কালিগঞ্জ প্রতিনিধি: র্দীঘ-দিন ধরে ডাক্তার, নার্স, কর্মচারী, স্বল্পতায় কালিগঞ্জ হাসপাতালে ভর্তি ডেঙ্গু সহ অন্যান্য রোগীরা পর্যাপ্ত চিকিৎসা সেবা থেকে প্রতিনিয়ত বঞ্চিত হচ্ছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণলয় এবং সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন অফিস থেকে কোন খোজ-খবর, দেখ-ভাল না করায় আল্লাহর মাল আল্লাহ দেখবে এমন প্রশ্ন রোগী, স্বজন সচেতন মহলসহ উপজেলা বাসীর। গত ২ মাস ধরে ঢাকা, চট্টগ্রাম সহ জন বহুল শহরে যখন ডেঙ্গুর প্রভাব বিস্তার করলেও জেলা এবং উপজেলা গুলোতে এর প্রকোপছিল খুবই কম। ঈদুল আযহার আগে এবং পরে এ পযর্ন্ত কালিগঞ্জ হাসপাতালে নারী- পুরুষ সহ ১০ জন ডেঙ্গু রোগী সনাক্ত হয়েছে। এ পযর্ন্ত ডেঙ্গু রোগীদের খোজ-খবর নিতে কালিগঞ্জ উপজেলা নিবার্হী কর্মকতা সরদার মোস্তফা শাহিন কালিগঞ্জ হাসপাতালে গেলে হাসপাতলে ভর্তি রোগী এবং স্বজনরা কালিগঞ্জ হাসাপাতালের চিকিৎসা ব্যবস্থার চরম অবহেলা, ডাক্তার সংকট পর্যাপ্ত ঔষধ না থাকা সহ বিস্তর অভিযোগ তুলে ধরেন। এসময় তারা অভিযোগ করে বলেন হাসপাতালে ডেঙ্গুর ওয়াডে রোগীর বেড স্বল্পতা, ডাক্তারের অভাব, জুরুরী বিভাগে ডাক্তার না থাকা, নার্স দিয়ে দায়সারা জরুরী বিভাগ চালানো সহ অধিকাংশ সময় ওয়াডবয় দিয়ে গুরুতর আহতদের সার্জারী করানো এবং ডেঙ্গু সহ সাধারণ রোগীদের একসাথে রাখা এবং ডেঙ্গু রোগীর রক্ত ও প্লাটিনেট পরিক্ষায় বিভিন্ন অনিয়ম তুলে ধরেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। হাসাপাতালের নার্স পুতুল, রানী হালদার, রেহানা মিলে রোগীদের পালাক্রমে সেবা দিলেও দেখা মেলেনা কোন ডাক্তারের। শুধুমাত্র হাসপাতালের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কর্মকর্তা ডাঃ তৈয়েবুর রহমান সকালে একবার করে পরিদর্শনে রোগীর দেখা মেলে তবে তার কোন জরুরী মিটিং থাকলে আর খোজ-খবর নেওয়ার চিকিৎসক থাকেনা। তবে একথা মানতে নারাজ কালিগঞ্জ হাসপাতলের ই্উএইচও ডাঃ তৈয়েবুর রহমান। তিনি ডাক্তার, নার্স, ঔষধ সংকটের কথা স্বীকার করলেও চিকিৎসা সেবা যথাসাধ্য দেওয়া হয় বলে জানান। এছাড়াও তিনি বলেন আমি নিজের পকেটের টাকা দিয়ে ডেঙ্গু পরিক্ষার কীট কিনে রোগীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছি। এপযর্ন্ত কালিগঞ্জ হাসপাতালে ভর্তি ১০ জন ডেঙ্গু রোগীরা হলেন। কালিগঞ্জ উপজেলার দঃ শ্রীপুর ইউনিয়নের উঃ শ্রীপুর গ্রামের মৃত নুরইসলামের পুত্র ঢাকার রাইজিন গার্মেন্টস এর কাটারম্যান রিয়াজুল ইসলাম (৩২), শ্রীকলা গ্রামের শেখ রমজান আলীর পুত্র মৌতলা শিমুরেজা কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র মেখলেছুর রহমান (১৯), মৌতলা ইউনিয়নের পানিয়া গ্রামের শেখ মোরশেদ আলী পুত্র হাসানুর রহমান (২২), কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের কালিগাপুর গ্রামের জুহুর আলী কাগুচী পুত্র মনিরুল ইসলাম (৩৬), তারালী ইউনিয়নের তারালী গ্রামের সত্যনন্দ ঘোষের পুত্র সাতক্ষীরা সরকারী কলেজের অনার্স দ্বিতীয় সুমন কুমার ঘোষ (২২), একই গ্রামের মুনছুর আলীর স্ত্রী আনোয়ারা খাতুন (৩৯), বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের চাচাই গ্রামের ছৈইলুদ্দীন গাজীর পুত্র লাভলু গাজী (১৯), তেঁতুলিয়া গ্রামের মাওলানা আঃ রাকিবের পুত্র ঢাকা রেসিন্ডিয়ান সাল মডেল কলেজের ছাত্র আকিবুল হক (১৭), মথুরেশপুর ইউনিয়নের দুধলী গ্রামে মৃত আরিফ গাজীর পুত্র গার্মেন্টস কর্মী মোমিন গাজী (৪৫), এবং ভাড়াশিমলা ইউনিয়নের ভাড়াশিমলা গ্রামের খায়রুল ইসলামের স্ত্রী গার্মেন্টস কর্মী রিমা খাতুন (২২)। গ্রার্মেন্টস কর্মী মোমিন গাজী এবং রিমা খাতুন ঢাকা এসে প্রথমে জ্বরে কালিগঞ্জ হাসপাতালে ভর্তি হলে ডেঙ্গু ধরা পড়ে। এ ব্যপারে হাসপাতালের চিকিৎসরা সাতনদীকে জানান এর অধিকাংশ রোগীরা ঢাকা হতে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ঈদের ছুটিতে বাড়ীতে এসে ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এদিকে ডেঙ্গু রোগীদের সুস্বাস্থ্য কথা মাথায় রেখে হাসপাতালে পর্যাপ্ত ঔষধ এবং ডাক্তার না থাকায় ভাল সেবার জন্য অনেক রোগীকে সাতক্ষীরা সদর ও মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। কারণ হিসাবে দেখা গেছে, ডাক্তার, নার্স এর অভাবে হাসপাতালের মালি আব্দুল হান্নান উপজেলার গোয়ালপোতা গ্রামের তালেব মোড়লের পুত্র শাহাজামানকে গুরুতর আহত অবস্থায় মথায় সেলাই দিচ্ছে। ডাক্তার এবং নার্স সংকটের সুযোগে ঔষধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের দিয়ে অপারেশ থিয়াটারে গর্ভপতী মহিলা সিজার করানোর অহরহ ঘটনা ডাক্তার সহযোগীতায় ঘটে চলেছে। অধিকাংশ সময় ইমারজেন্সি রুমে এসমস্ত মালিদের উপর ভরসা করে ডাক্তারি সেবা নিতে দেখা গেলেও দেখার কেউ নাই। কালিগঞ্জ হাসপাতালের একটি ব্যবস্থপনা কমিটি থাকলেও মাসিক মিটিংএ চা নাস্তা পযর্ন্ত সীমাবদ্ধ থেকে যার যার গন্তবে চলে যায়। বাকি সবই যেন আল্লাহ দেখবেন এমন ধারনা সবার।
কালিগঞ্জে ডেঙ্গু রোগী-১০ : অসূস্থ রোগীরা চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত


পূর্ববর্তী পোস্ট