আহাদুর রহমান: প্রতিবন্ধীর দোকানের নগদ টাকা লুটের দুই মাস পার হলেও প্রভাবশালীদের চাপে এখনও পর্যন্ত নেওয়া হয়নি কোন ব্যবস্থা। উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও তালা থানায় দুটি পৃথক অভিযোগ দেওয়া হলেও কাজ হয়নি এখনও।
লুট হওয়া টাকা ফেরত না পেলে বড্ড বে-কায়দায় পড়ে যাব
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, প্রতিবন্ধী আল মামুন খাঁ (৩৪) তালা উপজেলার সুজনসাহা বাজারের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। তিনি দোকানে চাল, জুতা, ভ‚ষি মালের ব্যবসা করেন। এছাড়াও পল্লী বিদ্যুতের বিল পরিশোধ করে দিয়ে যা পান তাতে সংসার কোন ভাবে চলে যায়। গত জুলাই মাসের ২৯ তারিখ সন্ধ্যা ৭টার সময় পাটকেলঘাটা বাজার থেকে বিক্রির জন্য কেনা মালামাল দোকানে নিয়ে আসেন মামুন। এ সময় মামুন প্রতিবন্ধী বিধায় ডেলিভারি ম্যানকে সব মালামাল দোকানে তুলে দিতে বলেন। এসময় সেখানে সুজনসাহা গ্রামের বাবু দাশের ছেলে নেপাল দাশ চাল কিনতে আসে। নেপালের সামনে মামুন ক্যাশবাক্সের মধ্যে নগদ ২৭ হাজার টাকা রেখে ডেলিভারি ম্যানের সাথে মালামাল তুলতে সাহায্য করেন। হঠাৎ বৃষ্টি আসলে মামুন বাইসাইকেল তুলতে দোকানের বাইরে আসেন। এ সময় নেপাল ছাড়া দোকানে কেউ ছিলনা। নেপালকে দোকানে না দেখে ক্যাশ বাক্স চেক করে দেখেন ক্যাশে টাকা নেই। তখনই তিনি নেপালকে ফোন দেন। কিন্তু নেপাল ফোন ধরেন না। প্রায় আধাঘন্টা পর ৭.৩০ এ নেপাল আবার দোকানে আসলে মামুন জিজ্ঞাসা করে ‘আমার ক্যাশে টাকা আছে তুমি ছাড়া আর কেউ জানে না। তোমার সামনে রেখে আমি সাইকেল তুলতে গেলাম আর তুমিও চলে গেলে, আমার ক্যাশের টাকাও নেই।’ নেপাল উত্তরে জানায় ‘আমি এসব কিছু জানি না।’ পরে মামুন বাজারের লোকজনদের জানালেও তারা কোন সুরাহা করতে পারেনি।
অভিযোগকারী মামুন জানান, তিনি ইসলামকাটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সুভাষ চন্দ্র সেনের কাছে বিচার দেন। বিচারে কোন সুরাহা না হওয়ায় চেয়ারম্যান উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে অভিযোগ দিতে বলেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার সংশ্লিষ্ট থানায় অভিযোগ করতে বলেন। সে মোতাবেক মামুন তালা থানায় আরও একটি অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে এ এস আই মদনের তত্বাবধানের তালা থানায় একটি সালিশি বৈঠক বসে। বৈঠকে নেপাল মামুনের টাকা দেওয়া জন্য দুই দিনের সময় চেয়ে নেয়। কিন্তু আজ অবধি সে টাকা পায়নি প্রতিবন্ধী মামুন।
এদিকে মামুনের কাছে এ বিষয় নিয়ে বেশি বাড়াবাড়ি না করার জন্য বিভিন্ন মহল থেকে চাপ আসছে। তিনি এর সুষ্ঠু বিচার দাবী করেন। আর লুটের টাকাও ফেরত চেয়ে তিনি বলেন, ‘আমি নিজে প্রতিবন্ধী। আমার দুটি বাচ্চা আছে। আমার মেয়েও প্রতিবন্ধী। তাদের পিছনে আমার অনেক খরচ। কেউ সহায়তা করেনা। নিজে যতদূর পারি অল্প স্বল্প ব্যবসায় করে দিনাতিপাত করি। এ অবস্থায় লুট হওয়া টাকা ফেরত না পেলে আমি বড্ড বে-কায়দায় পড়ে যাব।’