অনলাইন ডেস্ক : পদ্মা সেতুর ২৩তম স্প্যান বসানোর মধ্য দিয়ে দৃশ্যমান হলো সেতুর ৩৪৫০ মিটার। রোববার ২৩তম স্প্যানটি বসানো হলো। ‘৬-এ’নম্বর স্প্যানটি ৩১ ও ৩২ নম্বর পিলারের উপর বসানো হয়েছে। সকাল সাড়ে ৯টায় মুন্সীগঞ্জের মাওয়া কুমারভোগ কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে ধূসর রঙের ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ৩১৪০ টনের স্প্যানটিকে বহন করে ৩৬০০ টন ধারণক্ষমতার ‘তিয়ান-ই’ ভাসমান ক্রেন।
সকাল ১০টা ১৫ মিনিটের মধ্যেই নির্ধারিত পিলারের সামনে গিয়ে পৌঁছায় স্পেনটি। ভাসমান ক্রেনটি নোঙর করে পজিশন নিয়ে ইঞ্চি ইঞ্চি মেপে স্প্যানটিকে তোলা হয় পিলারের উচ্চতায়। রাখা হয় দুই পিলারের বেয়ারিং এর ওপর। স্প্যান বসানোর জন্য উপযোগী সময় থাকায় এবং সব ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা সফলভাবে সম্পন্ন হওয়ায় প্রকৌশলীরা স্প্যানটিকে সফলভাবে বসাতে সক্ষম হন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত ৩১ জানুয়ারি স্প্যানটি পিলারের ওপর বসানোর কথা থাকলেও আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় তা সম্ভব হয়নি। এদিকে আরও একটি পিলার বা খুঁটি সম্পন্ন হয়েছে। এ নিয়ে ৩৭টি পিলার সম্পন্ন হলো। বাকি ৫টি পিলার এপ্রিলের মধ্যেই সম্পন্ন করা হবে। ৪২টি পিলারের ওপর ৪১টি স্প্যান বসানো হবে। যার ২২টি ইতোমধ্যে বসে গেছে। আগামী জুলাইয়ের মধ্যে সবক’টি স্প্যান পিলারের উপর বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে কর্তৃপক্ষের।
২০১৪ সালের ডিসেম্বরে পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ শুরু করা হয়েছে। মূল সেতু নির্মাণের জন্য কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (এমবিইসি) ও নদী শাসনের কাজ করছে দেশটির আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো করপোরেশন। ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এ বহুমুখী সেতুর মূল আকৃতি হবে দোতলা। কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে নির্মিত হচ্ছে এ সেতুর কাঠামো। নির্মাণকাজ সম্পন্ন হওয়ার পর আগামী ২০২১ সালেই সেতুটি খুলে দেয়ার কথা রয়েছে।
পদ্মা সেতুর প্রকৌশলী সূত্রে জানা যায়, পদ্মাসেতুর মোট ৪২টি পিলারের মধ্যে বর্তমানে কাজ সম্পন্ন হয়েছে ৩৫টির। সেতুতে ২ হাজার ৯৫৯টি রেলওয়ে স্ল্যাবের মধ্যে ৪১০টি রেল স্ল্যাব বসানো হয়েছে। ২ হাজার ৯১৭টি রোডওয়ে স্ল্যাবের মধ্যে ১২৫টি স্ল্যাব বসানো শেষ হয়েছে। পদ্মাসেতুর মোট ৪১টি স্প্যানের মধ্যে চীন থেকে মাওয়ায় এসেছে ৩৩টি স্প্যান। এর মধ্যে ২৩টি স্প্যান বসে গেছে। ৬ দশমিক ১৫ দৈর্ঘ্যের দ্বিতল সেতুটি কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে। চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং গ্রুপ কোম্পানি লিমিটেড মূল সেতু নির্মাণের কাজ করছে।