হাবিবুর রহমান :
জমে উঠেছে আশাশুনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন। শনিবার (৩০ নভেম্বর) সম্মেলন। দ্বিধাবিভক্ত উপজেলা আওয়ামী লীগের দু’টি গ্রুপ সর্বশক্তি নিয়ে মাটে নেমেছে। একটি গ্রুপের নেতৃত্বে আছেন বর্তমান সভাপতি এবিএম মোস্তাকিম। তিনি নিজে সভাপতি প্রার্থী। নিরাপদ দূরত্বে থেকে তিনি দু’জন সাধারণ সম্পাদক প্রার্থীকে কাছে রেখেছেন। সম্মেলনে কাউন্সিলদের ভোট দেওয়ার সুযোগ হলে এবিএম মোস্তাকিমের অনুসারিরা সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী আবু হেনা শাকিলকে বেছে নেবেন। আর সমঝোতা হলে মোস্তাকিমের প্যানেলে সাধারণ সম্পাদক হবেন শুম্ভজিৎ মন্ডল এমনটি শোনা যাচ্ছে উপজেলাজুড়ে।
অপরদিকে সাবেক সংসদ সদস্য ডা. এসএম মোকলেছুর রহমান সভাপতি প্রার্থী। তার প্যানেলে সম্ভাব্য সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠণিক সম্পাদক খাজরা ইউপি চেয়ারম্যান শাহনেওয়াজ ডালিম।
উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সভাপতি এবিএম মোস্তাকিম নিজে সভাপতি প্রার্থী। তার অনুসারি উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবু হেনা শাকিল সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী।
নতুন এসে সাড়া জাগানো অপর সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী শম্ভুজিত ম-ল প্রফেসর ডা. আ.ফ.ম রুহুল হকের অনুসারি।
অপরদিকে, সাবেক সংসদ সদস্য সৎ রাজনীতিক ডা. এসএম মোকলেসুর রহমান সভাপতি পদে লড়ছেন। তার অনুসারি সাধারণ সম্পাদক পদে আছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য সাবেক ছাত্রলীগ সভাপতি হুমায়ুন কবির সুমন এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠণিক সম্পাদক খাজরা ইউপি চেয়ারম্যান সাবেক ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নেতা এসএম শাহনেওয়াজ ডালিম।
ডা. এসএম মোকলেছুর রহমান ও তার অনুসারী দু’সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী ডালিম ও সুমন কাউন্সিলরদের সরাসরি ভোটের মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্বপাচনের পক্ষে। ডা. মোকলেছুর রহামন, শাহনেওয়াজ ডালিম ও হুমায়ুন কবির সুমন সম্মেলনে ভোট দাবী করে শেখ হেলাল এমপিসহ কেন্দ্রীয় নেতাদের সরনাপন্ন হয়েছেন। তাদের দাবী ভোট হলে তাদের জয় নিশ্চিত। শেখ হেলাল এমপিও তাদের আশ্বস্ত করেছে সম্মেলনে ভোট হওয়ার বিষয়ে।
তএই আসনের সংসদ সদস্য প্রফের ডা. আ.ফ.ম রুহল হকের নিকটও পক্ষটির জোর দাবী সম্মেলনে ভোট দেওয়ার জন্য। ভোটের দাবিদার পক্ষটি সম্মেলন স্থল দখলে রাখবেন এমন প্রস্তুতিও আছে। তবে সার্কিট হাউজের বৈঠক মাঠের উত্তপ্ত পরিস্থিতিকে শান্ত করে সমঝোতার মাধ্যমে কমিটি করবেন এ বিষয়টি অনেকাংশে নিশ্চিত।
কে হচ্ছেন সভাপতি-সম্পাদক :
আশাশুনি উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটি হচ্ছে সমঝোতায় এটা মোটামুটি নিশ্চিত। তবে সে ক্ষেত্রে সভাপতি পদে বর্তমান উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবিএম মোস্তাকিম রয়েছেন আলোচনায়। তিনি আবারো সভাপতি হচ্ছেন এটা মোটামুটি নিশ্চিত। অন্যদিকে, সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম পিন্টু উপজেলা নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর বিরোধিতা করায় তিনি সাধারণ সম্পাদক পদে থাকছেন না এটাও নিশ্চিত। তিনি পদে থাকছেন না জেনেই তার ভাতিজা হুমায়ুন কবির সুমনকে সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী করেছেন। তবে তরুণ এ নেতা কতটা লক্ষ্যে পৌঁছাবে সেটা নিয়ে সন্দিহান নীতি নির্ধারকরা। ভোট দিলে ব্যাপক ব্যবধানে সভাপতি নির্বাচিত হতেন এস.এম মোকলেছুর রহমান এমন দাবি তৃণমূল নেতাকর্মীদের। তবে ভোট হওয়ার কোন সম্ভবনা নেই।
অপরদিকে, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠণিক সম্পাদক প্রভাষক মাহবুবুল হক ডাবলু সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী হয়েছেন। শুক্রবার রাতে সাতক্ষীরা সার্কিট হাউজ থেকে তিনি নিজেকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদের প্রার্থীতা ঘোষনা করেন। কেন্দ্রীয় নেতাদের দৃষ্টি এখন তার দিকে। এছাড়া তরুণ নেতা চেয়ারম্যান শাহনেওয়াজ ডালিমও পিছিয়ে নেই লবিংয়ে। জোর প্রচারণা ও তদবির চালিয়ে যাচ্ছেন তিনিও।
কাউন্সিলররা চাইলেও সাবেক এমপি মোকলেছুরের ভাগ্য বলি:
তৃণমূলের নেতাকর্মীরা ঝুঁকে ছিল সাবেক সংসদ ডা. এসএম মোকলেছুর রহমানের দিকে। আশাশুনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তিনি। উপজেলা সম্মেলনে ভোট হলে তিনি শত ভোট বেশী পেয়ে জয়লাভ করতেন এমন অভিমত কাউন্সিলরদের। উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনকে ঘিরে পুরো মাঠ তার দখলে। তবে কমিটি সমঝোতায় হওয়ায় সভাপতি হতে পারছেন না তিনি। নেতাকর্মীরা সঙ্গে থেকেও পদে যেতে পারবেন না। কমিটি যে সমঝোতায় হচ্ছে সেটি মোটামুটি নিশ্চিত হওয়া গেছে। আর এই সঙ্গেই ভাগ্যবলি হলো এই সাবেক এমপির। সমঝোতায় হলে সভাপতি পদে আবারো থেকে যাবেন এবিএম মোস্তাকিম।