হাবিবুর রহমান: জিরো থেকে শুরু করলেও দখলবাজি করে হিরো হয়েছে চরমপন্থী বাহিনীর শীর্ষ নেতা সিরাজুল। একের পর এক বিরোধপূর্ণ জমি কিনে গডফাদারদের সহযোগীতায় বনেছে আঙুল ফুলে কলাগাছ। তার দখলবাজী থেকে রেহায় পায়নি খোদ পুলিশের এক কনস্টেবল।
অনুসন্ধানে জানা যায়, এক সময়ে তালার সাধারণ মানুষের ঘুম হারাম করা চরমপন্থী সংগঠনের শীর্ষ নেতা ছিলো সিরাজুল। তালার ত্রাস বিপ্লবী কমিউনিস্ট পার্টি মৃণাল বাহিনীর সেকেন্ড ইন কমান্ড হিসেবে সে পরিচিত। ২০০৭ থেকে জরুরী অবস্থা জারী থাকায় পরবর্তী ২ বছর সিরাজুল পালিয়ে ভারতে ছিলো। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় এলে পিতার হাত ধরে জাতীয় পার্টিতে যোগ দেয় সে। কিন্তু সুবিধা করতে না পেরে এক সময় যোগ দেয় আওয়ামী লীগে। তারপর থেকে মূলত শুরু হয় তার উত্থান। একের পর এক জমি দখল করতে থাকে সে। গড়ে তোলে বিশেষায়িত বাহিনী। যে বাহিনীর কাজ হচ্ছে বিরোধপূর্ণ শরীকের জমি খুঁজে বের করা। সেখানে শালিষের নামে শরীকদের মধ্যে বিরোধ আরো চরম পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া হয়। পরিস্থিতি ঘোলাটে করতে দু’পক্ষ থেকে সুবিধা নিয়ে জমি পাইয়ে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়। তবে সে সুবিধা হলো জমির অংশ। শরীকের সেই জমির বেশ কিছুটা অংশ দেয়ার জন্য দু’পক্ষকেই প্রস্তাব দেয়া হয়। যে পক্ষ প্রস্তাব গ্রহণ করে তারা সে পক্ষের কাছ থেকে প্রথমে জমি লিখে নেয়। পরে শুরু করে দখলবাজি। জমির যত বৈধ কাগজ থাকুকনা কেন, এ গ্রুপটির কাছে সেসবের কোন দাম নেই। গায়ের জোরই শেষ কথা।
দখলবাজি করে অগাধ সম্পদের মালিক হয়েছে সিরাজুল। চরমপন্থা থেকে বের হয়ে আসার পর কপর্দকহীন সিরাজুলের মেহেন্দীগঞ্জের আলিশান বাড়িটি তৈরি করতে প্রায় ২ কোটি টাকার ওপর খরচ হয়েছে। অপরদিকে তালার মেলাবাজারে জালাল ডাক্তারের একটি বিরোধপূর্ণ জমি শালিষ করতে গিয়ে একই কায়দায় দখল নেয়। সেখানেও দেড় কোটি টাকা খরচ করে ৩তলা একটি বাড়ি আছে সিরাজুলের। এক কনস্টেবলও তালায় জমি কিনে একই ফাঁদে পড়ে নিঃস্ব হওয়ার উপক্রম হয়েছেন। একই অবস্থায় পতিত আছে তালার আরও দুই সাংবাদিক। অসংখ্য সাধারণ মানুষ তাদের অত্যাচারের কাহিনী বলতে পারেনা। দখলবাজির টাকায় কিনেছে ৫০ বিঘার উপর কৃষি জমি। বর্তমানে তার মোট সম্পদের পরিমান ২০ কোটি টাকারও বেশি। এ বিষয়ে সিরাজুল ঘেরে মাছ চাষ করে অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে জানালেও ঘের করার নেপথ্যে আছে জমি দখল। সিরাজুলদের প্রচন্ড রাজনৈতিক চাপের কাছে অসহায় খোদ প্রশাসন। ফলে গডফাদারের ছত্রছায়ায় থাকা সিরাজুলদের দৌরাত্ম দিনকে দিন বাড়ছেই।
সিরাজুলের গ্রুপে মোটেই সাধারণ কোন মানুষ নেই। এ গ্রুপে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মশিয়ার, গোলজার সহ আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি, বিএনপি, সাবেক চরমপন্থী সদস্য সহ বিভিন্ন সংগঠন ও সরকারি দপ্তরের স্থানীয় কর্মচারীও আছে। তেমনই একজন হলো নির্বাহী কর্মকর্তা কার্যালয়ে হিসাব সহকারী মনিরুজ্জামান মনির। সরকারি সম্পদ লুটপাট ও অবৈধ টাকার পাহাড় বানিয়ে নামে, বেনামে জায়গা জমি কিনে কোটিপতি হয়েছে সেও।
তালার চরমপন্থী নেতা সিরাজুল ২০ কোটি টাকার মালিক
পূর্ববর্তী পোস্ট