সাতক্ষীরা সুন্দরবন রেঞ্জ : রাজস্ব আদায় ১ লাখ, ঘুষ আদায় ২০ লাখ

কর্তৃক Ahadur Rahman Jony
০ কমেন্ট 297 ভিউস

সিরাজুল ইসলাম, শ্যামনগর: সম্প্রতি ১লা জুলাই থেকে সুন্দরবনে বনজীবিদের প্রবেশাধিকারে বিএলসি নবায়ন শুরু হয়ে তা চলমান রয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় পশ্চিম সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জের ৪টি স্টেশনে গতকাল পর্যন্ত ৩ হাজার ২শ’ বিএলসি নবায়ন হয়েছে। তাতে দেখা যায়, ১ লক্ষ টাকা সরকারি রাজস্ব আদায় হয়েছে আর অসাধু বনরক্ষীর পকেটে ঢুকেছে ২০ লক্ষ টাকা ঘুষ। প্রত্যক্ষদর্শী জেলে, বাউয়ালী এবং সাধারণ মানুষের কাছে পরিস্কারভাবে জানা গেছে, প্রতি বিএলসি নবায়নে সরকারি রাজস্ব নৌকা প্রতি ৬-২৫ টাকা পর্যন্ত কিন্তু, পশ্চিম সুন্দরবনের দূর্নীতিবাজ এই ৪ স্টেশন কর্মকর্তা যথাক্রমে কৈখালী স্টেশন কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম, কদমতলা স্টেশন কর্মকর্তা নুরুল আলম, বুড়িগোয়ালীনি স্টেশন কর্মকর্তা আক্তারুজ্জামান, ও কোবাতক স্টেশন কর্মকর্তা বেলাল হোসেন। তারা প্রতি বিএলসিতে ৬শ থেকে ১ হাজার টাকা ক্ষেত্র বিশেষ ২ হাজার টাকা পর্যন্ত ঘুষ আদায় করেছে, যা গতকাল পর্যন্ত জানা যায়, ৪ স্টেশনে সারকারি রাজস্ব দাড়িয়েছে লক্ষাধিক টাকা। আর নিরীহ বনজীবিদের কাছ থেকে অসাধু বনকর্তারা নিজেরে আখের গোছাতে ঘুষ আদায় করেছে ২০ লক্ষাধিক টাকা। গাবুরার আনছার আলী, মোন্তেজ ঢালী, মোবারেক মোল্যা, দাতিনাখালীর রজব আলী, কওসার গাজী ও আমিনুর রহমান জানান, সুন্দরবনে বন দস্যুর তান্ডবে প্রায় ১ যুগ নাজেহাল হয়েছে বনজীবিরা। কিন্তু, জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকারে যুগোপযগী পদক্ষেপের কারনে আজ বনজীবিরা বনদস্যুর হাত থেকে পুরোপুরি মুক্ত। মুক্ত হতে পারছে না বন বিভাগের অসাধু বনরক্ষী হাত থেকে। তারা আরও জানান, সেই বৃটিশ শাসনামল থেকে অদ্যাবধি এই অসাধু কর্মকর্তাদের বনজীবিদের কাছ থেকে ঘুস বানিজ্য ও নানা মুখী দূর্নীনি, অপকর্ম চলেই আসছে। যা কোন সরকারই বন্ধ করতে পারেনি। বিএলসি নবায়নে ঘুষ বানিজ্যের বিষয় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক দায়িত্বশীল বনকর্মকর্তা এই প্রতিবেদককে জানান, বিএলসি নবায়নে ২০ লাখ টাকা ঘুস বানিজ্য আসলেই সত্য। কিন্তু, এই টাকার ভাগ বাটোয়ারা বিভিন্ন মহলে বন্টন হয়ে যাওয়ায় দায়িত্ব স্টেশন কর্মকর্তাদের ভাগে সীমিত কিছু অর্থ থাকে। পশ্চিম সুন্দরবনে বনকর্মকর্তাদের বিএলসি নবায়নে সীমাহিন ঘুন বানজ্যের বিষয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ পাওয়ায় বিষয়টি ধামা চাপা দিতে কদমতলা স্টেশন কর্মকর্তা নুরুল আলম ও বুড়িগোয়ালীনি স্টেশন কর্মকর্তা আক্তারুজ্জামান খামের ভিতরে টাকা নিয়ে বিষয়টি ম্যানেজ করার জন্য শ্যামনগরে বিভন্ন সাংবাদিকদের দারে দারে ঘুরছে। এরিপোর্ট লেখা পর্যন্ত শ্যামনগর উপজেলার বেশ কয়েকচন সাংবাদিক জানিয়েছেন, নুরুল আলম ও আক্তারুজ্জামানের ওই টাকা এবং খাম কেউ গ্রহণ করেনি। আবার অনেক সাংবাদিক খামের ভিতরের টাকার পরিমান সম্মানজনক না হওয়ায় তা ফেরত দিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে পুরো শ্যামনগর এলাকায় ব্যপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগের বিষয়টি স্থানীয় সংসদ সদস্য এসএম জগলুল হায়দারকে জানানো হলে তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, বিএলসি নবায়নে বনকর্মকর্তাদের ঘুষ বানিজ্যের বিষয়টি আমিও শুনেছি। বিষয়টি অতি দ্রুত বন মন্ত্রনালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রীকে অবহিত করা হবে। তবে অভিযোগের বিষয়ে ৪ স্টেশন কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা কোন প্রকার মুখ খুলতে রাজি না হয়ে সব বিষয় এড়িয়ে যান। এব্যপারে ডিএফও সুন্দরবন, বশিরুল আল মামুন বলেন, অভিযোগ আপনার মুখে শুনলাম। যাচাই করা হচ্ছে। প্রমান হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।



রিলেটেড পোস্ট

মতামত দিন

error: Content is protected !!