হাবিবুর রহমান: তালায় দখলবাজ ভ‚মিদস্যুদের দাপটে অতংকিত হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষ। বিরোধপ‚র্ণ জমির মালিকরা আছে জমি খোয়ানোর হুমকিতে। একেরপর এক বিরোধপ‚র্ণ জমি দখল, পাল্টা দখল ও ক্রয়-বিক্রয়ে কোটিপতি বনে গেছে এক সময়ের চরমপন্থি ও পাতি নেতারা।
অনুসন্ধানে জানা যায়, তালার বারুইহাটি গ্রামের নুর আলী সরদারের ছেলে সরদার গোলজার দুই গ্রুপে শতাধীক সদস্য নিয়ে বিশাল দখলবাজ বাহীনি গড়ে তুলেছে। এর মধ্যে একটি গ্রুপ ইমার্জেন্সি কাজে ব্যবহার হয়। মোটরসাইকেল ও দেশীয় অস্ত্র সজ্জিত বিশেষায়িত গ্রুপটিকে সমীহ করে চলে প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা। অপর গ্রুপটি জমি দখলের সময়ে মাঠ পর্যায়ে কাজ করে। ক্ষমতাসীন দলের নাম ভাঙ্গিয়ে প্রতিদিন কোন না কোন জমি দখল করতে এ দুটি বাহিনীর মহড়া চলে তালা উপজেলা হাসপাতাল রোড়ের আব্দুর রাজ্জাকের ডেকোরেটর দোকানে।
তালা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে হিসাব সহকারি মনিরুজ্জামান, সমবায় অফিসের সহকারী অজয় ঘোষ, সমাজ সেবা অফিসের মাঠ সুপারভাইজার সুলতান গাজী প্রশাসনকে ম্যানেজ করার নামে লক্ষ লক্ষ টাকা চুক্তিতে অফিস টাইম সহ গভীর রাত পর্যন্ত জমি দখল নিয়ে বৈঠকে ব্যস্ত থাকেন। সিরাজুল ইসলাম ম্যানেজের দায়িত্বে নিয়োজিত থাকেন। এ ক্ষেত্রে প্রতিটা বিরোধপ‚র্ণ জমি দখল নিতে জমির মূল্য অনুযায়ী অর্ধেক টাকায় চুক্তি করা হয়। পাল্টা দখল নিতে এক তৃতীয়াংশ দিতে হয় এই সমন্বিত বাহিনীকে। আবার জমির বেচা-কেনায়ও গোলজার বাহিনীকে আনুপাতিক হারে টাকা গুনতে হয়, নইলে দখলে বাধা আসবে।
এই বাহিনীর দাপটে অতংকিত হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষ। বিষয়টি নিয়ে ভীতি সন্ত্রস্থ থাকায় গোলজার বাহিনীর ভয়ে কেউ মুখ খুলতে চায় না। গডফাদারের নির্দেশনায় ও গোলজারের নেতৃত্বে তালা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের হিসাব সহকারী মনিরুজ্জামান, সমবায় অফিসের সহকারী অজয় ঘোষ, সমাজ সেবা অফিসের মাঠ সুপার ভাইজার সুলতান গাজী, সরদার গোলজার অবৈধ টাকার পাহাড় গড়েছেন এই জমি দখলবাজী ব্যবসা করে। তালা মেলা বাজারের কোটি টাকা ম‚ল্যের বাড়ী ও জমি জবর দখল করে বিক্রি করে দিয়েছে। প্রতি নিয়তই তাদের দ্বারা তালায় ভুমিহীনের সংখ্যা বাড়ছে। তাই জেলা প্রশাসন ঘোষিত ‘ভুমিহীন মুক্ত উপজেলা তালা’ মুখ থুবড়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
তালা মোবারকপুর গ্রামের মৃত আকিমুদ্দিন শেখের পুত্র আলাউদ্দিন শেখ জানান, বাবা-চাচাদের জীবদ্দশায় মিমাংশিত এজমালি সম্পত্তি ৭০ বছর যাবৎ শান্তিপূর্ণ ভোগ দখলে থাকার পরও আজ গোলজার বাহিনী আমাদের তাড়িয়ে দখল করে নিচ্ছে।
তালার সদর ইউনিয়নের ৮ নং সদর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য শেখ জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, আমার পৈত্রিক জমিতে তাদের অধিকার বেশী হয়েছে। সন্ত্রাসীদের ভয়ে এলাকার মানুষ বাপ-দাদার সম্পতিতে যেতে পারছে না।
তালা প্রেসক্লাবের সিনিয়র সাংবাদিক এম এ ফয়সাল জানান, তালা প্রেসক্লাব সংলগ্ন সাবেক ২১৭ দাগের আমার ক্রয়কৃত জমি ও বাড়ীতে আমি শান্তি পূর্ণ বসবাস করে আসছি প্রায় ৯ মাস যাবৎ, সম্প্রতি এক বায়না পত্র দেখিয়ে আমাকে উচ্ছেদের পায়তারা করছে গোলজার।
তালা থানা অফিসার ইনচার্জ আবু জিহাদ ফকরুল আলম জানান, কেউ আইন শৃংখলার বিঘ্ন ঘটালেই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবো।
তালায় একছত্র আধিপত্য ভূমিদস্যুদের
পূর্ববর্তী পোস্ট