মণিরামপুর প্রতিনিধি: দীর্ঘ সতের বছর পর মণিরামপুর বিএনপিতে মোঃ মুছা-এ্যাড শহীদ মোঃ ইকবল হোসেন মিলিত হচ্ছেন! দলের মধ্যে নিজেদের অস্তিত্ত¡, কর্তৃত্ব বজায় রাখতে ক্ষোভ অনুরাগ ভুলে মুছা-ইকবল এক হচ্ছেন বলে দলের অভ্যান্তরে গুঞ্জন চলছে। এর এ কাজটি করতে দু’নেতার পক্ষে দলীয় নেতাদের আস্থাভাজন ৪/৫জনের একদল প্রতিনিধি কাজ করছেন বলে জানা গেছে। পৌর বিএনপির এক শীর্ষ নেতাসহ এ প্রতিনিধি দল মুছা-ইকবলের সাথে আলোচনার পর জেলা বিএনপির এক শীর্ষ নেতার সাথে একাধিক বার বৈঠক করেছেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে জানা গেছে। তবে দু’নেতার কয়েকটি শর্তের উপর এ আলোচনা এবং মিলিত হতে যাচ্ছেন বলে সূত্র থেকে দাবী করা হয়েছে।
শর্তগুলোর মধ্যে উল্লেখ যোগ্য রয়েছে এ্যাড. শহীদ মোঃ ইকবল হোসেন তার স্বপদে বহল থেকে পৌর নির্বাচনে মেয়র পদে দলের একক প্রার্থী করা, ভাই নিস্তার ফারুকের মণিরামপুর সদর ইউপিতে চেয়ারম্যান নির্বাচনে ঐক্যমতে সহযোগিতা করা। এ ছাড়া প্রবীন নেতা মোঃ মুছার আগামী দিনে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলের একক চেয়ারম্যান প্রার্থী করা, নিজ ইউনিয়ন চালুয়াহাটিতে পরিবারের কাউকে চেয়ারম্যান নির্বাচিত করা ছাড়াও, মুছা প্যানেল থেকে জিএম মিজানুর রহমানকে থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক করা, ঢাকুরিয়া ইউপি নির্বাচনে বিএনপি দলীয় একক চেয়ারম্যান প্রার্থী করা এবং শামসুজ্জামান শান্তকে খেদাপাড়া ইউপিতে দলীয় চেয়ারম্যান প্রার্থী করা ছাড়াও আসছে থানা এবং পৌর বিএনপির নতুন কমিটি ঐক্যমতের ভিত্তিতে করার শর্তারোপ রয়েছে। এ দু’নেতার অস্বিত্ব এবং কর্তৃত্ব ধরে রাখতে দীর্ঘদিন পর হলেও শুভ বুদ্ধির উদয় হয়েছে বলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে দলের একাধিক ব্যক্তি মন্তব্য করেছেন। সম্প্রতি ইফতেখার সেলিম অগ্নিকে কেন্দ্রীয় জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-সাংগঠনিক পদে নির্বাচিত করায় মণিরামপুরে মুছা-ইকবলের একাধিক কর্মী তার সাথে ধীরে ধীরে জোট বাঁধতে থাকে। এ অবস্থা থেকে দু’নেতার টনক নড়ে। এ দু’নেতার বাইরে মণিরামপুর বিএনপির রাজনীতির নেতৃত্বে আর কাউকে আসতে না দেওয়ার কারণ হিসেবে মুছা এবং ইকবল শর্ত সাপেক্ষেই মিলিত হচ্ছেন বলে দলের একাধিক সূত্র থেকে জানা গেছে। এসব বিষয় জানতে সম্ভাব্য দলের সেক্রেটারী প্রার্থী জিএম মিজানুর রহমান, প্রবীন নেতা ডা. আলতাফ হোসেন ছাড়াও একাধিক ব্যক্তির সাথে যোগাযোগ করা হলে দলের অভ্যন্তরীন কোন বিষয় বলতে চাননি তারা। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে দলের মাঝসারীর কয়েকজন বলেন, দু’নেতার দ্ব›দ্ব মিটিয়ে দলকে শক্তিশালী করনের জন্য চেষ্টা চলছে। জানা যায়, ৯০ এর দশকের জাতীয় পার্টি ছেড়ে মুছার হাত ধরে বিএনপির রাজনীতিতে আসেন এ্যাড. শহীদ মোঃ ইকবল হোসেন। এরপর মুছা এবং ইকবলের মধ্যে দ্ব›দ্ব চরম পর্যায় পৌছায়। এক পর্যায়ে ২০০৩ সালে নেতা নির্বাচনে ব্যালট ভোটের মাধ্যমে মুছাকে সভাপতি চেয়ার থেকে হটিয়ে দিয়ে এ্যাড. শহীদ ইকবল হোসেন বিএনপির একক কর্তৃত্ব হাতে নেন। অল্প দিনে জনপ্রিয়তা শীর্ষে চলে আসেন। এ্যাড. শহীদ মোঃ ইকবাল হোসেন। দলের পদ হারানো এবং নেতৃত্ব চলে যাওয়ায় ক্ষোভ অভিমানে প্রবীন নেতা আলহাজ্ব মোঃ মুছা বিএনপির বিভিন্ন দলীয় বিভিন্ন কর্মসূচী পালন থেকে নিজেকে গুটিয়ে নেয়। গত বছর দুই ঢাকুরিয়া ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান জিএম মিজানুর রহমান, সাবেক ছাত্রনেতা এবং বর্তমান কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ইফতেখার সেলিম অগ্নি, ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর হোসেন, শামসুজ্জামান শান্তসহ একাধিক নেতার সমন্বিত নেতৃত্বে মুছা প্যানেলকে জমজমাট করে তোলে। এ থেকে টনক নড়তে থাকে সভাপতি এ্যাড. শহীদ মোঃ ইকবাল হোসেনের।
এদিকে, ইফতেখার সেলিম অগ্নি দলের কেন্দ্রীয় পদ পাওয়ায় মণিরামপুর উপজেলা বিএনপির একাধিক কর্মী তার সাথে মিলিত হচ্ছেন। সম্প্রতি ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর হোসেন, ফিরোজ আহম্মেদসহ শতাধিক ছাত্র ও যুবনেতা রাজনীতি করতে ইফতেখার সেলিম অগ্নির নেতৃত্বকে স্বাগত জানাতে তার বাড়ীতে বৈঠক করেন। এতে মুছা-ইকবলের রাজনীতিতে টনক নড়ে। এ দু’নেতার বাইরে তৃতীয় কাউকে নেতৃত্বে কাউকে আসতে না দিতেই অতীতের ক্ষোভ অভিমান ভুলে এক প্লট ফর্মে নিতে দলের কয়েকজন মাঝসারীর নেতা চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন বলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে দলের একাধিক সূত্র দাবী করেছেন। এছাড়াও এ দু’নেতা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সাংগঠনিক কর্মকান্ডে মাঠে নামলে বিএনপিকে আর কাউকে সাথে নিতে হবে না।