নিজস্ব প্রতিবেদক: আশাশুনির বুধহাটায় ক্রয়কৃত জমির পাশে জমি ক্রয় করে অন্যের জমিকে নিজের জমি দাবী করে আদালতে মামলা দায়ের করে হয়রানী করা, জমি জবরদখল চেষ্টা, প্রশাসনিক নির্দেশ আমন্য করা ও পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ করিয়ে মানসম্মান ক্ষুন্ন করার অভিযোগ উঠেছে। আশাশুনির বুধহাটা গ্রামের এরশাদ আলী সরদারের পুত্র সাইফুল্লাহ সুমন এবং তার চাচাতো ভাই একই গ্রামের মাজেদ আলী সরদারের পুত্র এজদান আলী তাদের অভিযোগে বলেন, তারা দু’ভাই বুধহাটা গ্রামের মৃত তোফাজ্জেল হোসেনর পুত্র মোতাহার হোসেনের কাছ থেকে বুধহাটা মৌজায় বুধহাটা বাজারের প্রধান সড়কের পাশে সাবেক ১৫৮৮ দাগের হাল ২৭০৪, ২৭০৫ ও ২৭০৬ দাগের মধ্য হতে উভয়েই হাফ শতক করে মোট ১ শতক জমি ক্রয় করে, যাহা মাঠ জরিপে বুজরত ১০৭৪ নং ডিপি ৬৭৪ নং খতিয়ানভূক্ত। বিগত ০৪/১১/২০০৮ ইং তারিখে আশাশুনি সাব-রেজিস্ট্রার এর কার্যালয় হতে উক্ত জমির রেজিস্ট্রি দলিল সম্পাদিত হয়।
পরবর্তীতে গত ০১/০৮/২০১০ ইং তারিখে এজদান আলী তারখরিদসূত্রে ভোগদখলীয় উক্ত হাফ শতক জমি আশাশুনি সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের মাধ্যমে তার চাচাতো ভাই সাইফুল্লাহ সুমনের নামে ৩৩৮২নং দলিলে হেবাবিল এওয়াজনামা মূলে প্রদান করেন। ফলে সাইফুল্লাহ সুমন ৬৭৪ নং খতিয়ানে মোট ১ শতক জমির মালিক ও ভোগদখলকারী হন।
এছাড়া ৩৬০৪ নং দলিলমূলে উক্ত দাগে পর্যায়ক্রমে মোতাহার হোসেনের কাছ থেকে রফিকুল ইসলাম, রফিকুল ইসলামের কাছ থেকে সাইফুল্লাহ সুমনের স্ত্রী জাহিদা এবং জাহিদার কাছ থেকে সাইফুল্লাহ সুমন আরও ১ শতক জমি ক্রয় করেন। ফলে উক্ত দাগে সাইফুল্লাহ সুমন সর্বমোট ২ শতক জমির স্বত্ববান হয়ে ভোগদখল করে আসছেন।
ইতোমধ্যে বুধহাটা ইউনিয়নের নওয়াপাড়া গ্রামের মৃত ঈমান অলী গাজীর পুত্র মিজানুর রহমান গাজী গত কয়েকমাস পূর্বে উপরে বর্নিত মোতাহার হোসেনের কাছ থেকে উক্ত দাগে সাইফুল্লাহ সুমনের ক্রয়কৃত ও ভোগদখলীয় জমির পিছনে কিছু জমি ক্রয় করেন এবং সেখানে বিল্ডিং এর উপরে মেসার্স গাজী ওয়াটার টেকনোলজির মার্কেট নামক সাইনবোর্ড টানিয়ে দেয়। পেছনের অংশের জমি ক্রয় করায় প্রধান সড়কে উঠতে তার সরাসরি কোন পথ না থাকায় মিজানুর গাজী বিভিন্ন সময়ে সাইফুল্লাহ সুমনের কাছে তার জমির উপর দিয়ে পথের দাবী করে। মানবিক কারনে সাইফুল্লাহ সুমন তার নিজ জমির উপর দিয়ে মিজানুর গাজীকে চলাচলের পথ দিতে সম্মত হয়। কিন্তু তাতে বিলম্ব হওয়ায় মিজানুর গাজী ও তার পক্ষীয় লোকজন বিভিন্ন সময়ে সাইফুল্লাহ সুমনকে জোরজবরদোস্তি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করতে থাকে। এক পর্যায়ে মিজানুর গাজী হয়রানীর উদ্দেশ্যে সাইফুল্লাহ সুমনের নামে আদালতে ১০৮ নং পিটিশন মামলা দায়ের করে। যার প্রেক্ষিতে সাইফুল্লাহ সুমনও মিজানুর গাজীর নামে ১১২৮/২০ নং একটি মামলা দায়ের করে। পরবর্তীতে আশাশুনি ভূমি অফিস ও আশাশুনি থানার পক্ষ থেকে উক্ত জায়গাজমি পরিদর্শন করা হয়। বিষয়টি মিমাংসার উদ্দেশ্যে আশাশুনি থানা পুলিশের মধ্যস্থতায় থানায় উভয়পক্ষকে নিয়ে বসাবসিও হয়। সেখানে থানার পক্ষ থেকে শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখার নিমিত্তে উভয়পক্ষকে শান্ত থাকার নির্দেশনা দেয়া হয়। কিন্তু মিজানুর গাজী থানার নির্দেশনা অমান্য করে সাইফুল্লাহ সুমনের নামে গত ৫ জানুয়ারী ২০২১ তারিখে আরও একটি হয়রানীমূলক মামলা দায়ের করে।
এছাড়া মিজানুর গাজী গত ২৭ জানুয়ারী ২০২১ তারিখে দৈনিক কাফেলা পত্রিকায় “আশাশুনওে বুধহাটায় ১৪৫ ধারা অমান্য করে ঘর নির্মাণ চলছে” শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ করায়। অথচ সেখানে আদৌ কোন পাকা ঘর নির্মাণ করা হয়নি। এছাড়াও মিজানুর গাজী গত ২৮ জানুয়ারীতারিখে সংবাদ সম্মেলন কওে সাইফুল্লাহ সুমনের বিরুদ্ধে বিভিন অসত্য তথ্য/অভিযোগ উপস্থাপন করে তার সম্মানহানী করার চেষ্টা করে যা গত ২৯ জানুয়ারী’২১ তারিখে দৈনিক কাফেলা সহ বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত হয়।এভাবে উক্ত মিজানুর গাজী সাইফুল্লাহ সুমনকে হয়রানী, সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করা, ও ক্রয়ক্রত ভোগদখলীয় জমি থেকে উচ্ছেদের পায়তারা চালাচ্ছে। এ ব্যাপারে উক্ত মিজানুর গাজীর সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
তাই ভূক্তভোগী সাইফুল্লাহ সুমন নিজ নামীয় সম্পত্তি ভোগদখলের নিশ্চয়তা, ভয়ভীতি, হয়রানী ও মিথ্যা মামলা থেকে মুক্তি পাওয়ার লক্ষ্যে বিষয়টি সুষ্ঠ সমাধানের জন্য সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
বুধহাটায় আদালতে মামলা দায়ের করে হয়রানী ও জমি জবর দখল চেষ্টার অভিযোগ
পূর্ববর্তী পোস্ট