তদন্ত ছাড়াই হিসাব সহকারীকে বদলির তোড়জোড়
নিজস্ব প্রতিবেদক: তালা উপজেরা প্রকৌশলির কার্যালয়ে কর্মরত হিসাব সহকারী মোস্তাফিজুর রহমানকে মিডিয়ার একটি নামধারী চক্র নানাভাবে হয়রানি করছে। চক্রটি দ্বারা লাঞ্চিতও হয়েছেন তিনি।
তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, পেশায় ঠিকাদার ও সাংবাদিক এমন একজন ব্যক্তি উপজেলা প্রকৌশল অফিস থেকে প্রত্যয়নপত্র আনতে হিসাব সহকারী মোস্তাফিজুর রহমানের কাছে যায়। প্রত্যয়ন পত্র দেয়ার মালিক উপজেলা প্রকৌশলী হলেও মিডিয়ার ওই কর্মী হিসাব সহকারীর সঙ্গে বিবাদে জড়ায়। ওই মিডিয়াকর্মী তার সঙ্গে আরও কয়েকজনকে অর্ন্তভ‚ক্ত করে হিসাব সহকারীর বিরুদ্ধে মাঠে নামেন। চক্রটি অনলাইন চ্যানেল জি২৪, জনতার মিছিল, আলোকিত সাতক্ষীরা, খুলানঞ্চল, দৈনিক যশোর, দৈনিক সাতনদী, তালা নিউজ, জামালপুরনিউজ ডটকম, দি এডিটরস এ হিসাব সহকারী মোস্তাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে খবর প্রকাশ করে।
তার ছবিসহ ফলাও করে দূর্নীতির খবর প্রচার হলে সাতক্ষীরা শহর থেকে সাংবাদিক পরিচয়ে নলকুড়া গ্রামের জনৈক রেজাউল ইসলাম তালা প্রকৌশলী অফিসে গিয়ে মোস্তাফিজুরকে ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা দাবী করে। তারা কিছু টাকাও হাতিয়ে নেয় ভয়ভীতি দেখিয়ে।
এদিকে এ ঘটনার জের ধরে তালা ঠিকাদার কল্যান সমিতির সভাপতি কল্যান বসু সহ কয়েকজন মিডিয়াকর্মী তিনদফায় হিসাব সহকারী মোস্তাফিজুর রহমানকে নিয়ে দুই দফায় প্রকৌশলীর কার্যালয়ে এবং পরে কথিত প্রেসক্লাবে বসে। কথিত মিডিয়াকর্মীরা নানাভাবে হেনস্থা ও অপদস্ত করে মোস্তাফিজুর রহমানকে। তারা তাকে তুই-তোকারিসহ অকথ্য ভাষায় গালিাগালিও করে। তারা এখানেই থেমে থাকেনি। একটি দৈনিক সম্পাদকের নামে তারা ২০ হাজার টাকাও চাঁদা দাবী করেন। পরে সমিতির সভাপতি কল্যান বসু মধ্যস্ততা করে ১০ হাজার টাকায় রফা-দফা করে। গত মঙ্গলবার ১০ আগস্ট চাঁদার ৫ হাজার টাকা গ্রহণ করে চক্রটি। ঘটনাটি জানতে পেরে সাতক্ষীরা থেকে একজন দায়িত্বশীল মিডিয়াকর্মী তালা উপজেলা প্রকৌশলী অফিসে যান গত ১০ আগস্ট। এতেই থলের বেড়াল বেরিয়ে যায়। সম্পাদকের নামে চাঁদা চাওয়া এবং গ্রহণ করা চাঁদার টাকা ফেরৎ দিতে বাধ্য হয় চক্রটি। এসবই ঘটে প্রকৌশলীর কক্ষে।
এদিকে গ্রহণ করা চাঁদার টাকা ফেরৎ দেয়ার পর চক্রটি হিসাব সহকারীকে ১৫ দিনের মধ্যে অন্যত্র বদলি না হলে তার রুমে তালা মারা হুমকি দেয়। সংশ্লিষ্ট বিভাগও মিডিয়ায় খবর প্রকাশের জের ধরে হিসাব সহকারিকে সরানোর তোড়-জোড় শুরু করছে কোন প্রকার তদন্ত ছাড়াই।
অপরদিকে, ভীতসন্ত্রস্ত হিসাব সহকারি গত মঙ্গলবার ও বুধবার তালা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে গিয়ে নিরাপত্তা চাওয়ায় চক্রটি আরও বে-পরোয়া হয়ে পড়েছে। চক্রটির এক সদস্য ইলিয়াস হোসেন বুধবার তালা থানার সেকেন্ড অফিসারের রুমে বসে শাঁসিয়ে হিসাব সহকারিকে বলেন, ‘তুই এখানে কি করতে এসেছিস?’ পরবর্তীতে ঘটনটি তালা থানার অফিসার ইনচার্জকেও জানানো হয়।
এদিকে, গ্রহণ করা চাঁদার টাকা ফেরৎ দেয়ার বিষয়টি বুধবার জেলা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলীকে অবহিত করা হয়েছে।