নিজস্ব প্রতিবেদক: জমিজমা সংক্রান্ত পূর্ব বিরোধের জেরে সন্ত্রাসী হামলায় এক অন্তঃসত্তার(২৩) গর্ভপাত হয়েছে। এঘটনায় আহত হয়েছেন আরও দুই জন। রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত অন্তঃসত্তার অবস্থা আশংকাজনক ভাবে অবনতি হচ্ছে। গত ১৩ই অগাস্ট বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় আশাশুনি উপজেলার কাকবাসিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
এজাহার সুত্রে জানা যায়, জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে গত ১৩অগাস্ট বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় চাচা সালাম গাজীর নেতৃত্বে রাসেল গাজীর সৎভাই মামুন গাজী (৩০) ও তার স্ত্রী সালমা খাতুন (২৬), রুবেল গাজী(২৫), সৎ বোন পলি ও তার স্বামী আশরাফুল গাজী (৩৮) ও সৎ মা শাহানারা খাতুন(৫০) রাসেল গাজীর বাড়িতে হামলা করে। এসময় তারা রাসেল বাড়ি ভাংচুর করতে থাকে। ভাংচুরের প্রতিবাদ করলে সালাম, মামুন, রুবেল, পলি, সালমা ও শাহানারা খাতুনরা তাদের ওপর মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করতে থাকে। এ পর্যায়ে হামলাকারীদের মারধোরে রাসেল গাজীর পাঁচ মাসের সন্তান সম্ভাবা স্ত্রী সুমাইয়া খাতুন (২৩) গুরুতর আহত হন। মূমুর্ষ অবস্থায় গত শুক্রবার সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে তাকে ভর্তি করা হয়। রবিবার রাতে অবস্থার অবনতি হলে সুমাইয়া খাতুন মৃত সন্তান প্রসব করেন। এখন তার অবস্থার ক্রমাবনতি হচ্ছে।
সুমাইয়া খাতুনের স্বামী রাসেল গাজী জানান, জমিজমা সংক্রান্ত পূর্ব বিরোধের জেরে শুক্রবার সকালে আমার সৎ ভাই-বোন ও তাদের স্ত্রী ও বোনাইরা আমার বাড়ীতে হামলা করে। হামলার পুরো নেতৃত্ব দেয় আমার চাচা সালাম গাজী। এসময় তারা গালিগালাজ করতে থাকে। সেই সাথে আমার বসত ঘর ভাংচুর করে। আমি এর প্রতিবাদ করলে আমার ও আমার স্ত্রীর উপর তারা হামলা করে। এ সময় রুবেল আমার স্ত্রীর মাথায় লোহার রড দিয়ে আঘাত করে। আঘাতের ফলে আমার স্ত্রী মাটিতে লুুটিয়ে পড়ে। এ সময় মামুন ও তার মা শাহানারা খাতুন আমার স্ত্রীর পেটে সজোরে লাথিসহ কিলঘুষি মারতে থাকে। এক পর্যায়ে আমার স্ত্রী সুমাইয়া খাতুনের প্রসব বেদনা এবং সেই সাথে রক্তক্ষরণ শুরু হয়। ওই সময়ে আশরাফুল আমার স্ত্রীর কাপড় টেনে ছিঁড়ে শ্লীলতাহানি ঘটায়। সেই সুযোগে সালমা আমার স্ত্রীর গলায় থাকা আট আনা ওজনের স্বর্ণের চেইন ছিড়ে নেয়। এক পর্যায়ে আমি চিৎকার করলে এলাকাবাসী আমাদের উদ্ধার করে। আমার স্ত্রীর অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় ওই সময় তাকে নিয়ে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করাই দুপুর সড়ে ১২টায় সময়। অবস্থার অবনতি হলে রবিবার মধ্যরাতে তার গর্ভপাত হয়। উল্লেখ্য, আমার স্ত্রী পাঁচ মাসের গর্ভবতী ছিল। তারা পরিকল্পিত ভাবে আমার অনাগত সন্তানকে হত্যা করেছে। আমার স্ত্রীরও অবস্থা ভালনয়। সে জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। স্ত্রীকে নিয়ে হাসপাতালে ব্যস্ততার মধ্যে খবর পেলাম শনিবার বিকালে হামলাকারিরা আমার বাড়িঘর মাটির সাথে মিশিয়ে দিয়েছে। আর তারা হুমকি দিয়ে জানিয়েছে আমি যদি বাড়ি যাই তাহলে আমাকেও মেরে পুতে দিবে। এখন আমার সন্তান হারিয়েছি। স্ত্রীর অবস্থাও ভালনা। সব মিলিয়ে আমি নিরাপত্তা হীনতায় ভুগছি। এঘটনায় আমি বাদি হয়ে আশাশুনি থানায় একটি এজাহার দায়ের করেছি।
এ বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই জাহাঙ্গীর জানান, আসামীদের ধরতে অভিযান চলছে। আসামীরা পলাতক।
আশাশুনিতে পূর্বশত্রুতার জেরে সন্ত্রাসী হামলায় অন্তঃসত্তার গর্ভপাত, আহত তিন
পূর্ববর্তী পোস্ট