শেখ ইমরান, তালা থেকে: তালা উপজেলার পূর্বে খলিলনগর ইউনিয়ন পরিষদ । আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে এই ইউনিয়নেও নির্বাচনী হাওয়া বইতে শুরু করেছে। হাটে/বাজারে, চায়ের দোকানে, মাঠে-ঘাটে সম্ভাব্য প্রার্থীদের নিয়ে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। সেই সাথে সম্ভাব্য প্রার্থীরাও এলাকার প্রতিটি গ্রাম পর্যায়ে গণসংযোগ, মটরসাইকেল শোভাযাত্র সহকারে শো ডাউন বাড়িয়েছেন, লবিং শুরু করেছেন দলীয় মনোনয়ন প্রাত্যাশায়।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যাই, নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা না হলেও ইতোমধ্যে খলিলনগর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী সহ সকল প্রার্থীরা অগ্রিম ব্যানার ফেস্টুন ও প্যানা বোর্ড টানিয়েছেন। ভোটারদের দিচ্ছেন বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি।
আওয়ামীলীগ থেকে আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অংশ নিতে চান বর্তমান চেয়ারম্যান আজিজুর ইসলাম রাজু। সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের উপ-প্রচার সম্পাদক প্রভাষক প্রণব ঘোষ বাবলু, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা দেবব্রত রায় দেব, জাতীয় পার্টি থেকে সাংবাদিক এস.এম জাহাঙ্গীর হাসান ও বিএনপি থেকে শেখ ফারুক হোসেন (রানা)।
বর্তমান চেয়ারম্যান আজিজুল ইসলাম রাজু বলেন, আমি ২০১৬ সালের ইউপি নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে বিজয় লাভ করে অদ্যবদি চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িক্ত পালন করছি। এক সময় এই ইউনিয়ন পরিষদে আসতে আসতে মানুষের জুতার তলা ক্ষয় হয়ে যেত। এখন ইউনিয়ন পরিষদে লোক খুজে পাওয়া যায় না, কারন করো কাজ পেইন্ডিং থাকে না, আসলেই কাজ শেষ। কোন প্রকার হয়রানির সুযোগ নাই, টাকা লেনদেনের সুযোগ নাই, টাকার বিনিময়ে আমার জানামতে আমি কোন কাজ করিনাই। যদি কোন ইউপি সদস্য টাকা গ্রহনের কথা শুনি সেই কাজ আমিতো করিইনা বরং তার বিরুদ্ধে একসানে যায়। সত্যকে আকড়ে ধরে আছি । জন্মলগ্নে থেকে আওয়ামীলীগ করি কিন্তু দূভার্গ্য আওয়ামীলীগের টিকিট আমাদের ভাগ্যে নেই। ১৯৯৩ সালে তালা সরকারি কলেজে ছাত্রদল/ছাত্রলীগ মারামারিতে তালা থানার ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নিহত হওয়ার ঘটনাই ১৭ মাস ২৩ দিন জেল খেটেছি। ছাত্র রাজনীতি থেকে অদ্যবদি দালালের খাতায় নাম উঠিনাই আমার । আমি কখনো স্বজন প্রীতি, দূর্ণীতি, পক্ষপাতিত্বে বিচার , টাকা আত্বস্বার্থ, অর্থ কেলেঙ্কারি, ঘর দেওয়ার কেলেঙ্কারি, পুলিশি নির্যাতন করিনা, আজও করিনাই, একটি প্রামাণ দেখেতে পারলে নির্বাচন করবো না। এই আত্ববিশ^াস নিয়ে জনগনের পাশে দাঁড়ায়, কথা বলি, আশাকরি জনগণ আমাকে বিপুল ভোটে নির্বাচিত করবে।
সাবেক চেয়ারম্যান প্রভাষক প্রণব ঘোষ বাবলু জানান, আমি বিগত দুইবার খলিলনগর ইউপি চেয়ারম্যান ছিলাম । আমার সময় আমার ইউনিয়নের রাস্তাঘাট, স্কুলভবন, বাজারের চাঁদনী, সাইক্লোলন সেন্টর,তফসিল আফিস, ইউনিয়ন পরিষদের ভবন সহ সার্বিক উন্নয়নে নিরঅলস প্ররিশ্রম করেছি। আমি আগত নির্বাচনে নৌকা প্রতিক নিয়ে নির্বাচন করতে চাই। বর্তমান চেয়ারম্যানের ব্যার্থতার করনে উন্নয়ন মুলক কর্মকান্ড ব্যাথিত হচ্ছে। আমি যদি আগামী নির্বাচনে নির্বাচিত হতে পারি তাহলে খলিলনগর ইউনিয়নের আমার অসমপ্ত কাজ সমাপ্ত করার চেষ্টা করবো। আইন শৃঙ্খলা, রাস্তাঘাট, কালখাট/ব্রিজ, নির্মাণ করার চেষ্টা করবো। উইনিয়ন বাসীকে একটি কথাই বলতে চাই উন্নয়ন কর্মকান্ড, জনগনের নিরাপর্তায় নিজেকে বিলিয়ে দিবো।
খলিলনগর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি, বিএল কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক নেতা ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচন পরিচালনা ও পর্যবেক্ষণ উপ-কমিটির সদস্য দেবব্রত রায় দেব জানান, আমি নির্বাচন করতে চাই ইউনিয়নকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য। আমরা দেখেছি দীর্ঘকাল ধরে আমাদের ইউনিয়ন খুববেশি উন্নয়ন হয়নি। এই ইউনিয়ন তিন থানার বর্ডার। এখানে বিভিন্ন সমস্যা আছে। সাধারণ মানুষকে অনেক অনেক আশ্বাস দিয়েছে কিন্তু বাস্তবে তার ফল পাইনি। তাই আমি মনে করছি ,আমি যদি নির্বাচিত হতে পারি তাহলে এই ইউনিয়নের মানুষের জন্য ভাল কিছু করতে পারবো এবং তাদের চাওয়া-পাওয়া পুরণ করতে পারবো।
তালা উপজেলা জাতীয় পার্টির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক এস.এম জাহাঙ্গীর হাসান বলেন, খলিলনগর ইউনিয়ন জাতীয় পার্টির দুর্গ। তালা উপজেলা জাতীয় পার্টির প্রায়ত সাবেক সভাপতি জি.এম আব্দুল আলী এই ইউনিয়নে বারবার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তার উন্নয়নের ধারাকে অব্যহত রাখতে (লাঙ্গল) প্রতিক নিয়ে নিবার্চন করবো। আমি আশা করি ইউনিয়ন বাসী আমাকে বিপুল ভোটে নির্বাচিত করবে ইনশাল্লাহ।
সাতক্ষীরা জেলা যুবদলের সহ সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক শেখ ফারুক হোসেন বলেন, আমি বি.এন.পি থেকে নির্বাচন করতে চাই। দল আমাকে মনোনয়ন দিলে আমি নির্বাচন করবো। আমি ইউনিয়ন বাসীকে সেবা করার লক্ষে কাজ করে চলেছি।
তালা উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা রাহুল রায় জানান, কেন্দ্রীয়ভাবে নির্বাচনী তফশীল ঘোষণা হলেই তালা উপজেলার সকল ইউপি নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু হবে। খলিলনগর ইউপি নির্বাচনে মোট ভোটার ২৬ হাজার ১১৯ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১৩ হাজার ৩৯৮ জন ও মহিলা ভোটার ১২ হাজার ৭২১ জন।