প্রতারণা করে ১২ লক্ষ টাকা নিয়া লাপাত্তা শিবির ক্যাডার মফিজুল

কর্তৃক Ayub hossaen Rana
০ কমেন্ট 94 ভিউস

# অপরাধ ঢাকতে এনআইডি কার্ডের নাম মফিজুল ইসলাম বাদ দিয়ে পলাশ মাহমুদ নামে জন্মসনদ তৈরী করেছে।

  • “ছাত্রজীবনে প্রতাপনগর আবু বক্কর সিনিয়র মাদ্রাসায় ক্লাস সেভেন পর্যন্ত, ২০০০ সাল থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত কয়রার কালনা আমিনিয়া ফাজিল মাদ্রাসায় দাখিল পর্যন্ত, ২০০৩ সাল থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত কয়রা কপোতাক্ষ কলেজ এবং সর্বশেষ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখাকালে ছাত্র শিবিরের রাজনীতির নেতৃত্বে ছিল মফিজুল ইসলাম”

নিজস্ব প্রতিবেদক: দক্ষিণ খুলনার আতঙ্ক সৃষ্টিকারী ধুর্ধর্ষ শিবির ক্যাডার আশাশুনির গোকুলনগরের মফিজুল ইসলাম ওরফে পলাশ মাহমুদ এখন লাপাত্তা। বিভিন্ন সময় এলাকার বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে কখনো জমি বিক্রয় আবার কখনো জমি বন্ধকের নামে এসব টাকা আত্মসাৎ করেছেন তিনি। কারো সারাজীবনের পরিশ্রম লব্ধ সঞ্চিত টাকা, কারো বা চড়া সুদে নেওয়া টাকা আবার কারো গরু বিক্রির টাকা মফিজুলের খপ্পরে পড়ে খুইয়েছেন গোকুলনগরের একাধিক পরিবার। শিবির ক্যাডার মফিজুল ওরফে পলাশ মাহমুদের প্রতারণায় সর্বস্ব খোয়ানো এসব পরিবার এখন চরম অভাব অনটনে দিনাতিপাত করছেন।
সুত্রে প্রকাশ, আশাশুনি উপজেলার গোকুলনগরের মৃত মোহাম্মদ আলী গাজীর পুত্র মফিজুল ইসলামের শিক্ষার হাতেখড়ি প্রতাপনগর আবু বক্কর সিদ্দিক মাদ্রাসায়। পরে কালনা আমিনিয়া মাদ্রাসা, কয়রা কপোতাক্ষ কলেজ এবং সর্বশেষ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করা কালীন ছাত্র শিবিরের সক্রিয় রাজনীতিতে যুক্ত হন। খুলনা ও ঢাকা সহ বিভিন্ন জায়গায় সহিংসতায় নেতুত্ব দিয়ে ছাত্র শিবিরে নিজের জায়গা পাকাপোক্ত করেন তিনি। বিগত চারদলীয় জোট সরকারের আমলে কৌশলে সে এলাকায় প্রভাব পতিপত্তি গড়ে তোলে। তৎপর ২০০৫-২০০৬ সাল থেকে শুরু করে বিভিন্ন সময় এলাকার একাধিক মানুষের কাছে কখনো জমি বিক্রয় আবার কখনো জমি বন্ধকের নামে হাতিয়ে নিয়েছেন তিনি। যাদের নিকট থেকে জমি বিক্রয় বা বন্ধকের নামে টাকা নিয়েছেন তাদের কাউকে জমি লিখে দেন নি বা বন্ধক বাবদ জমি হস্তান্তর করেন নি। উপরন্তু ১২ লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নিয়ে এখন তিনি লাপাত্তা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০০৫ সালে গোকুলনগরের মৃত: মোবারক গাজীর পুত্র আজাদুল গাজীর সাথে ১০ কাঠা জমি ২ লক্ষ টাকায় বিক্রয়ের চুক্তি হয়। চুক্তি মোতাবেক আজাদুলের কাছ থেকে অগ্রিম ৮৫ হাজার টাকা গ্রহণ করেন তিনি। শর্ত থাকে বাকি ১ লক্ষ ১৫ হাজার টাকা নিয়ে জমি রেজিষ্ট্রি করে দিবেন। কিন্তু অদ্যবদি জমি রেজিষ্ট্রি করে দেন নি। এছাড়াও মৃত: ভাটাই হাজীর পুত্র সামছুর গাজীর সাথে ১ লক্ষ টাকায় ৫ কাঠা জমি বিক্রয়ের চুক্তি হয়। সেসময় সামছুরের কাছ থেকে অগ্রীম ৪০ হাজার টাকা গ্রহণ করেন তিনি। এছাড়া ১ বিঘা জমি বন্ধকের কথা বলে শহর আলী গাজীর পুত্র মতি গাজীর কাছ থেকে ৪০ হাজার, মৃত অমেদ আলী মোল্যার পুত্র আঃ রাজ্জাক এর কাছ থেকে ১ বিঘা জমি বন্ধক দেওয়ার কথা বলে ৩৫ হাজার, শহর আলী সরদারের কন্যা জোহরা খাতুনের নিকট থেকে ৪০ হাজার, ১০ কাঠা জমি দেওয়ার কথা বলে মুনসুর সানার কন্যা জামিলা খাতুনের কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা গ্রহণ করেন।
এছাড়া শিবির ক্যাডার মফিজুল ওরফে পলাশ মাহমুদ তার নিজ বোন চৌকুনি কয়রার মৃত: ফয়জুল গাজীর স্ত্রী শুক্কুল বিবির কাছ থেকে ৩ বিঘা জমি দেওয়ার কথা বলে ২০১৮ সালে ৩ লক্ষ টাকা নিয়েছেন। শিবির ক্যাডার মফিজুল তার ভাই রবিউলের জনৈক মামা শশুরের কাছ থেকে ২০১৯ সালে জমি বন্ধক দেওয়ার শর্তে ২ লক্ষ ৯০ হাজার টাকা গ্রহণ করেন। কিন্তু উপরোক্ত ব্যক্তিদের কাউকেই শর্ত মোতাবেক জমি লিখে দেন নি বা বন্ধকী বাবদ জমি হস্তান্তর না করে সমুদয় টাকা হাতিয়ে নিয়ে এলাকা ছাড়েন তিনি। দুর্ধর্ষ শিবির ক্যাডার মফিজুল ওরফে পলাশ মাহমুদের প্রতারণায় সর্বস্ব খোয়ানো এসব পরিবার অনেক বছর অতিবাহিত হলেও মফিজুল ও তার ভাইদের বারবার তাগাদা দিয়েও জমি নিতে পারেন নি বা তাদের কাছ থেকে নেওয়া টাকা ফেরত পান নি। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি সহ গন্যমান্য ব্যক্তিদের কাছে নালিশ দিয়েও শিবির ক্যাডার মফিজুল এলাকায় না থাকায় তারাও কোন বিহীত ব্যবস্থা করতে পারেন নি। ফলে সবকিছু খুইয়ে মানবেতর জীবন যাপন করতে হচ্ছে তাদের।
শিবির ক্যাডার মফিজুল ও ভাইদের প্রতারণার কাহিনী এখানেই শেষ নয়। ২০১৮ সালে মফিজুলের ভাই আমিরুল ৬০ হাজার টাকার বিনিময়ে মৃত: বক্স গাজীর পুত্র আবুল হোসেনের কাছে ১০ শতক জমি রেজিঃ কোবলা মূলে বিক্রয় করেন। কিন্তু আবুল হোসেন কে উক্ত জমির স্বত্ত্বদখল হস্তান্তর না করে তার অপর ভাই রবিউল উক্ত জমি জবর দখল করে আছেন। জমির দখল চাইলে আবুল হোসেনের উপর চড়াও হন তারা। জমি চাইলে বিভিন্ন ভয়ভীতি ও খুন জখমের হুমকী প্রদর্শন করেন। ফলে সর্বস্ব হারানো এসব পরিবার এখন শিবির ক্যাডার মফিজুল ওরফে পলাশ মাহমুদের ভয়ে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।
দুর্ধর্ষ শিবির ক্যাডার মফিজুল ওরফে পলাশ মাহমুদ ও ভাইদের হাত থেকে রেহাই পেতে এবং মফিজুলকে দেওয়া টাকা ফেরত পেতে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ভুক্তভোগীরা।



রিলেটেড পোস্ট

মতামত দিন

error: Content is protected !!