নিজস্ব প্রতিবেদক:
স্কুলছাত্রী বিথি’কে উত্যক্ত করার প্রতিবাদ করায় হামলার শিকার হয়েছে ছাত্রলীগ নেতা আবুল কালাম। হামলা করে উল্টো তারা পুলিশের কাছে কালামের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ করেছে। হামলার শিকার কালাম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়ায় দ্বিতীয় দফায় পুলিশ তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে।
কালামের মা আম্বিয়া জানান, সরকারী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের ক্লাস নাইনের ছাত্রী বিথির পরিবার তার বাড়ীর ভাড়াটে। বিথির পিতা শাহিনুর জেলা কালেক্টরেট অফিসের চাকুরে।
মুনজিতপুরের ইকবালের পুত্র বাঈজিদ স্কুল ছাত্রী বিথিকে প্রায়ই উত্যক্ত করতো। এ ঘটনার প্রতিবাদ করায়, বুধবার শহরের শহীদ আব্দুর রাজ্জাক পার্কে ছাত্রলীগ নেতা আবুল কালামের ওপর বাঈজিদ ও তার লোকজন হামলা করে। পরে আবুল কালামও পাল্টা বাঈজিদকে মারধোর করে। দু’পক্ষই থানার শরনাপন্ন হয়। আবুল কালাম বাঈজিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ লেখার জন্য রাইটারের কাছে গেলে সেখান থেকে সদর থানা পুলিশ তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে যায়। মারামারির পর বাঈজিদের পরিবারের দেখানো মতে পুলিশ একটি দা উদ্ধার করে।
এদিকে দু’পক্ষই বিষয়টি নিয়ে থানায় বসে মিমাংসা করে নেয়। মিমাংসার সময় আবুল কালামের মা আম্বিয়া, মামা রবিউল, এ্যাড. মোস্তাফিজুর রহমান অনিক, মৃণাল মন্ডল, ফাইম, সুজন ও অন্তু ছিল।
অপরদিকে, বুধবার আবুল কালামকে পুলিশ আটক করে ছেড়ে দিলেও বৃহষ্পতিবার রাত ৩টায় দ্বিতীয় দফায় তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে। আবুল কালাম তার ফেসবুকে বুধবার রাতে একটি স্ট্যাটাস দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে। এর প্রেক্ষিতে বুধবার দিবাগত রাত তিনটার সময় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ তাকে থানায় নিয়ে যায়।
আবুল কালামের রাজনৈতিক পরিচয়
আবুল কালাম শহরের রাজারবাগান সরকারী কলেজের অনার্সের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। সে কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিল (২০১৬-২০১৮)। জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদিক এর গ্রুপ না করায় সাদিক কলেজ ছাত্রলীগের কমিটি ভেঙ্গে দেয়। সাম্প্রতিককালে আবুল কালাম সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সাংবাদিকদের গ্রুপিংয়ে এক গ্রুপে ঢুকে পড়ে। সাংবাদিকদের এক গ্রুপের ওপর অপর গ্রুপের হামলার রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়ে কালাম। পরে বিভিন্ন পত্রিকায় তার বিরুদ্ধে লেখা লেখিও হয়। তাকে উদ্দেশ্যমূলক ভাবে ছাত্রদল নেতাও বানানোর অপচেষ্টা করা হয়।
আবুল কালাম ফেসবুক স্ট্যাটাসে যা লিখেছে তা হূবুহূ তুলে ধরা হলো:
“মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ করা কি বড় অপরাধ, ছাত্রলীগ নাম বললে থানা, জেল, অপমান মারধর শুনতে হয় পুলিশের কাছে। আর কত ছাত্রলীগ এই ভাবে নির্যাতনের শিকার হবে। এর কি কোন বিচার নাই। দল করলে পুলিশকে টাকা দিতে হয় নাই ছাড় পাবা যায় না এদের হাত থেকে। ছাত্রলীগ করলে মিথ্যা মামলা ও হয়রানি হতে হয়। আমি এক সাধারণ কর্মী ভালোবাসি বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে।”
ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়ার বিষয়ে কালাম সাতনদীকে জানায়, তার মাতা বলেছিল তোকে ছাড়াতে পনের হাজার টাকা লেগেছে। এ জন্য স্ট্যাটাস দেই।
কালামের মা আম্বিয়া সাতনদীকে জানিয়েছেন, ছেলেকে ভয় দেখানোর জন্য এটি বলেছিলাম। তবে কালামের মামা বাবলু সাতনদীকে জানান, এ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান অনিক (০১৭৯২৯২০২৪৭) তার বোন আম্বিয়াকে বলেছিল ১০/১৫ হাজার টাকা লাগবে। পরে বলেছিল ৫ হাজার টাকা লেগেছে।
এদিকে এই ঘটনাকে পুঁজি করে জনৈক ব্যক্তি পুলিশের উপরিমহলে জানিয়েছে কালামকে ছাড়াতে জনৈক হাবিব সাংবাদিক পুলিশকে টাকা দিয়েছে এবং কালাম ছাত্রদলের রাজনীতির সাথে জড়িত।
সাতক্ষীরা সদর থানার ওসি সাতনদীকে জানান, কোন পক্ষ মামলা না দেয়ায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে আনা কালামকে ছেড়ে দেয়া হয়। এজন্য কোন অর্থকড়ি খরচ হয়নি কারও।
পুলিশ সুপার সাতনদীকে জানিয়েছেন, একশ্রেণীর দালাল আছে তারা থানা পুলিশের নাম ভাঙ্গিয়ে সাধারণ মানুষেকে হয়রানি করে।