মো: কামাল উদ্দিন, চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের পরিচালক ও শিল্পগ্রুপ প্যাসিফিক জিন্সের পরিচালক সৈয়দ মোহাম্মদ তানভীরের বিরুদ্ধে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে এক ফ্যাশন ডিজাইনারকে ধর্ষণের অভিযোগে ঢাকার উত্তরখান থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। গত রোববার (৩০ আগস্ট) রাতে ঘটনার শিকার নারী বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন বলে জানিয়েছেন উত্তরখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হেলাল উদ্দিন। সৈয়দ মোহাম্মদ তানভীর প্যাসিফিক জিন্স গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন এর বড় ছেলে।
সূত্রে জানা যায়, ঘটনার শিকার নারী চট্টগ্রামের একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়ালেখা শেষ করেছেন। ঢাকায় একটি আবাসন প্রতিষ্ঠানে উচ্চপদে চাকরিও করেছেন। এছাড়া ফ্যাশন ডিজাইনার হিসেবেও তার পরিচিতি আছে।
ওসি হেলাল এই বিষয়ে দৈনিক সাতনদীকে বলেন, ‘চট্টগ্রাম চেম্বারের পরিচালক সৈয়দ মোহাম্মদ তানভীর বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে একাধিবার ধর্ষণ করেছেন বলে একজন নারী অভিযোগ করেছেন। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯ (১) ধারায় মামলা করেছেন তিনি। আমরা মামলা গ্রহণ করে পরবর্তী আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্নের বিষয়টি চলমান রেখেছি।’
থানা সূত্রে জানা গেছে, স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদের পর একবছর আগে ঢাকায় বসবাসরত ওই নারীর সৈয়দ মোহাম্মদ তানভীরের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ২০১৯ সালের ১ নভেম্বর তারা পরস্পরের সঙ্গে দেখা করেন। এদিন ঢাকার উত্তরখান থানা এলাকার একটি রিসোর্টে নিয়ে ওই নারীকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন তানভীর। এরপর থেকে বিয়ের প্রতিশ্রুতিতে বারবার মিলিত হতে থাকেন, এ সময়ে আরও কয়েকবার শারীরিক সম্পর্ক তৈরি করেন তানভীর।
ধীরে ধীরে তানভীরের আচরণ পরিবর্তন হতে থাকায় গত ২৫ আগস্ট ওই নারী চট্টগ্রামে যান। সেখানে গিয়ে বুঝতে পারেন, তিনি প্রতারিত হয়েছে। এরপর ২৭ আগস্ট ওই নারী নগরীর কোতোয়ালি থানার পাথরঘাটা এলাকার মিরিন্ডা লেনে তানভীরের বাসায় যান। কিন্তু সেখানে তানভীরের পরিবারের সদস্যদের কাছে দুর্ব্যবহারের শিকার হন। শনিবার (২৯ আগস্ট) তিনি আবারও ওই বাসায় গিয়ে তুচ্ছতাচ্ছিল্যের শিকার হন। এসময় তিনি বাসার সামনে রাস্তায় নিজের শরীরে ব্লেড দিয়ে জখম করতে শুরু করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) সংশ্লিষ্ট জোনের একজন পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, গত ২৭ আগস্ট ওই নারী চট্টগ্রাম নগরের কোতোয়ালি থানার পাথরঘাটা এলাকার মিরিন্ডা লেনে তানভীরের বাসায় যান এবং তাদের সম্পর্কের কথা তানভীরের পরিবারের সদস্যদের বলেন। পরে ২৯ আগস্ট তিনি আবারও তানভীরের বাসার সামনে গিয়ে রাস্তায় নিজের শরীরে ব্লেড দিয়ে জখম করতে শুরু করেন। খবর পেয়ে পুলিশ ওই নারীকে উদ্ধার করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করে। ওই নারী মামলা করতে চাইলে, ঘটনা শুনে তাকে ঘটনাস্থল ঢাকার উত্তরখান থানায় অভিযোগ করার পরামর্শ দেয়া হয়। ঘটনার শিকার নারী এবং অভিযুক্ত সৈয়দ মোহাম্মদ তানভীরের মোবাইল বন্ধ থাকায় তাদের বক্তব্য জানা যায়নি।