জাতীয় ডেস্ক:
গ্রাহকসেবার মানোন্নয়নে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে চালু হয়েছে আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস। এই অফিস ঘিরে পাসপোর্ট কার্যক্রমে সাধারণ গ্রাহকদের তেমন কোনো ভোগান্তির অভিযোগ না থাকলেও পাসপোর্ট অফিস ঘিরে নতুন ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে রয়েছে বিস্তর অভিযোগ।
পাসপোর্ট প্রত্যাশীদের ভাষ্যমতে, ফটোকপি, প্রিন্ট ও ফরম পূরণে পাঁচ থেকে ছয়গুণেরও বেশি টাকা নেওয়া হচ্ছে। সাধারণত আগে থেকে এখানে কোনো প্রিন্ট ও ফটোকপির দোকান না থাকায় এবং ফটোকপির দোকানগুলো দূরে থাকায় পাসপোর্ট অফিস ঘিরে কাছাকাছি প্রিন্ট ও ফটোকপির নতুন ব্যবসায়ীরা গ্রাহকদের কাছ থেকে এই অতিরিক্ত অর্থ আদায় করছেন।
আদাবর থেকে পাসপোর্ট করতে আসা নিলুফার ইয়াসমিন বলেন, পাসপোর্ট অফিস নতুন হওয়ায় এখনো কোনো ধরনের ভোগান্তির পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। কোনো দালালের আনাগোনাও শুরু হয়নি। ভোগান্তি ছাড়াই সব ধরনের কার্যক্রম করা গেলেও ফটোকপি ও প্রিন্টের দোকান সরাসরি ডাকাতি করছে।
তিনি বলেন, অনলাইন থেকে এক কপি জাতীয় পরিচয়পত্র প্রিন্ট দিতে ৩০০ টাকা করে নিচ্ছে। যেখানে অন্য জায়গা থেকে করলে ১০ থেকে ২০ টাকার বেশি নেয় না। সাধারণত আগারগাঁও পাসপোর্ট অফিসে এত কাজটুকুও ফ্রি করে দেয়। এক পৃষ্ঠা কাগজ ফটোকপি করতে পাঁচ টাকা করে নিচ্ছে, যেখানে বাইরে থেকে করলে দুই-তিন টাকার বেশি নেয় না। আশপাশে কোনো দোকান না থাকায় পাসপোর্ট অফিস ঘিরে নতুন ব্যবসায়ীচক্র ডাকাতি শুরু করছে।
সাভার থেকে পাসপোর্টের কাজে আসা মো. সুলাইমান বলেন, পাসপোর্ট অফিসে কোনো ধরনের সমস্যার মুখোমুখি হয়নি। তবে ফটোকপি প্রিন্টারের দোকানে অনেক বেশি টাকা রাখছে। বাধ্য হয়েই তাদের কাছ থেকে ফটোকপি ও প্রিন্টের কাজ করতে হচ্ছে।
একই ধরনের অভিযোগ রয়েছে আরও গ্রাহকের। কারও কারও কাছ থেকে ফরম পূরণেও অধিক টাকা নেওয়া হচ্ছে বলে জানান তারা।
এদিকে সরেজমিনে ফটোকপি ও প্রিন্টারের একাধিক দোকানে ঘুরে দেখা গেছে, পৃষ্ঠাপ্রতি ফটোকপিতে পাঁচ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে। অনলাইন থেকে ভোটার আইডি কার্ডের প্রিন্ট দিতে ৩০০ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে। কেউ কেউ আবার ২০০ থেকে ২৫০ টাকা নিচ্ছেন। পাসপোর্ট আবেদনের ফর্ম পূরণেও নেওয়া হচ্ছে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা। এছাড়া ছবি প্রিন্টসহ যে কোনো ধরনের কাজে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করতেও দেখা গেছে।
অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের কারণ জানতে চাইলে রোহান কম্পিউটার নামে এক দোকানের মালিক বলেন, অনলাইন থেকে নিজে নিজে করে ফেলেন তাহলে এক টাকাও লাগবে না।
মোহাম্মদপুর পাসপোর্ট অফিস পশ্চিমের ডেপুটি ডাইরেক্টর মেহেদী হাসান জাগো নিউজকে বলেন, বাইরে দোকানে অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার বিষয়টি আমাদের এখতিয়ারের মধ্যে নেই। খুব বেশি দোকান না থাকায় অল্পকিছু দোকানি বেশি টাকা দাবি করতে পারে। যারা পাসপোর্ট প্রত্যাশী তারা আগে থেকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রিন্ট করে নিয়ে এলে এখানে দোকানদারদের অতিরিক্ত টাকা দেওয়া লাগবে না।
তিনি বলেন, আমাদের এখানে দালালমুক্ত পাসপোর্ট অফিস করার প্রত্যয়ে কাজ শুরু করেছি। আশা করছি দালালুমক্ত রাখতে পারবো।
আজ থেকে শুরু হয়েছে মোহাম্মদপুর আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের কার্যক্রম। সাভার, ধামরাই, মোহাম্মদপুর, আদাবর, দারুস সালাম, শাহ আলী, হাজারীবাগ, নিউ মার্কেট থানার নাগরিকরা এই অফিস থেকে পাসপোর্ট সেবা পাবেন।