নিজস্ব প্রতিবেদক: গত কয়েকদিনের বর্ষণে সাতক্ষীরা জেলা শহরের নিম্মাঞ্চল পানিতে তলিয়ে গেছে। অসংখ্য বাড়ি-ঘরেও পানি উঠেছে। হাজার হাজার বিঘা ফসলি জমি, মৎস্য ঘের ও পুকুর তলিয়ে গেছে। জেলা শহরের নিম্মাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় হাজার হাজার মানুষ চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছে। পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ করে অপরিকল্পিতভাবে মৎস্য ঘের করার কারনে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে জানান সাধারন জনগন।
বিশেষ করে শনিবার ভোর রাতের ভারী বর্ষনে সাতীরা পৌরসভার ৬,৭, ৮ ও ৯ নং ওয়ার্ডের অধিকাংশ এলাকা বসবাসের অনুপযোগি হয়ে পড়েছে।
জানা গেছে, সাতীরা পৌরসভার পলাশপোল, কামাননগর, বউ বাজার, কাটিয়া, লস্করপাড়া, সরকারি কলেজ রোড, পুরাতন সাতীরা, বদ্দিপুর কলোনী, মধুমলার ডাঙ্গি, ঘুটিরডাঙ্গি, সিটি কলেজ মোড়, সার্কিট হাউজ মোড়সহ বিভিন্ন এলাকায় রাস্তাঘাটে ও বশত বাড়িতে পানি জমেছে।
সাতক্ষীরা জেলা নাগরিক কমিটির যুগ্ন সদস্য সচিব আলী নূর খান বাবুল জানান, কামাননগর, ইটাগাছাা ও পলাশপোল এলাকার রজব আলী, সামছুর মাষ্টার, লিটন, রফুসহ কয়েক জন প্রভাবশালী ঘের মালিক পানি নিস্কাশনের পথ বন্ধ করে সেখানে চিংড়ি ঘের করায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ঘের মালিকরা পানিনিস্কাশনের কোন পথ রাখেননি। একটু বৃষ্টি হলেই এসব এলাকার বাড়ি-ঘরে হাটু পানি উঠছে। তাই মাছের ঘের কেটে পানি নিস্কাশনের ব্যবস্থা করা জরুরী হয়ে পড়েছে। তা না হলে এ এলাকার হাজার হাজার মানুষ স্থায়ী ভাবে পানিবন্দি হয়ে পড়বে।
তিনি আরো জানান, গত তিন বছর আগে সাতক্ষীরার তৎকালীন জেলা প্রশাসক তাদেরকে পানিনিষ্কাশনের পথ রেখে ঘের করার নির্দেশ দিলে তারা পানি নিষ্কাশনের পথ রাখবেন মর্মে লিখিত অঙ্গিকার করলেও সেটি আজও বাস্তবায়ন হয়নি। তিনি এ সময় ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, স্থানীয় পৌর কাউন্সিলর ছাড়া প্রশাসনের পক্ষ থেকে পানি বন্দী পরিবারগুলোর খোঁজ খবর নিতে কাউকে পাঠানো হয়নি।
একই চিত্র সাতক্ষীরা জেলা শহরের চারিপাশের নিম্মাঞ্চলের। অপকিল্পিত মৎস্য ঘের করে পানি নিস্কাশনের পথ বন্ধ করার কারণে জলবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসনের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকাবাসী।
এ ব্যাপারে সাতীরার পৌর মেয়র তাসকীন আহমেদ চিশতি জানান, ভারী বৃষ্টিপাতের কারনে এই মুহুর্তে সাতীরা পৌরসভার ৯টি এলাকায় পানি জমে আছে। শত শত বাড়িঘরে পানি উঠেছে। পৌরসভার চারিপাশে বিশেষ করে গদাই বিল ও বদ্দিপুর কলনীর পাশ্ববর্তী বিলে অপরিকল্পিত চিংড়ি ঘেরের কারনে পানি নিস্কাশন হচ্ছে না। আমরা বার বার এসব ঘের মালিকদের নোটি করেছি বেড়িবাঁধ সরিয়ে নেওয়ার জন্য। কিন্তু তারা কোন কথাই শুনতে চায়না। তারা এতাটাই প্রভাবশালী যে, পৌরসভার আদেশ তারা মানে না। বরং প্রভাব খাটিয়ে তারা বহাল তবিয়তে মাছের ঘের করছে। এ ব্যাপারে তিনি পৌরসভার সচেতন নাগরিকদের সহযোগিতা চাইলেন।
ভারি বর্ষণে সাতক্ষীরা শহরের নিম্মাঞ্চল প্লাবিত
পূর্ববর্তী পোস্ট