নিজস্ব প্রতিবেদক: দীর্ঘ ৬০ বছরের ভোগ দখলীয় পৈত্রিক সম্পত্তি একটি চক্র অর্থের প্রভাব খাটিয়ে নিজেদের স্বার্থ রক্ষা করতে ইচ্ছা খুশি মতো জোরপূর্বক দখল করে নিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনাটি সাতক্ষীরা সদরউপজেলার আলিপুর ইউনিয়নের মাহমুদপুর দক্ষিণপাড়া গ্রামের।
সরেজমিনে ঘুরে বিভিন্ন তথ্য ও থানায় দায়েরকৃত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, মাহমুদপুর দক্ষিণপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুর রহিমের পুত্র মোঃ ইনামুল হকের মাহমুদপুর বাজারের পাশে পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া ২৮ শতক জমি রয়েছে। এই জমিতে তাদের একটি পুকুর ও ৫টি দোকান ঘরও আছে। এসব জমি দীর্ঘ ৬০ বছরের ভোগ-দখলীয়। পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া এসব জমি পূর্ব পুরুষরা ৪৫ বছর আগে ভাগ-বাটোয়ারা করে দেয়। সেই অনুযায়ী শরীকরা ভাগ মোতাবেক দখল নিয়ে যার যার অবস্থানে থেকে সেখানে ঘর-বাড়ি, দোকান-পাট সহ বহু বছরের পুরনো গাছ- পালা ও বসবাসের উপযোগী জিনিসপত্র রয়েছে।
সম্প্রতি এই জমি নিয়ে ইনামুলের এক শরীক একই গ্রামের মৃত জিয়াউল হকের পুত্র মোঃ রিয়াজুল হক মিঠু ঐ এলাকার প্রভাবশালী অল্প সময়ে জিরো থেকে হিরো বনেযাওয়া মৃত আব্দুল গফুরের পুত্র মোঃ ফরিদ হোসেনের প্ররোচনায় পড়ে ইনামুল হকের জমি দখল করার পাঁয়তারা শুরু করে। এই ফরিদের ষড়যন্ত্রে গত ১৯ জুন ইনামুলের ভোগ দখলীয় সম্পত্তিতে জোরপূর্বক টিনসেডের অস্থায়ী ঘর নির্মাণ করে। এই ঘটনার জেরে গত ১৯/০৬/১৯ তারিখে ইনামুল বাদী হয়ে মিঠু, ফরিদ সহ ৩ জনের নামে সদর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করে। এই অভিযোগটি পেয়েই সদর থানার সেকেন্ড অফিসার এস, আই নজরুল ইসলাম ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত করে দুই পক্ষকে বসাবসির জন্য অনুরোধ জানায়। সদর থানায় শালিসী বৈঠকের জন্য প্রথম একটি তারিখ নির্ধারন করলেও ফরিদের কুটচালে সময় ক্ষেপনের জন্য সেই তারিখের হাজির না হয়ে ঘর নির্মান কাজ চালিয়ে যায়। পরবর্তীতে সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মোস্তাফিজুর রহমান সরেজমিনে তদন্ত করে পুনরায় গত ইং ২৬/০৭/১৯ তারিখে শালিসী বৈঠকের দিন ধার্য করে। এ দিন বিষয়টি উভয়পক্ষের উপস্থিতিতে মিমাংসার চেষ্টা ব্যর্থ হলে শালিসী বৈঠকে উপস্থিত আলিপুর ইউপি’র নব-নির্বাচিত চেয়ারম্যান স, ম আব্দুর রউফের উপর বিষয়টি নিষ্পত্তির দায়িত্ব দেয়। থানায় বসাবসির ৩ দিন পর অদৃশ্য শক্তির জোরে ফরিদ জমির শরীক মিঠুরকাছ থেকে ৩০ লাখ রেজিষ্ট্রি বায়না পত্র করে নেয়। অথচ থানায় সর্বশেষ শালিসী বৈঠকের দেড় মাস আগেই ফরিদ এনামুলের শরিক মিঠুর কাছ থেকে জমি কিনে নেওয়ার কথা প্রচার করে ইনামুলের ভোগ দখলীয় খালি জায়গা আচমকা জোর পূর্বক দখল নেয়।
ইনামুল সাতনদীকে জানায়, ফরিদ ও তার লোকজন সম্পূর্ন গায়ের জোরে অর্থের প্রভাবে বাপ-দাদার দীর্ঘ ৬০ বছরের ভোগ দখলীয় জমি জোরপূর্বক দখল করে নিয়েছে। বিষয়টি মেটাতে আমার শরীককে বর্তমান বাজারমূল্যে জমি কিনতে চেয়েছি। অথচ ফরিদের টাকা ও ষড়যন্ত্রে আমি নিরুপায় হয়ে গেছি। এই জমি নিয়ে ফরিদের ইন্ধনে আমাকে প্রায় তার লোকজন হুমকি-ধামকি ও মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আমি প্রশাসনের কাছে এর বিচার চাই।
মোঃ রিয়াজুল হক মিঠুর কাছে এ প্রতিবেদক বৃহস্পতিবার (২২ আগষ্ট)রাত ১০টায় মোবাইল করলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
এ ব্যাপারে ফরিদ মোবাইলে জমি দখলের কথা অস্বীকার করে জানান, আমি জমি দখল করেনি। আমি ঈদের আগে ঐ জমি কিনেছি। ৩/৪ বছরে অর্থাৎ এতো অল্প সময়ে কোটি কোটি টাকার মালিক হওয়া কিভাবে সম্ভব এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমার ইনকাম ট্যাক্সের ফাইল আছে সেখানে খোঁজ নিয়ে দেখেন। আমি নিজেও ভারতে মালামাল আমদানি-রপ্তানি করি।