নিজস্ব প্রতিবেদক: সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার মানিকখালি গ্রামের হুমায়ুন কবির নামের এক আসামীকে গ্রেফতারের ঘটনায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। তোলপাড় চলছে গোটা শ্যামনগর উপজেলাজুড়ে। আসামীর নিজস্ব বাহিনীর হামলায় এসআই আব্দুর রাজ্জাকের হাত ঝুঁলেছে গলায় এমন অভিযোগ এসআইয়ের। তবে আসামীর স্বজনদের পাল্টা অভিযোগ, পুলিশই হামলা চালিয়েছে গ্রামবাসীর উপর। আর শ্যামনগর থানার ওসি বলছেন, ধস্তাধস্তি হয়েছে।
গত মঙ্গলবার বেলা একটার দিকে শ্যামনগর উপজেলার মানিকখালি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। হুমায়ুন কবিরকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টার ঘটনায় আহত হয়ে শ্যামনগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয় এসআই আব্দুর রাজ্জাক। বুধবার তিনি হাসপাতাল ত্যাগ করেছেন।
শ্যামনগর থানার এসআই আব্দুর রাজ্জাক জানান, মানিকখালি গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে হুমায়ুন কবিরের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। আমরা থানা পুলিশের একটি টিম গ্রেফতারে অভিযানে গেলে আতর্কিতভাবে আমাদের উপর হামলা চালায়। আমার বাম হাতের জয়েন্ট থেকে হাড় সরে গেছে। হাসপাতাল থেকে হাত ব্যান্ডেজ করে দিয়েছে। ঝুলিয়ে রাখতে হবে। গতকাল বুধবার হাসপাতাল থেকে থানায় ফিরে এসেছি।
ঘটনার বিবরণে তিনি বলেন, হুমায়ুনের বিরুদ্ধে হওয়ার একটি মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আমি নিজেই। এছাড়া পৃথক আরেকটি মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আইনুদ্দীনসহ থানার এসআই নুর কামাল, এএসআই বিল্লাল হোসেন, কন্সটেবল রিপন হোসেনকে নিয়ে গ্রেফতারের জন্য অভিযানে যায়। হুমায়ুনের বিরুদ্ধে এক ডজনেরও বেশী মামলা রয়েছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলা নং ৩২, তারিখ ১৮.০৫.২০ ইং ও মারপিটের মামলা নং ৫ তারিখ ০৫.০৫.২০ ইং এই দুই মামলায় হুমায়ুন কবির পলাতক ছিল। গ্রেফতার করে থানায় ফিরে আসার সময় হুমায়ুনের বাহিনৗ ও আতœীয়-স্বজনেরা পুলিশের উপর হামলা চালিয়ে আসামীকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে।
শ্যামনগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা অজয় কুমার সাহা বলেন, এসআই আব্দুর রাজ্জাকের ইনজুরির বিষয়টি এই মুহূর্তে বলা সম্ভব হচ্ছে না। বিস্তারিত পরে জানাতে পারবো।
এদিকে, আটক হুমায়ুন কবিরের ভাগ্নে আসাদ বাবু জানান, মামা সমাজসেবক মানুষ। এলাকার মানুষরা তাকে খুব ভালোবাসেন। যার কারণে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করলে এলাকার মানুষ গ্রেফতারের কারণ জানতে চায়। থানায় নিয়ে যেতে বাঁধা দেয়। এ সময় পুলিশ সদস্যরা গ্রামবাসীর উপর হামলা চালায়। কয়েকজন আহত হয়ে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিয়েছে। এখন পুলিশ বলছে, গ্রামবাসী পুলিশের উপর হামলা চালিয়েছে।
এ ঘটনায় শ্যামনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নাজমুল হুদা জানান, মামলার আসামী হুমায়ুনকে গ্রেফতারকালে স্বজনেরা রাখার চেষ্টা করেছিল। ছিনিয়ে নিতে চেয়েছিল। কিন্তু পুলিশের টিম তাকে গ্রেফতার করে নিয়ে আসে। সেখানে পুলিশের সাথে আসামীর স্বজনদের ধ্বস্তাধস্তি হয়েছে। গ্রেফতারের পর আসামী হুমায়ুনকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।