ন্যাশনাল ডেস্ক: করোনাকালে চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের জন্য পণ্য ও সেবা খাতের রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা ৪৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। ২০১৯-২০ অর্থবছরে রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। সেই হিসাবে রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা ৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার কমেছে।
বৃহস্পতিবার (১৬ জুলাই) ২০২০-২০২১ অর্থবছরের রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ঘোষণার লক্ষ্যে অনলাইন জুম প্লাটফর্মে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্যমন্ত্রী এ কথা জানান।
তিনি বলেন, করোনা পরিস্থিতির কারণে সদ্য বিদায়ী ২০১৯-২০ অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে রপ্তানি আয় কমেছে ২৫ দশমিক ২৮ শতাংশ। প্রবৃদ্ধি কমেছে ১৪ দশমিক ৮০ ভাগ। সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে ২০২০-২১ অর্থবছরের জন্য সেবা ও পণ্য খাত মিলিয়ে মোট ৪৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ১৯.৭৯ শতাংশ। এর মধ্য পণ্যখাতে ৪১ বিলিয়ন ডলার প্রবৃদ্ধি ২১.৭৫ শতাংশ ও সেবা খাতে ৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রবৃদ্ধি ৯.৪৬ শতাংশ।
টিপু মুনশি বলেন, যে রপ্তানি আয় নির্ধারণ করেছি সেটা আমরা অর্জন করতে পারব। আর গত অর্থবছরে (২০১৯-২০) ৫৪ বিলিয়ন ডলার রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে রপ্তানি আয় হয়েছে ৪০ দশমিক শূন্য ৬ বিলিয়ন ডলার।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ২০২০-২১ অর্থবছরের রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণের ক্ষেত্রে গত দুই বছরের রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা এবং এর বিপরীতে অর্জন হার ও প্রবৃদ্ধির হার বিবেচনায় নেয়া হয়েছে। বিশ্ব বাণিজ্যে কোভিড-১৯ এর নেতিবাচক প্রভাবের ফলে মার্চ, এপ্রিল ও মে মাসে পণ্য খাতে রপ্তানি আয় যথাক্রমে পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় ১৮.১৯ শতাংশ, ৮২.৮৫ শতাংশ ও ৬১.৮৭ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। তবে জুন মাসে ২.৫ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। যা থেকে অনুমান করা যায় সঠিক নীতি অনুসরণ ও সময়ানুগ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা গেলে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব।
গত অর্থবছরে (২০১৯-২০) রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিলো ৫৪ বিলিয়ন ডলার। পণ্য খাতে রপ্তানির টার্গেট সাড়ে ৪৫ বিলিয়ন এবং সার্ভিস সেক্টরে সাড়ে ৮ বিলিয়ন ডলার। উভয় ক্ষাতে রপ্তানি আয় হয়েছে ৪০ দশমিক শূন্য ৬ বিলিয়ন ডলার।
টিপু মুনশি বলেন, আশা করা যায় কোভিড-১৯ মহামারি ২০২০ এর শেষে কমে আসবে। পাশাপাশি বিশ্ব অর্থনীতি ২০২১ সালের মধ্যেই প্রবৃদ্ধির ধারায় ফিরে আসবে। ইউরোপ-আমেরিকার দেশসমূহে চলতি বছরের ৪র্থ কোয়াটারে তাদের চাহিদা উল্লম্ফন ঘটবে। ফলে রপ্তানিকারক দেশগুলোর সঙ্গে আমাদেরও রপ্তানি বাড়বে।
মন্ত্রী বলেন, তৈরি পোশাক খাতে বহুমুখীকরণ হবে এবং গ্লোবাল সাপ্লাই চেইনের সাম্ভব্য প্রতিক্রিয়া হিসেবে বাংলাদেশের বিনিয়োগ বাড়বে। আইটি খাতে দেশি বিদেশি বিনিয়োগ বাড়বে, ই-কমার্সের প্রসার ঘটবে এবং দেশের ব্যবসা বাণিজ্যে আইটির ব্যবহার বাড়ার ফলে আমাদের রপ্তানিও বাড়বে।
একই সঙ্গে বাংলাদেশের ইতিহাসে এ যাবৎকালের সর্বোচ্চ প্রবৃদ্ধি ১৯.৭৯ শতাংশ রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সকল ব্যবসায়ী উদ্যোগক্তা ও সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তাদের সহযোগিতা কামনা করেন বাণিজ্যমন্ত্রী।