আকবর হোসেন, তালা: তালায় পুলিশ পরিচয়ে জালালপুর ইউনিয়নে কানাইদিয়া গ্রামে পরিতোষ অধিকারীর পুত্র বাসুদেব অধিকারী(৫৫) মিষ্টির দোকানদার এর নিকট হতে ফোনের মাধ্যমে চাদাবাজির চেষ্টা করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এলাকাবাসী জানার পরে মোবাইল ফোন বন্ধ। পুলিশ পরিচয়দানকারীর ফোন নং ০১৭১৩-৫৯৯৪৬৬। নৈপথ্যে কানাইদিয়া ইউপি মেম্বর কালিদাস অধিকারী।ঘটনার বিবরনে জানা গেছে,মিষ্টির দোকানদার ভুক্তভোগী বাসুদেব অধিকারী বলেন,গত ২৯জুলাই সকাল ১১.৩০ ঘটিকার দিকে এলাকার ইউপি মেম্বর কালিদাস অধিকারী আমার দোকানে নাস্তা খেতে আসে। এরপর দুপুর পৌনে একটার দিকে মেম্বর কালিদাস অধিকারী আমাকে ফোন করে বলেন,বাসুদেব তুমি এই নাম্বারে কথা বল। আমি কারন জিজ্ঞাসা করলে মেম্বর বলেন,তুমি কোন অপরাধ করেছ তোমার নামে মামলা আছে। আমি ভয়ে মেম্বরকে বলি আপনি কথা বলেন। মেম্বর তখন আমাকে বলে মোবাইল নাম্বার দিচ্ছি তুমি কথা বল। তিনি আমাকে ০১৭১৩-৫৯৯৪৬৬ এই নাম্বারটি দেন। আমি এই নাম্বারে কথা বললে তিনি বলেন,আমি মাহবুব দারোগা। তোর নামে মামলা আছে। তোমাকে ধরে নিয়ে যাব। এখন তুমি কি করতে চাও। আমি বললাম আপনি আমার মিষ্টির দোকানে আসেন। তিনি বলেন,আমি তোকে ধরবনা যদি ৪হাজার টাকা দিস। আমি তাকে আমার দোকানে এসে টাকা নিতে বললে তিনি বিকাশ নাম্বারে টাকা পাঠাতে বলেন। আমার কয়েক মিনিট টাকা পাঠাতে দেরী হচ্ছে বিধায় তিনি আমাকে অকথ্য ভাষায় গালীগালাজ করেন। নিকটে বিকাশের দোকান নাই বললে, তিনি সামনে বাজারে আছে বলে জানায় এবং ফোন না কেটে বিকাশে টাকা দিতে বলেন। বিষয়টি আমি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এম মফিদুল হক লিটুকে জানাই। তিনি আমাকে টাকা না দেয়ার জন্য বলেন। বাসুদেব অধিকারী আরও বলেন,গত বৎসর এসএসসি পরীক্ষার সময় আমার স্ত্রীকে পুলিশ থানায় ধরে নিয়ে যায়,আমি বিষয়টি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে জানালে তিনি আমার স্ত্রীকে থানা থেকে ছাড়িয়ে আনেন। এই সময় একই এলাকার সুনীল দত্তের ছেলে কমল দত্তের কাছে ৫হাজার টাকা দেওয়ার জন্য মেম্বর কালিদাস অধিকারী বলেন। আমার স্ত্রীকে চেয়ারম্যান সাহেব থানা থেকে ছাড়িয়ে আনার পরেও বিভিন্নভাবে পুলিশের ভয় দেখিয়ে ৫হাজার টাকা কমল দত্তের কাছে দেয়।
বিষয়টি জানাজানি হলে স্থানীয় ইউপি মেম্বার কালিদাস অধিকারী বলেন,মনে হয় ভুয়া কোন ব্যক্তি। তোমার এ বিষয়ে কারো সাথে কিছু বলার দরকার নাই। এলাকাবাসি এ প্রতিবেদকে বলেন,যদি পুলিশ ভুয়া হবে তবে মেম্বর কালিদাস অধিকারী তার মোবাইল নাম্বার কোথা থেকে পেল। তিনি একজন মেম্বর হয়ে নিজে না এসে মোবাইলে তার সাথে কথা বলতে বললো কেন? তাহলে কি মেম্বর কালিদাস এর সাথে জড়িত? বিষয়টি সঠিক তদন্ত করলে কে দোষী তা বের হয়ে আসবে। এলাকাবাসির দাবী এভাবে সহজ সরল মানুষকে জিম্মি করে টাকা আদায় বন্ধ হওয়ার জন্য এবং এর আসল অপরাধীকে খুজে বের করে দ্রুত আইনের আওতায় এনে কঠিন শাস্তিমুলক ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য তালা থানা অফিসার্স ইনচার্জ,তালা উপজেলা নির্বাহী অফিসার,পুলিশ সুপারসহ জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।
এ বিষয়ে মেম্বর কালিদাস অধিকারী বলেন,আমি বাসুদেব এর দোকান হতে নাস্তা করে খুলনায় আসার সময় স্যানিটারী ইন্সেপেক্ট মাহবুব নামে একজন ফোন করে বলেন,আপনার এলাকার বাসুদেব মিষ্টির দোকানদারকে চেনেন? আমি বললাম চিনি। তিনি আমার কাছে বাসুদেব দোকানদারের মোবাইল নাম্বার চায়। আমি তখন বাসুদেব এর মোবাইল নাম্বার তাকে দেই। আপনি কেন বাসুদেব এর কাছে ফোনকরে ইন্সেপেক্টর মাহবুব এর কাছে ফোন করতে বলেনএমন প্রশ্নের জবাবে মেম্বর বলেন, মাহবুব বারবার ফোন করে তাকে না পাইলে আমার আবার ফোন করলে আমি বাসুদেবকে মাহবুব এর নাম্বারে ফোন করতে বলি। গত বৎসর আপনি সুনীল দত্তের ছেলে কমল দত্তের কাছে ৫হাজার টাকা দিতে বলেছিলেন কেন- এই প্রশ্নের জবাবে মেম্বর কালিদাস বলেন, আমি গত বৎসরের কথা কিছুই জানিনা ।
এ বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যন এম মফিদুল হক লিটু বলেন,আমি বিষয়টি শোনার পরে কাউকে টাকা না দেওয়ার জন্য বাসুদেবকে বলি। গত বৎসরের বিষয়ে ৫ হাজার টাকা দিয়েছিলো। তবে কালিদাস মেম্বর এর সাথে জড়িত আছে কিনা তা আমি জানিনা।
তালায় পুলিশ পরিচয়ে চাঁদাবাজীর চেষ্টা
পূর্ববর্তী পোস্ট