নিজস্ব প্রতিবেদক দেবহাটা উপজেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি আব্দুল আলিম। তিনি সাতক্ষীরার শীর্ষ চোরাকারবারী ও বিজিবি সদস্য আব্দুল জব্বার হত্যা মামলার চার্জশীট ভুক্ত আসামী। বর্তমানে তিনি বড় ভাই জেলার শীর্ষ চোরাকারবারী গডফাদার, সরকারের তালিকাভুক্ত অবৈধ অস্ত্র, মাদক, হুন্ডি কারবারী আল ফেরদাউস আলফার সাথে জেলা কারাগারে রয়েছেন।
এদিকে, আব্দুল আলিম দেবহাটা উপজেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি পদে বহাল থাকায় দলের ভেতরে ও বাইরে তীব্র আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে। দেশে যখন আওয়ামীলীগে শুদ্ধি অভিযান চলছে, তখন একজন শীর্ষ চোরাকারবারী, বিজিবি সদস্য হত্যা মামলার আসামী ও জামায়াত শিবিরের একজন সক্রিয় কর্মী হয়ে কিভাবে দেবহাটা উপজেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি হলেন এমন প্রশ্ন সচেতন মহলের।
খোঁজ নিয়ে আরো জানা গেছে, শীর্ষ চোরাকারবারী আল ফেরদাউস আলফার যাবতীয় চোরাচালান সিন্ডিকেট দেখাশুনা করে থাকে এই আলিম। এলাকায় তারই নেতত্বে চলে মাদক থেকে শুরু করে সব ধরণের অবৈধ কারবার। শুধু চোরাচালান নয় কোমরপুর সীমান্তের ইছামতি নদী থেকে উত্তোলনকৃত বালি বহনকারী প্রতি ট্রলি থেকে ৫০ টাকা করে চাঁদা তোলা হয় আলিমের নামে। প্রত্যেকদিন চাঁদাবাজিতেই তার আয় হয় মোটা অংকের টাকা। এসবের কেউ প্রতিবাদ করতে গেলে আলিম তার অফিসে ডেকে নিয়ে তার উপর নির্মম নির্যাতন চালায়। প্রশাসনের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তাদের সাথে আলফার সখ্যতা থাকায় এবং এলাকার লাঠিয়াল বাহিনীর ভয়ে কোন নির্যাতিত মুখ খুলতে সাহস পায় না। আলিমের নির্যাতন সেল নামক অফিসে টানানো রয়েছে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি। তাই, নিরবে নির্যাতন সহ্য করা ছাড়া কোন উপায় থাকে না, এমনটিই জানিয়েছেন এলাকার অনেক সচেতন নাগরিক। তারা জানান, শুধু প্রশাসন নয়, অনেক সাংবাদিক, বর্তমান সরকার দলীয় অনেক নাম করা নেতাদের সাথেও রয়েছে আলফা ও আলিমের ঘনিষ্ঠতা। এসব নেতা ও সাংবাদিকরা প্রায়ই আলিমের বাড়িতে ভোজ উৎসবে যোগ দিয়ে থাকেন। পরদিন সাতক্ষীরার একটি দুটি পত্রিকায় সেসব ভুরি ভোজের অনুষ্ঠানের ছবিও বড় করে ছাপানো হয়ে থাকে। তারা বলেন, আলফার টাকায় নাকি সাতক্ষীরার দুটি স্থাণীয় দৈনিক পত্রিকা বের হয়ে থাকে। এরপর আবার আলিম দেবহাটা উপজেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি। তাদের এখন অনেক টাকা পয়সা, ধন-সম্পদ। অনেক ক্ষমতাধর তারা, বললেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার অনেকেই। তবে, সম্প্রতি পুলিশের কঠোর ভুমিকায় প্রশংসা করছেন হাজার হাজার মানুষ। আলফা -আলিম গ্রেফতার হয়ে জেলে গেছে এমন খবরে পুলিশকে ধন্যবাদ দিয়ে এলাকায় মিষ্টি বিতিরণ হয়েছে। অনেকে বলেছেন, আমরা ঈদ উৎসব করেছি। তারা তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানিয়েছেন প্রশাসনের কাছে। একই সাথে আলিমকে দেবহাটা উপজেলা যুবলীগ থেকে বহিস্কারেরও দাবী জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে দেবহাটা উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মিজানুর রহমান মিন্নুর সাংবাদিকদের জানান, বোঝেন তো, সব কিছু ম্যানেজ করেই চলতে হয়। তাছাড়া কমিটি দিয়েছে জেলা যুবলীগ। তাই কিছু করতে হলে উপরের নির্দেশনা ছাড়া সম্ভব নয়।
আলিমকে যুবলীগ থেকে বহিস্কারের দাবী
পূর্ববর্তী পোস্ট