়ারম্যান শাহাজান আলী থানা যুবদলের যুগ্ন সম্পাদক আলমগীর হোসেন এছাড়াও আরো একাধিক প্রার্থী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারে বলে আশা করা যাচ্ছে। তবে সেজন্য ২ নভেম্বর মনোনয়ন পত্র দাখিল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।