প্রধান প্রতিবেদক : সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার বুধহাটা ইউনিয়ন পরিষদের কর্মসৃজন প্রকল্পের শ্রমিক অনুপস্থিতির কমপক্ষে আট লাখ টাকা আতœসাতের অভিযোগে উঠেছে। এমন অভিযোগ তোলেন ওই ইউনিয়নের ইউপি সদস্য মতিয়ার রহমান, হাফেজ রবিউল ইসলাম ও মমতাজ বেগম।
ঘটনার তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য সোমবার দুপুরে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন এই তিন ইউপি সদস্য।
অভিযোগে বুধহাটা ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মতিয়ার রহমান জানান, গত ৫ মে কর্মসৃজন প্রকল্পের আওতায় ৯টি ওয়ার্ডে ৩৪৩ জন শ্রমিকের ৪০ দিনের কাজ শুরু হয়। ৯ নং ওয়ার্ডে ৫০ জন শ্রমিক কাজে নিয়োগ পান। ৫০ শ্রমিকের ১৯৫০ হাজিরা হওয়ার কথা থাকলেও হাজিরা হয়েছে ১৫শ। অনুপুস্থিতি ঘটেছে ৪৫০ হাজিরা। সে অনুপাতে ৫০ জন শ্রমিকের ৪৫০ অনুপুস্থিত হিসেবে ৯০ হাজার টাকা সরকারি কোষাগারে ফেরৎ চলে যায়। বাকি টাকা শ্রমিকরা ৪ আগষ্ট ব্যাংক থেকে চেকের মাধ্যমে উত্তোলন করেন।
৩ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য হাফেজ মো. রবিউল ইসলাম বলেন, ৩নং ওয়ার্ডের ৩৫ জন শ্রমিক কর্মসূজন প্রকল্পের কাজে নিয়োগ পায়। ৩৫ জন শ্রমিকের ১৩৬৫ হাজিরা হওয়ার কথা থাকলেও হাজিরা হয়েছে ৭৫২। অনুপুস্থিত হয়েছে ৬১৩ হাজিরা। ৩৫ জন শ্রমিকের ৩৯ দিনের ৬১৩ হাজিরার অনুপুস্থিতির হিসেবে এক লক্ষ ২২ হাজার ৬শ টাকা ফেরৎ যায় সরকারি কোষাগারে।
তিনি অভিযোগ তুলে বলেন, অন্যান্য সাতটি ওয়ার্ডের শ্রমিকরা এভাবে কাজের হাজিরায় অনুপুস্থিত থাকলেও চেয়ারম্যান যোগসাযোশের মাধ্যমে ২৯ জুলাই শ্রমিকদের উপস্থিতি ছাড়াই রুপালী ব্যাংক বুধহাটা শাখা থেকে অনুপুস্থিতির কমপক্ষে আট লক্ষ টাকা উত্তোলন করে নেয় শ্রমিক সর্দ্দর অভিলাস ও শফি। এছাড়া ৩ নং ওয়ার্ডে একদিনও কোন প্রকল্পের কাজ করা হয়নি। আমাকে কোন প্রকল্পের দায়িত্বও দেওয়া হয়নি।
তিনি বলেন, ৩ নং ওয়ার্ডের শ্রমিকদের দিয়ে ১ নং ওয়ার্ডের কেওড়া পার্কে ১, ২ও ৩ নং ওয়ার্ডের শ্রমিকদের কাজ করানো হয়েছে। ১ ও ২ নং ওয়ার্ডের শ্রমিকদের টাকা উত্তোলন করলেও ৩ নং ওয়ার্ডের শ্রমিকের টাকা উত্তোলন করাননি চেয়ারম্যান। টাকা না পেয়ে এসব শ্রমিকরা আগত ঈদের আনন্দ থেকেও বঞ্চিত হওয়ার উপক্রম হয়েছে।
এদিকে, সংরক্ষিত নারী আসনের ইউপি সদস্য মমতাজ বেগম এসব ঘটনার তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানিয়ে বলেন, শ্রমিকদের না জানিয়ে ব্যাংক থেকে শ্রমিকদের টাকা তুলে আতœসাতের ঘটনাসহ স্বেচ্ছাচারিতার তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহন চাই।
শ্রমিক ছাড়াই ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলনের বিষয়ে শ্রমিকদের সর্দ্দার অভিলাসের সঙ্গে একাধিক বার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোনকল রিসিভ করেননি। তবে ৭ ও ৮ নং ওয়ার্ডের শ্রমিকদের সর্দ্দার শফি সরদার বলেন, আমার এই দুই ওয়ার্ডের শ্রমিকরা অনুপুস্থিত ছিল। কিন্তু সেটা কতজন এই মুহূর্তে বলতে পারছি না। তবে অনুপুস্থিতির টাকা উত্তোলন করেছেন কিনা সে বিষয়ে তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেননি।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বুধহাটা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আ.ব.ম মোসাদ্দেক বলেন, আমি কোন টাকা আতœসাৎ করিনি বা আমার টাকা আতœসাতের কোন সুযোগ নেই। এসব আমি দেখি না। শ্রমিকরাই ব্যাংকে গিয়ে নিজেরাই টাকা উত্তোলন করেছেন।
তিনি পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, ৩ ও ৯ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্যরা কর্মসৃজন প্রকল্পের শ্রমিকদের দিয়ে নিজেদের বাড়িতে কাজ করিয়েছেন। সেজন্য ওই দুই ওয়ার্ডের টাকা ফেরৎ দেওয়া হয়েছে।
বুধহাটা ইউনিয়নে কর্মসৃজন প্রকল্পের শ্রমিক অনুপস্থিতির আট লাখ টাকা আত্মসাৎ
পূর্ববর্তী পোস্ট