টানা দাবদাহে বিধ্বস্ত জনজীবন

কর্তৃক Ayub hossaen Rana
০ কমেন্ট 44 ভিউস

আহাদুর রহমান জনি: টানা তাপাদাহে বিপর্যস্ত জনজীবন। ঢাকাসহ সারাদেশের মানুষ তীব্র গরমে হাঁসফাঁস করছে। হিটস্ট্রোকে মৃত্যুর খবর পাওয়া যাচ্ছে। পেটের পীড়ায় আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। গরম ও লোড শেডিংয়ে অনেকের নির্ঘুম রাত কাটছে। বাইরে বের হওয়া দায়, যেন মরুভূমির গরম। প্রচণ্ড রোদের তাপে কোথাও কোথাও সড়কের পিচ গলে যাওয়ার খবর এসেছে। যা আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত চলতে পারে বলে বিভিন্ন আবহাওয়া স্যাটালাইট বিশ্লেষণে জানা যায়।
গত কিছুদিন ধরেই তাপমাত্রা ক্রমেই বাড়ছে। ৪ এপ্রিল দেশের ছয় জেলায় শুরু হয় মৃদু তাপপ্রবাহ। এরপর ঝড়-বৃষ্টিহীনতায় ক্রমেই তাপপ্রবাহের তীব্রতা বাড়ে, বিস্তৃত হতে থাকে আওতা। সর্বশেষ শুক্রবার তীব্র থেকে মৃদু তাপপ্রবাহ সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে। আবহাওয়াবিদ ও আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, আগামী ৩/৪ দিনের মধ্যে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে (সিলেট বিভাগ) ঝড়-বৃষ্টি হতে পারে। আগামী ১৬ এপ্রিলের পর থেকে সীমিত পরিসরে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে কালবৈশাখী ঝড়ের সঙ্গে হালকা বৃষ্টি শুরু হতে পারে। মূলত ২৩ এপ্রিলের পর থেকে ঝড়-বৃষ্টির প্রবণতা বাড়বে। এতে তাপপ্রবাহ দূর হতে থাকবে।
আজ শনিবার ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, ১৯৬৫ সালের পর এটি ঢাকার সবচেয়ে বেশি তাপমাত্রা। এর আগে ১৯৬৫ সালে ঢাকায় ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছিল। ঢাকা, ফরিদপুর, মানিকগঞ্জ, পাবনা, বাগেরহাট, যশোর, চুয়াডাঙ্গা ও কুষ্টিয়া জেলার ওপর দিয়েতীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। যার আঁচ পরেছে সাতক্ষীরা জেলাতেও। সাতক্ষীরা জেলায় গতকাল শনিবার সর্বোচ্চ তামপাত্রা ৪০ ডিগ্রী সেলসিয়াস থাকলেও অনুভূত হয় ৪২-৪৩ ডিগ্রী। যা পিচঢালা পথের আরও ৫ ডিগ্রী বেশি। রাত ১০টায় তাপমাত্রা ৩১ ডিগ্রী সেলসিয়াস থাকলেও অনুভূত হয় ৪১ ডিগ্রী। অন্যদিকে বাতাসের গতি সর্বচ্চো ৫ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টায় থাকায় তাপ আরও বেশি অনুভূত হয়। প্রচন্ড তাপে ও ভ্যাপসা গরমে দিশেহারা খেটে খাওয়া মানুষগুলো। অন্যদিকে গুগলসহ বিভিন্ন আবহাওয়া সম্প্রচারকারী ওয়েবসাইট বিশ্লেষণে জানা যায় আজ রবিবার তাপমাত্রা আরও এক ডিগ্রি বেশি থাকবে যা আগামী শুক্রবার পর্যন্ত চলতে পারে।
শহরের পাকাপোল মোড়ের বেকারী সামগ্রী বিক্রেতা ও বিকাশ এজেন্ট মুসা জানান, ‘রোজায় এত গরমে দোকান চালানো অসম্ভ হয়ে পড়েছে। তারপরও কোন ভাবে চালিয়ে নিচ্ছি।
থানা মোড়ের সবজি বিক্রেতা আল আমিন জানান, ‘প্রচন্ড গরমের কারণে তরকারি শুকিয়ে যাচ্ছে। তাই কয়দিন ধরে তরকারি বিক্রি বন্ধ রেখেছি। তার বদলে রাতে হাঁস বিক্রি করছি।
ইটাগাছা মোড়ের রেজাউল ইসলাম জানান, ‘প্রচন্ড গরমে জান বাঁচানো দায়। জীবনের তাগিদে শুধু বাইরে আসা।’
আব্দুর রাজ্জাক পার্কে শরবত বিক্রেতাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, রোজায় সারাদিন টুকটাক শরবত বিক্রি হলেও ইফতারের পর শরবত বিক্রি করতে হিমশীম খেতে হয়।
সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে আরএমও ডাঃ ফয়সাল আহমেদ সাতনদীকে জানান, এই গরশে শিশু ও বয়স্কদের প্রতি বিশেষ যত্ন নিতে হবে। প্রয়োজন ছাড়া রোদে ঘোরাফেরা করা যাবে না। তরল খাবার গ্রহণ করতে হবে। হিট স্ট্রোক এড়াতে গরমে বেশি বেশি পানি পান করার ও ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখার পরামর্শও দেন তিনি।
উল্লেখ্য, গত কিছুদিন ধরেই তাপমাত্রা ক্রমেই বাড়ছে। ৪ এপ্রিল দেশের ছয় জেলায় শুরু হয় মৃদু তাপপ্রবাহ। এরপর ঝড়-বৃষ্টিহীনতায় ক্রমেই তাপপ্রবাহের তীব্রতা বাড়ে, বিস্তৃত হতে থাকে আওতা। সর্বশেষ শুক্রবার তীব্র থেকে মৃদু তাপপ্রবাহ সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে।



রিলেটেড পোস্ট

মতামত দিন

error: Content is protected !!