জাতীয় ডেস্ক:
দেশের সবচেয়ে বড় চোরাই মোটরসাইকেলের চালান জব্দ করেছে পুলিশ। টানা তিনদিন চট্টগ্রামের সন্দ্বীপে অভিযান চালিয়ে ৫ জনকে আটকের পাশাপাশি ২৪টি বাইক উদ্ধার করা হয়েছে।
বিশেষ চাবি দিয়ে মাত্র ৫ সেকেন্ডে যে কোনো মোটরসাইকেল চুরি করতে পারে চক্রটি। আর চার হাত ঘুরে চোরাই মোটরসাইকেলের বিচরণ ক্ষেত্র হয়ে উঠেছে দ্বীপ উপজেলা সন্দ্বীপ।
সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে থেকে মাত্র ৫ সেকেন্ডে সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক শামসুল ইসলামের মোটরসাইকেল চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে চোর চক্র। শুধু এই বাইক নয়, গত এক মাসে নগরীর বিভিন্ন থানা এলাকা থেকে ৫০টির মতো চুরির ঘটনা ঘটিয়েছে তারা।
এদিকে কোতোয়ালি থানা পুলিশের টানা অভিযানে মোটরসাইকেল উদ্ধারের খবর পেয়ে থানায় ছুটে আসছেন ভুক্তভোগীরা।
চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক শামসুল আলম বলেন, অনেকক্ষণ ধরে রেকি করেছে। এরপর মাত্র ১০ সেকেন্ডের মধ্যেই তারা দুজন মোটরসাইকেল নিয়ে গেছে।
বিএসআরএম এর সহকারী ম্যানেজার প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম বলেন, পাঁচ মিনিটের বেশি ওদের লাগেনি। আমি শপিংমলে ঢোকার একটু পর বের হয়ে দেখি তারা আর নেই।
চোরাই মোটরসাইকেল উদ্ধারে বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) থেকে শুরু হয় পুলিশের সাঁড়াশি অভিযান। নগরীর স্টেশন রোড এলাকা থেকে একটি চোরাই মোটরসাইকেলসহ দল নেতা মিঠুনকে আটকের পর তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী অভিযান চলে সন্দ্বীপে। সেখানেই পাওয়া যায় আরও ২৩টি চোরাই বাইক। মাত্র ৫ সেকেন্ডে যে কোনো মোটরসাইকেল চুরি করতে পারে এই দলের সদস্যরা।
সিএমপির কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল কবির জানান, প্রথমে একটি মোটরসাইকেল টার্গেটের পর মাত্র ৫ সেকেন্ডের মধ্যে তারা সেটি তাদের হেফাজতে নেয়। নিয়েই তারা মোটরসাইকেলটি শহরে সুবিধাজনক স্থানে রাখে। পরে সেটি সন্দ্বীপে নিয়ে নির্দিষ্ট বায়ারদের কাছে বিক্রি করে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে চোর দলের সদস্যরা স্বীকার করে, নগরী থেকে চুরি যাওয়া প্রতিটি মোটরসাইকেল অন্তত চারবার হাত বদল হয়ে সন্দ্বীপের পাশাপাশি নোয়াখালী এবং কুমিল্লার প্রত্যন্ত অঞ্চলে চলে যাচ্ছে।
সিএমপির উপকমিশনার (দক্ষিণ) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, তারা দীর্ঘদিন থেকে বিভিন্ন কলাকৌশল অবলম্বন করে এবং কোথাও কোথাও মানুষকে আঘাত করে মোটরসাইকেল ছিনতাই করে। এ চক্রটি বিভিন্ন জেলার সঙ্গে সম্পৃক্ত রয়েছে। প্রাথমিক তথ্যে জানতে পেরেছি তারা এক জেলা থেকে আরেক জেলায় তারা মোটরসাইকেল ছিনতাই করে এবং আন্তঃজেলা চক্র গড়ে তুলেছে।
আটক ৫ জনের সবাই আগে একাধিকবার মোটরসাইকেল চুরির অভিযোগে গ্রেফতার হয়। নগরীর বিভিন্ন থানায় দায়ের হওয়া তিনটি মামলায় তাদেরকে গ্রেফতার দেখিয়েছে পুলিশ।