দেবহাটা ব্যুরো/দেবহাটা প্রতিনিধি: জনপ্রশাসন পদকে ভুষিত সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসন কতৃক পরিচালিত রূপসী দেবহাটা ম্যানগ্রোভ পর্যটন কেন্দ্রটি নিয়ে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ পাওয়া গেছে। পর্যটন কেন্দ্রটি নিয়ে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে পর্যটন কেন্দ্রটির সরকারী জমি জবর দখলকারী সদর ইউনিয়ন পরিষদের ৬ নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য মাহবুবুর রহমান বাবলু ও একই ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্যআজগর আলী । এঘটনায় বুধবার (২৪ জুলাই) ষড়যন্ত্রকারী দুই ইউপি সদস্য মাহবুবুর রহমান বাবলু, আজগর আলী সহ টাউনশ্রীপুর গ্রামের মনিরুজ্জামান মনি ও আব্দুর রউফের ছেলে রোকনুজ্জামানের নাম উল্লেখ করে দেবহাটা থানায় একটি সাধারন ডায়েরী (জিডি) করেছেন রূপসী দেবহাটা ম্যানগ্রোভ পর্যটন কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক দীপঙ্কর ঘোষ। এদিকে দীপঙ্কর ঘোষের দায়েরকৃত সাধারন ডায়েরীটিতে বর্নিত অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করে তদন্তপরবর্তী নিয়মিত মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করতে দেবহাটা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বিপ্লব কুমার সাহাকে এক লিখিত পত্রের মাধ্যমে নির্দেশনা দিয়েছেন দেবহাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইকবাল হোসেন। রূপসী দেবহাটা ম্যানগ্রোভ পর্যটন কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক দীপঙ্কর ঘোষের অভিযোগে জানা গেছে, দেবহাটার সীমান্তবর্তী ইছামতি নদীর তীর ঘেঁষে ১০৩ বিঘা জমির ওপর সুন্দরবনের আদলে সৃষ্ট রূপসী দেবহাটা ম্যানগ্রোভ পর্যটন কেন্দ্রটির নিয়ন্ত্রনাধীন সরকারী খাস সম্পত্তি সরকারের বিনা অনুমতিতে দীর্ঘদিন ধরে সদর ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য মাহবুবুর রহমান বাবলু, ইউপি সদস্য আজগর আলী সহ তাদের মনোনীত একাধিক ব্যাক্তি ভোগদখল করে আসছিলো। বর্তমান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইকবাল হোসেন দেবহাটাতে যোগদানের পর সিএস নকশা অনুযায়ী ম্যানগ্রোভ পর্যটন কেন্দ্র সংলঘœ বহু সরকারী সম্পত্তির হদিস পান। প্রকৃতপক্ষে এসকল সরকারী সম্পত্তি অবৈধ দখলদারদের থেকে দখলমুক্ত করে সরকারী নিয়ন্ত্রন সহ ম্যানগ্রোভের উন্নয়নে কাজে লাগিয়ে পর্যটন কেন্দ্রটিকে আরো সমৃদ্ধ ও বৈচিত্রময় করে গড়ে তোলার উদ্যোগ গ্রহন করেন। সম্প্রতি সময়ে ম্যানগ্রোভ পর্যটন কেন্দ্রটির আওতাধীন এমন অনেক সরকারী সম্পত্তি দখলমুক্ত করে নিয়ন্ত্রনে আনা হয়েছে এবং বাকীদের শীঘ্রই উচ্ছেদ করে সরকারী সম্পত্তি নিয়ন্ত্রনে আনতে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত আবেদন জানান নির্বাহী কর্মকর্তা ইকবাল হোসেন। পরবর্তীতে লিখিত আবেদনের প্রেক্ষিতে কালীগঞ্জ উপজেলা ভুমি অফিসের সার্ভেয়ার নাসির উদ্দীনকে আহবায়ক সহ একটি সার্ভেটিম গঠন করে ইছামতি নদীর চরভরাটি এসব সরকারী জমির সীমানা নির্ধারন সহ অবৈধ দখলদারকে দখলমুক্ত করতে নির্দেশনা জারি করেন জেলা প্রশাসক। পাশাপাশি দেবহাটা ভুমি অফিসের ভুমি সহকারী কর্মকর্তাকে সার্ভে কার্যে প্রযোজ্য সিএস ও বিএস রেকর্ডের নকশা অনুযায়ী রেজিষ্টার হালনাগাদের নির্দেশনাও দেন জেলা প্রশাসক। ইতোমধ্যেই সিএস ও বিএস রেকর্ডের নকশা অনুযায়ী রেজিষ্টার হালনাগাদের মাধ্যমে প্রায় ২’শ বিঘা সরকারী সম্পত্তির তথ্য পেয়েছে দেবহাটা উপজেলা প্রশাসন। আর জেলা প্রশাসকের নির্দেশনা অনুযায়ী সার্ভেটিম শীঘ্রই দ্রুত সময়ের মধ্যেই জরিপ কাজ শুরু করবে। এতে করে গাত্রদাহ শুরু হয়েছে ইউপি সদস্য মাহবুবুর রহমান বাবলু, আজগর আলী সহ তাদের সাঙ্গপাঙ্গদের। দীর্ঘদিন ধরেই মাহবুবুর রহমান বাবলু ও আজগর আলী ম্যানগ্রোভ সংলঘœ এসব সরকারী জমিতে অনুপ্রবেশ, জবর দখল সহ বিভিন্ন ব্যাক্তিদের সম্পুর্ন অবৈধভাবে ইজারা দিয়ে বিপুল পরিমান অর্থ আত্মসাত করেছে। তারা বর্তমানে সরকারী সম্পত্তি পুনরুদ্ধারে বাধা প্রদান এবং জোরপুর্বক নিজেদের দখলে রাখতে নানা অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে। এমনকি বিভিন্ন সময়ে তাদের বাহিনীর মনিরুজ্জামান, রোকনুজ্জামান রোকন ম্যানগ্রোভ পর্যটন কেন্দ্রের মধ্যে অবৈধ প্রবেশ করে ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা সাধারন কর্মচারীদের হুমকি দিচ্ছে বলেও অভিযোগে উল্লেখ করে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহনের দাবী জানিয়েছেন পর্যটন কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক দীপঙ্কর ঘোষ।
দেবহাটায় পর্যটনকেন্দ্র নিয়ে ষড়যন্ত্র : ২ মেম্বরের বিরুদ্ধে জিডি
পূর্ববর্তী পোস্ট