জাতীয় ডেস্ক: আবার বাড়তে শুরু করেছে দেশের বেশ কয়েকটি নদীর পানি। ফলে আবারও বন্যার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এদিকে লঘুচাপের প্রভাবে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ভারী বৃষ্টিও হচ্ছে। এতেও বাড়বে নদীর পানি। আবহাওয়াবিদ বজলুর রশিদ বলেন, সাগরে লঘুচাপ থাকায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। এই বৃষ্টি আগামীকালও অব্যাহত থাকতে পারে। তিনি বলেন, চলতি মাসের দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাসে মাসের শেষদিকে স্বল্পমেয়াদী বন্যার কথা বলা হয়েছে। মৌসুমি বায়ু এখনও দেশের ওপর সক্রিয়। তাই থেমে থেমে বৃষ্টি হবে আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত।
এদিকে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুজ্জামান জানান, ব্রহ্মপুত্র নদ ও যমুনা নদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে। যা আগামী ২৪ ঘণ্টা স্থিতিশীল থাকতে পারে। অন্যদিকে উত্তর পূর্বাঞ্চলের আপার মেঘনা অববাহিকার নদ- নদীগুলোর পানি বাড়ছে। যা আগামী ২৪ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে। এছাড়া পদ্মা ও গঙ্গা নদীর পানেই স্থিতিশীল আছে। যা আগামী ২৪ ঘণ্টা একই থাকতে পারে।
আজ দেশের চারটি নদীর চার পয়েন্টের পানি আবার বেড়ে বিপৎসীমার ওপরে অবস্থান করছে। গত কয়েকদিনে প্রায় সব নদীর পানিই বিপৎসীমার নিচে চলে এসেছিল। গুড় নদীর সিংড়া পয়েন্টের পানি এখন বিপৎসীমার ৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। একইভাবে আত্রাই নদীর বাঘাবাড়ি পয়েন্টে ১, ধলেশ্বরী নদীর এলাসিন পয়েন্টে ১২ এবং পদ্মা নদীর গোয়ালন্দ পয়েন্টের পানি বিপৎসীমার ৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের আগামী ১০ দিনের পূর্বাভাসেও নদ-নদীগুলোর পানি বাড়ার কথা জানিয়েছে। সেখানে বলা হয়, ব্রহ্মপুত্র নদ ও যমুনা নদীর পানি বাড়তে পারে। ফলে কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারী, বগুড়া জেলার সারিয়াকান্দি, গাইবান্ধা জেলার ফুলছড়ি, সিরাজগঞ্জ জেলার সিরাজগঞ্জ ও কাজীপুর, জামালপুর জেলার বাহাদুরাবাদ, টাঙ্গাইল জেলার এলাসিন এবং মানিকগঞ্জ জেলার আরিচা পয়েন্টের পানি আগামী তিনদিনের মধ্যে বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে।
এদিকে পদ্মা ও গঙ্গা নদীর পানিও বাড়তে পারে। ফল রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ পয়েন্ট, মুন্সিগঞ্জের ভাগ্যকূল পয়েন্ট এবং শরীয়তপুর জেলার সুরেশ্বর পয়েন্টের পানি বাড়তে পারে। আগে বাড়বে গোয়ালন্দ পয়েন্টের পানি। এরপর সুরেশ্বর ও ভাগ্যকূল পয়েন্ট এর পানি আগামী ১৮ আগস্টের মধ্যে বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে।
এদিকে নারায়ণগঞ্জের লাক্ষা নদীর পানি বাড়তে পারে। একইভাবে পানি বাড়তে পারে তুরাগ নদীর মিরপুর পয়েন্ট এবং ধলেশ্বরী নদীর রেকাবি বাজার পয়েন্টের পানি। এতে আবারও ঢাকার আশেপাশের নিম্নাঞ্চল বন্যা কবলিত হবার আশঙ্কা রয়েছে।
এদিকে আবহাওয়া অধিদফতর জানায়, আজ দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টি হয়েছে কক্সবাজারে ১৫৫ মিলিমিটার। এছাড়া ঢাকা বিভাগের মধ্যে গোপালগঞ্জে ২৭ , ময়মনসিংহের নেত্রকোনায় ১৫, সিলেটে ৯, রাজশাহী বিভাগের ঈশ্বরদীতে ৫, রংপুর বিভাগের মধ্যে তেঁতুলিয়ায় ১১, খুলনা বিভাগের মধ্যে সাতক্ষীরায় ৬৫ এবং বরিশালের পটুয়াখালীতে ৭০ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে।
পূর্বাভাসে বলা হয়, রংপুর, বিভাগের অধিকাংশ জায়গায়,খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম, ঢাকা ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং ময়মনসিংহ, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পার। একইসঙ্গে কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী বৃষ্টি হতে পারে।