নিজস্ব প্রতিবেদক: সাতক্ষীরা আমলী আদালত-১ এর সাবেক বিচারক ও বর্তমানে রংপুরের জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট হারুন অর রশিদ কর্তৃক গৃহপরিচারিকাকে ধর্ষনের ঘটনায় বিচার চাওয়ায় ধর্ষিতার পিতা, মাতা, ভাই ও বোনের নামে একাধিক মামলা দিয়ে জেল খাটানো হয়েছে অভিযোগ উঠেছে। এর প্রতিবাদে শনিবার সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন, খুলনা জেলার ডুমুরিয়া থানার মাগুরা গ্রামের যৌন নির্যাতনের শিকার ওই নারী।
তিনি তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, বিচারক হারুন অর রশিদের গ্রামের বাড়ি আমাদের একই এলাকার মাগুরা ঘোনা গ্রামে। তিনি সম্পর্কে আমার প্রতিবেশী চাচা। আমার পিতা একজন অসহায় দরিদ্র কৃষক। আমরা ৩ বোন ও এক ভাই। আমরা দরিদ্র হওয়ার সুবাদে বিচারক হারুনের মাতা আমাকে তাদের বাড়িতে গৃহপরিচারিকার কাজ করার জন্য আমার পরিবারের কাছে প্রস্তাব দেন। সেই মোতাবেক গত ৩ বছর পূর্বে থেকে তাদের বাড়িতে কাজ শুরু করি। বর্তমানে তার তিনটি স্ত্রী রয়েছে। এর মধ্যে দ্বিতীয় স্ত্রীর সাথে ঢাকা হাইকোর্টে মামলা চলমার রয়েছে। মামলার কারনে বিচারক হারুন প্রায়ই গ্রামের বাড়িতে থাকতো। আর বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে লম্পট হারুন সুযোগ বুঝে আমাকে ধর্ষন করে। আমি লোক লজ্জার ভয়ে কাউকে কিছু জানায়নি। এরপর থেকে তিনি প্রায়ই আমাকে অনৈতিক কাজে বাধ্য করার চেষ্টা করতো। এতে আমি অতিষ্ঠ হয়ে তাদের বাড়িতে কাজ করবোনা বলে জানালে তিনি আমার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে মেরে ফেলার ও আমার পরিবারকে মিথ্যা মামলায় জেল খাটানোর হুমকি প্রদান করেন। এই হুমকির কয়েকদিন পরই তার আতœীয় তালা উপজেলার আলাদিপুর গ্রামের মৃত ধোনাই মোড়লের ছেলে সাজ্জাত হোসেনকে দিয়ে তিনি সাতক্ষীরায় থাকা কালিন তারই আদালতে আমার দরিদ্র পিতা, ভাই ও বোনের নামে মিথ্যা চাঁদাবাজির মামলা দায়ের করান। এই মামলায় কোন তদন্ত ছাড়াই তিনি ওয়ারেন্ট বের করেন। একপর্যায়ে ডুমুরিয়া থানা পুলিশ আমার পিতা ও ভাইকে আটক করে জেল হাজতে প্রেরন করেন।
তিনি আরো বলেন, আমার বড় বোন খুলনায় থাকেন। অথচ তাকেও এই মামলায় জড়ানো হয়েছে। এছাড়া গ্রামের কিছু উচ্ছৃঙ্খল যুবক দিয়ে আমাদের বাড়ি ঘরও ভাংচুর করা হয়েছে। বর্তমানে আমি ও আমার মা পেপার ছাউনি দিয়ে সেখানে থাকি। এপরও প্রতিরাতে ওই যুবকরা আমাদের বাড়ির সামনে অবস্থান করায় আমরা প্রায় ১ মাস যাবত নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছি। এ ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা নেয়নি। এদিকে পিতা ও ভাইকে এখনও জামিন করাতে পারছিনা। মামলার নথিপত্র তিনি আটকে রেখেছেন এবং বিচারককে জামিন না দেয়ার জন্য তিনি প্রভাব খাটাচ্ছেন। তিনি আমার মা ও বোনকে জেলে পাঠাবেন বলে হুমকি দিচ্ছেন। এমতাবস্থায় আমরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। এ সব ঘটনায় আমরা গত ২০১৮ সালের মে মাসে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করি। এ ঘটনায় ওই বিচারক আমার উপর রাগান্বিত হয়ে আমার চাচা করিম শেখকে বাদী করে খুলনার একটি আদালতে মিথ্যা মামলা দায়ের করে। এই মামলায় পুলিশ আমাকে ও আমার পিতাকে আটক করে জেল হাজতে প্রেরন করে। এরপর একে একে তিনি বিভিন্ন লোক দিয়ে মোট ৫টি মামলা দায়ের করেন আমাদের নামে। এছাড়া আমাদের পক্ষের আইনজীবিকেও মামলায় না লড়ার জন্য তিনি বিভিন্নভাবে হুমকি ধামকি প্রদর্শন করে যাচ্ছেন। তার ভয়ে আইনজীবিও আমাদের পক্ষে মামলা পরিচালনা করতে অস্বীকৃতি জানাচ্ছেন। এমতাবস্থায় তিনি (ধর্ষিতা নারী) বিচারক নামধারী লম্পট হারুন অর রশিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং তার নির্দোষ পরিবারের সদস্যদের মিথ্যা মামলা থেকে অব্যহতি প্রদানের জন্য খুলনা পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এ ব্যাপারে বিচারক হারুন অর রশিদ জানান, আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা সম্পুর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন।