গাজী জিয়াউর রহমান, ভ্রাম্যমান প্রতিবেদক: শ্যামনগর উপকূলের জনপদে আইলা, আম্পান, বুলবুল, ফনি উপকূল অঞ্চলের সকল আবাসন সহ প্রাকৃতিক বিপর্যয় কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই নদী ভাঙ্গনের কবলে আবারো পড়েছে মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের সিংহড়তলী সহ ৬ টি গ্রামের সাধারণ জনগন। সরকারি বেসরকারি অনেক প্রচেষ্টায় উপকূলীয় বাঁধ স্থায়ীকরণের বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করলেও বাস্তবে তার ফলস্বরূপ কোন কিছুই হয়নি। এরই মধ্যে শুরু হয়েছে কালবৈশাখী ঝড়। উপকূলীয় বাঁধ রক্ষা করতে না পারলে আগামী দিনেই সমগ্র উপকূলীয় অঞ্চল আবারো প্রাকৃতিক দুর্যোগ ,নদী ভাঙ্গনে লবণ পানি ভেসে যেতে পারে। গৃহহীন হয়ে পড়েবে হাজার হাজার মানুষ । সাধারণ শ্রমজীবী ও হতদরিদ্র পরিবারের মানুষ এই অঞ্চল থেকে এলাকা ছেড়ে বাইরে অবস্থান করতে হবে। এ বিষয়ে মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কাশেম মোড়েল বলেন, দীর্ঘদিন পাউবো কর্মকর্তাদের মাপ জোক পরিকল্পনা চলছে কিন্তু এখনো পর্যন্ত কোন কাজই শুরু হয়নি। কিছু কিছু বেড়ী বাঁধে কাজ করতে গিয়ে জোড়োতালি দিয়ে কাজ শেষ করছে। আজ পর্যন্ত কোনো পরিকল্পনা নিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা কোন কাজই তো করেননি এবং সহজে কিছু জানাতেও চান না । কিন্তু দুঃখের বিষয় হলেও সত্য আমরা জনগণের দায়িত্ব নিয়ে এলাকায় কাজ করছি তাই স্বেচ্ছাশ্রম দিয়ে সবসময় উপকূলীয় বাঁধ সুরক্ষিত রাখার প্রাণপণ চেষ্টা করছি। ইউপি চেয়ারম্যান আরো বলেন, উপকূলীয় অঞ্চল প্রতিনিয়ত প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঘূর্ণিঝড়ে জলোচ্ছ্বাস নদী ভাঙ্গনে আমাদের সংগ্রাম করে টিকে থাকতে হয় ।যতদিন পর্যন্ত আমাদের বেড়েীবাধ সুরক্ষিত না হবে ততদিন আমাদের স্থায়ী কোনো পরিকল্পনা করলে তা স্থায়ী থাকবে না। যে কোন সময় লবণ পানিতে ভেসে যেতে পারে ।আমাদের দাবি সকল উন্নয়ন পরিকল্পনার মধ্যে উপকূলীয় বেড়িবাঁধ সুরক্ষিত রাখার পরিকল্পনাটি আগে করা দরকার। তিনি আরও তথ্য দিয়ে বলেন ২ ৮ মার্চ সকাল থেকেই বেড়েীবাঁধ ফাটল দেখা দেয় । তাৎক্ষণিক পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের জানালে তিনি ফলস্বরূপ কোনো উত্তর দেননি। এ বিষয়ে উপজেলা মিটিংয়ে একাধিকবার আলোচনা করা হয়েছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলেও সত্য যে প্রতিশ্রুতি গুলো উপজেলা প্রশাসন বা পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়ে ছিলেন ,সেগুলো বাস্তবায়ন আংশিক হতে না হতেই সিংহর তলী গ্রামের জগদীশ মন্ডল এর বাড়ির সামনে আবারো বেড়িবাঁধে ফাটল দেখা দেয়। সেখানে লক্ষ্য করছি যত দ্রুত সম্ভব ওয়াবদার ফাটল বন্ধ না করা হয় তাহলে ৬টি গ্রাম আবারো প্লাবিত হবে। ভেসে যাবে শতাধিক ঘরবাড়ি, কৃষি খামার, চিংড়িঘের, কাঁকড়ো হ্যচারী, গবাদিপশু, সুপেয় পানির পুকুর সহ কয়েক কোটি টাকার সম্পদ ক্ষতি হতে পারে বলে জানিয়েছেন এলাকা বাসী। শ্যামনগরের জলবায়ু পরিষদ উপকূলীয় রক্ষার দাবিতে দীর্ঘদিন স্থানীয় সরকারকে সম্পৃক্তকরণের সরকারের বিভিন্ন ক্যাম্পেইন চালিয়ে যাচ্ছে। এলাকাবাসীর দাবী উন্নয়ন পরিকল্পনার সাথে উপকূলীয় বেড়িবাঁধ সুরক্ষিত না হয়, তাহলে ভিতরে কোন পরিকল্পনায় স্থায়ী হবে না, বা লবণ পানিতে ভেসে যাবে সকল উন্নয়ন পরিকল্পনা। তাই যত দ্রুত সম্ভব অবদার নদী ভাঙ্গন রোধ করার জন্য সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাছে জোর দাবি জানান এলাকাবাসী।
মুন্সীগঞ্জ সিংহড়তলী ওয়াবদার রাস্তায় ভয়াবহ ফাটল ; আতঙ্কে এলাকাবাসী
পূর্ববর্তী পোস্ট