নিজস্ব প্রতিবেদক: সাতক্ষীরার তালায় কর্মিকে বেআইনি ভাবে বরখাস্তের অভিযোগে উত্তরণ পরিচালক সহ ৬জন কর্মকর্তার নামে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
সাতক্ষীরা বিজ্ঞ সহকারী জজ আদালতে (তালা) ভুক্তভোগী এনজিও কর্মকর্তা নিহার কান্তি মন্ডল বাদী হয়ে এ মামলাটি দায়ের করেন। মামলা নং (দেওয়ানী)-৫৪, তাং ৬/০৬/২০২১ইং.
মামলা আরজি সূত্রে জানাগেছে, বিগত ২০১৫ সালে নিজ পরিবারকে দেখভাল করার জন্য চুয়াডাঙ্গা জেলার জীবননগর আন্দুলবাড়িয়া শাখায় ব্র্যাক এর ব্রাঞ্চ ম্যানেজার হিসেবে চাকরি করতেন নিহার কান্তি মন্ডল। পরে অফিসিয়াল সুবিধা ও সেলারী বেশী হওয়ায় তালা এলাকার এনজিও উত্তরনের ব্রাঞ্চ ম্যানেজার (শুন্য পদে) পদে চাকরীর আবেদন করেন তিনি। পরে অনুষ্ঠিত ভাইবায় উত্তীর্ণ হলে ২১/০৫/২০১৫ ইং তারিখে উত্ত/তালা/১৩১৯/১৫.স্মারকে উত্তরণের পরিচালক শহিদুল ইসলাম তাকে নিয়োগ প্রদান করেন। নিয়োগ প্রাপ্তির পর নিয়োগ পত্রের যাবতীয় শর্তাদি প্রতিপালন করে চাকরী করে আসছিলেন নিহার কান্তি মন্ডল। চাকুরী করা কালিন উত্তরণ পরিচালক শহিদুল ইসলাম ও প্রোগ্রাম ম্যানেজার মোঃ আঃ কাইউম আজাদ যোগসাজশ করে কতিপয় কারণ উল্লেখ করে নিহার কান্তি মন্ডলকে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করেন এবং সে মোতাবেক নিহার মন্ডলকে চাকরী হতে সাময়িক অব্যহতি প্রদান করেন।
উত্তরণ কর্তৃক কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করায় ২০২০ সালের ৪ অক্টোবর কারণ দর্শানোর নোটিশের জবাব প্রদান করা হলেও প্রোগ্রাম ম্যানেজার মোঃ আঃ কাইউম আজাদ আবারও ২০২১সালের ০১এপ্রিল একটি চুড়ান্ত নোটিশ প্রদান করেন। চলতি এপ্রিল মাসের ১৫ তারিখের মধ্যে উক্ত নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়। উপায় না পেয়ে ভুক্তভোগী নিহার কান্তি মন্ডল ঐ চলতি মাসের ১৪ এপ্রিল নোটিশের জবাব প্রদান করেন। কিন্তু বিবাদী উত্তরণ পরিচালক শহিদুল ইসলাম ও প্রোগ্রাম ম্যানেজার মোঃ আঃ কাইউম আজাদ জবাব প্রাপ্তির পর কোন পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় ২৯ এপ্রিল-২১ উত্তরণের কাছে বাদীর পাওনা ১২,৩৬,৫৯৯ টাকা ও চাকরীর ছাড়পত্র এবং জামানতের চেক ফেরত চেয়ে লিখিত ভাবে আবেদন করেন নিহার মন্ডল। বিবাদী পক্ষ কোন পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় বাদী পুনরায় ১১ মে-২১ একটি আবেদন করলে উত্তরণ নিহার মন্ডলের সঞ্চয় জমা সুদ সহ ৬০,২৫০ টাকা বুঝিয়ে দিলেও অন্যান্য পাওনাদী ফেরত দেয়নি উত্তরণ কর্তৃপক্ষ। ভুক্তভোগী নিহার কান্তি মন্ডল আরও বলেন তাকে অহেতুক হয়রানী ও ক্ষতি করার জন্য চাকরিতে যোগদান করতে দেওয়া হচ্ছে না। এমনকি তার পাওনা টাকা, চুড়ান্ত ছাড়পত্র ও জামানতের চেক ফেরৎ দিচ্ছেন না উত্তরণ পরিচালক সহ অন্যান্যরা।
কান্না বিজড়িত কন্ঠে নিহার কান্তি মন্ডল সাতনদীকে বলেন, এনজিও সংস্থা উত্তরণের কর্মী ব্যবস্থাপনার (২০১৭)১৮.৩(খ) এর বিধান মতে কোন কর্মীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলে তার সংসার চালানোর জন্য অর্ধেক বেতন দেয়ার বিধান থাকলেও উত্তরণ থেকে কোন বেতন দেয়া হচ্ছে না তাকে। ফলে পরিবার নিয়ে করোনাকালীন সময়ে চরম মানবেতর জীবনযাপন করছে নিহার কান্তি মন্ডল।
নীতিমালা অনুযায়ী ৯০ দিনের বেশি কাউকে বরখাস্ত করে রাখা যাবেনা। কিন্তু বিবাদীগন ১সেপ্টেম্বর-২০ থেকে অদ্যবধি ম্যানেজার নিহার কান্তি মন্ডলকে বরখাস্ত করে রেখেছেন। তার কাছ থেকে ব্রাঞ্চের চার্জ বুঝে নিলেও তাকে ছাড়পত্র ও পাওনা পরিশোধ করছেন না এনজিও সংস্থা উত্তরণের পরিচালক শহিদুল ইসলাম সহ অফিস সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। উপায়ন্ত না পেয়ে ন্যায় বিচার চেয়ে উত্তরণের পরিচালক শহিদুল ইসলাম সহ ৬ জনের নাম উল্লেখ করে আদালতে মামলা করেছেন উত্তরণ এনজিও কর্মি নিহার কান্তি মন্ডল।
মামলা ও অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে উত্তরণ পরিচালক শহিদুল ইসলাম সাতনদীকে বলেন, আইনি প্রতিকার চেয়ে যে কেউ মামলা করতেই পারে। অভিযোগকারী নিহার কান্তি মন্ডল চাকরী করা কালীন সংস্থার প্রায় ২০লক্ষ টাকা নামে বেনামে লোন দিয়েছেন সে টাকার হদিস পাওয়া যাচ্ছেনা। নিহার এর মাধ্যমে দেয়া টাকার হিসাব বুঝে পেলেই তাকে ছাড়পত্র দেয়া হবে।