সাতনদী অনলাইন ডেস্ক : দেখতে দেখতে চলে এসেছে কুরবানীর ঈদ। মুসলিম উম্মাহ’র ত্যাগের মহিমার পবিত্র ঈদ উল আযহা উদযাপন করতে প্রস্তুতি নিচ্ছে গোটা বাংলাদেশ। এই ঈদকে সামনে রেখে এক শ্রেণীর খামারীরা অধিক লাভের আশায় পশুকে বিভিন্ন ধরনের ক্ষতিকর পদার্থ প্রয়োগ করে ছাগল-গরু স্বাস্থ্যবান করে তোলে। এসব সুযোগ যাতে করে খামারীরা না নিতে পারে সেজন্য আগে ভাগেই র্যাব এবার নজরদারী শুরু করেছে।
আসন্ন কুরবানির ঈদে পশুকে ইনজেকশন পুশ ও ওষুধ সেবন করিয়ে মোটাতাজাকরণ রোধ করতে ঢাকার খামারগুলোর ওপর নজরদারি শুরু করেছে র্যাব। ঈদকে সামনে রেখে স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ ও ইনজেকশন প্রয়োগ করে গরু, মহিষ ও ছাগল মোটাতাজা করছেন কিছু অসাধু অর্থলোভী খামারি। বেশি দামে পশু বিক্রির জন্য খামারিরা এ পন্থা অবলম্বন করছেন। সহজলভ্য হওয়ার এ সুযোগকে কাজে লাগাচ্ছেন তারা। এসব ওষুধ হাত বাড়ালেই বিভিন্ন ফার্মেসি ও বাজারে পাওয়া যায়। যেসব জেলা ও উপজেলাগুলোতে খামারের সংখ্যা বেশী ওইসব এলাকাগুলোতে অভিযান চালাবে র্যাব। এছাড়াও গরু বিক্রির হাটগুলোতে অভিযানেরও পরিকল্পনা রয়েছে।
চিকিৎসকেরা বলছেন, অবৈধভাবে পশুকে মোটাতাজাকরণে মানুষের শরীরে স্টেরয়েড ওষুধের উপাদান ঢুকে।
এতে কিডনির সমস্যাসহ নানান জটিল রোগে আক্রান্তের সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়াও পশুকে ওইসব ওষুধ সেবন করানোর কারণে অনেক পশু বিষক্রিয়ায় মারা যাচ্ছে। খামারিদের লাভের চেয়ে ক্ষতি হচ্ছে। জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশলের আলোকে র্যাব এ অভিযান পরিচালনা করবে।
এ বিষয়ে র্যাবের ভ্রামমাণ আদালতের মাজিষ্ট্রেট মো. সারোয়ার আলম জানান, ঈদ এলেই অবৈধভাবে পশুকে মোটাতাজাকরণ করা হয়। এটা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ক্ষতিকর। ওইসব পশুর মাংস খেলে নানা রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি আরও জানান, এছাড়াও ওষুধগুলো পশুকে সেবন করিয়ে অনেক পশু নানাবিধ রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছে। ক্রেতা ও বিক্রেতার উভয়ের স্বার্থের কথা চিন্তা করে অভিযান চালানো হবে।
র্যাবের গোয়েন্দা বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ঈদ এলেই কিছু অসাধু খামারি পশুকে মোটাতাজা করার জন্য বিভিন্ন বিদেশি স্টেরয়েড ওষুধ সেবন করাই। বিশেষ করে ওষুধ কোম্পানিগুলো খামারিদের উৎসাহ প্রদান করে থাকে। স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধের মধ্যে রয়েছে ডেক্সামেথাসন, বেটামেথাসন ও পেরিঅ্যাকটিন ইত্যাদি। অনেক ওষুধ কোম্পানি খামারিদের বিনা ঋণে অথবা কিস্তিতে দেয়। পশু মোটাতাজা হলে তারা টাকা দিতে বলেন। খামারিরা তাদের কথা শুনে ওইসব ওষুধ পশুকে সেবন করিয়ে থাকে। ওষুধগুলো পশুকে খাওয়ানের পর অস্বাভাবিকভাবে মাংস ফুলে যায়। পশুর কোন স্থানে আঙ্গুল দেয়া মাত্রই সেটি গভীরভাবে ঢুকে যায়। পশু ঝিমুতে থাকে। অনেক খামারি মনে করেন ওইসব ওষুধ খেলে মাংস বেশি পাওয়া যায়। কিন্তু, জবাই করার পর মাংস অস্বাভাবিকভাবে ওজনে কম হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. সুদীপ রঞ্চন দেব জানান, ওইসব পশুর মাংস খেলে কিডনি ও লিভারের কার্যক্ষমতা নষ্ট হয়। শরীরে পানি বের হবে। যা মানব দেহের জন্য খুবই ক্ষতিকর।