হাফিজুর রহমান, কালিগঞ্জ (সাতক্ষীরা) থেকে : কর্মীদের মধ্যে বিভেদ, নেতায় নেতায় কোন্দল, এমপি নেতায় দ্বন্দ, উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউপি চেয়ারম্যান বনাম এমপি’দের কোন্দলের সুযোগে জামায়াত, বি,এন,পি থেকে সুযোগ সন্ধ্যানীরা মামলা হামলা থেকে বাঁচতে হাইব্রিড কাউয়া হয়ে অনুপ্রবেশ করে এখন আওয়ামী লীগ নেতা বলে হাত ধরাধরি করে চলছে। এমনকি মারামারি খুনোখুনির ঘটনা প্রতিনিয়ত ঘটে চললেও নেতৃত্ব শুন্য কালিগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের দেখার কেউ নেই। শনিবার দুপুরে পূর্ব নারায়নপুর গ্রামে এক মেম্বরের বাড়িতে দাওয়াত খাওয়াকে কেন্দ্র করে ভাড়াশিমলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসেনের সমর্থকদের মধ্যে সদ্য কমিটি পাওয়া কালিগঞ্জ উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল ইসলাম ওরফে নাইমের সমর্থকদের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এবং এ নিয়ে থানায় আবুল হোসেন গ্রুপের নামে মামলাও হয়েছে। বর্তমান যা হচ্ছে তা হাইব্রিড কাউয়াদের অনুকলে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদাৎ বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবসের অনুষ্ঠান হয়েছে থানা আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের মধ্যে। কালিগঞ্জ উপজেলায় আওয়ামী লীগের কোন কমিটি না থাকায় উপজেলার ১২টি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি/সম্পাদক, ওয়ার্ড সভাপতি,সম্পাদক ও সহযোগী সংগঠনের নেতা কর্মী সমর্থকদের নিয়ে কাঁকশিয়ালী সেতু পাদ দেশে বঙ্গবন্ধু মুরালের পার্শ্বে জেলা আওয়ামী লীগের কার্য নির্বাহী কমিটির সদস্য, থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এ্যাডঃ মোজাহার হোসেন কান্টু, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এনামুল হোসেন ছোট, সাবেক সভাপতি প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ ওয়াহেদুজ্জামানের পুত্র আওয়ামী লীগ নেতা মেহেদী হাসান সমুন, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ রিয়াজ উদ্দীন ও অন্যান্য নেতাদের নেতৃত্বে জাতীয় শোক দিবস পালন হয়। অন্যদিকে কাঁকশিয়ালী নদীর পার্শ্বে ইকো পার্কে থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসাবে নির্বাচিত উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাঈদ মেহেদীর নেতৃত্বে জাতীয় শোক দিবস পালিত হয়। উভয় অনুষ্ঠানে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এবং স্থানীয় সংসদ সদস্যদের অতিথি করা হলে কেউ হাজির হননি। এনিয়ে অস্বস্তিতে পড়েছেন উপজেলার ১২ ইউনিয়নের নীতিনির্ধারক সহ মাঠ পর্যায়ের সাধারণ নেতা কর্মীরা। বিষয়টি আওয়ামীলীগের হাই কমান্ড জেনেও ব্যবস্থা না নেওয়ার সুযোগে উপজেলা জুড়ে এখন হাইব্রিড কাউয়া আওয়ামী লীগের জয় জয়কার। সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের দ্বন্দ্ব অনুরূপ। উপজেলা জুড়ে বর্তমান লীগ ছাড়া কোন দল বা মানুষ খুঁজে পাওয়া দ্ষ্কুর। উপজেলা জুড়ে এতো লীগ যে জামায়াত বি,এন,পির নাম খুজে পাওয়া যায় না পায় শুধু পুলিশ। যত দোষ নন্দ ঘোষের। ভোট আসলে আওয়ামী লীগের কোন ভোট নাই। গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বি,এন,পি জামায়াতের কোন প্রার্থী ছিল না। আওয়ামী লীগের নৌকায় দলীয় মনোনয়ন পান মুক্তিযোদ্ধা সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা আলহাজ্ব আতাউর রহমান, অন্যদিকে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসাবে থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাঈদ মেহেদী এবং মেহেদী হাসান সুমন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করে। নৌকার পাল ছিড়ে ৯ হাজারের কিছু ভোট পেয়ে জামানাত হারাতে হয় আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী নৌকা প্রতীকের। অন্যদিকে বিদ্রোহী প্রার্থী সাঈদ মেহেদী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। নির্বাচনের পর দুপক্ষের মধ্যে ব্যাপক সহিংতার ঘটনা ঘটে। এছাড়া সদ্য কালিগঞ্জ উপজেলার কুশুলিয়া এবং মৌতলা ইউনিয়ন পরিষদের উপ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী এ্যাডঃ মোজাহার হোসেন কান্টু নৌকা প্রতীকে ১ হাজার ৪৩ ভোট পেয়ে জামানাত হারান। পক্ষান্তরে কাউয়া আওয়ামী লীগারদের দখলে থাকা ভোটারদের ভোটে বি,এন,পি প্রার্থীরা জয় লাভ করে। এখন প্রশ্ন হলো বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এত উন্নয়ন, এত লীগ, যেমন আওয়ামী লীগ, কৃষক লীগ, যুবলীগ, তাঁতী লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ছাত্র লীগ, শ্রমিক লীগ, তরুন লীগ, সৈনিক লীগ, বঙ্গবন্ধু সর্ব হারা লীগ, সজিব ওয়াজেদ জয় লীগ, বঙ্গবন্ধু প্রজন্ম লীগ, বাস্তহারা লীগ, তথ্য প্রযুক্তিলীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, মহিলা যুবলীগ এই রকম নাম না জানা অসংখ্য লীগ এসমস্ত লীগের থানা, ইউনিয়ন, ওয়ার্ডে নূন্যতম ৫১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি ধরলে শুধু লীগ পরিবারের ভোটে একজন দলীয় চেয়ারম্যান নির্বাচিত করা খুবই সহক ব্যাপার। তবে জানানত তো হারানোর কথা নয়। তাহলে এসমস্ত হাইব্রিড কাউয়া লীগ কারা? যাহারা ২০১৩ সালের কাদের মোল্লার ফাঁসির রায়ের পর হইতে জ্বালাও পোড়াও ও সহিংসতা করেছে যারা ঐ সময় সহিংস ঘটনায় জামায়াত বি,এন,পির অগ্রনী ভুমিকায় ছিল তারা পুলিশের মামলা, হামলা গ্রেপ্তার এড়াতে রাতারাতি আওয়ামী লীগ নেতাদের টাকা দিয়ে বিভিন্ন লীগের পদ পদবী এখন তাদের দখলে। তারাই নেতৃত্ব দিয়ে এখন আওয়ামী লীগ চালাচ্ছে সাধারণ নেতা কর্মীদের এমনই অভিযোগ। ২০১৫ সালের ১৫ই জানুয়ারী কালিগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সর্ব শেষ ত্রি-বার্ষিক কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সম্মেলনে সমঝোতার ভিত্তিতে সভাপতি প্রয়াত আলহাজ্ব শেখ ওয়াহেদুজ্জামান নির্বাচিত হন। কাউন্সিলারদের ভোটে সাঈদ মেহেদী সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। কমিটির মেয়াদ তিন বছরের অধিক বা উত্তীর্ণ হয়ে গেলেও থানা আওয়ামী লীগের নানামুখী দ্বন্দ্বের কারণে পূর্ণাঙ্গ কমিটি আজও পর্যন্ত আলোর মুখ দেখেনি। থানা আওয়ামী লীগের দুই সদস্য বিশিষ্ট কমিটির মধ্যেহতে ইতো মধ্যে ২০১৮ সালের ১৩ জানুয়ারী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আলহাজ্ব শেখ ওয়াহেদুজ্জামান মৃত্যু বরণ করেন। সেই থেকে বটবৃক্ষের শুন্যতায় থানা আওয়ামী লীগের কমিটি শুন্যতা বিরাজ করছে। আর এই আওয়ামী লীগের নেতৃত্বের কোন্দলের সুযোগে গোপনে দল গোছাচ্ছে জামায়াত। আওয়ামী লীগের কোন্দলের কারণে অন্যান্য সহযোগী লীগ অনৈতিক কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়েছে। টাকার বিনিময়ে বিভিন্ন সহযোগী লীগের কমিটি বিক্রি হচ্ছে। আর এই সুযোগে আওয়ামী লীগের পদ কিনে কাউয়ারা আওয়ামী লীগের কাঁধের উপর ভর করে গোপনে দল গোছানোর কাজ এগিয়ে নিচ্ছে। এমন অভিযোগ কালিগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের প্রকৃত ত্যাগী নেতা কর্মীদের মুখে মুখে।
কালিগঞ্জ আওয়ামী লীগে হ য ব র ল : মাঠের কোন্দলে আ’লীগ এখন হাইব্রিড কাউয়াদের দখলে!
পূর্ববর্তী পোস্ট