নিজস্ব প্রতিবেদক: সাতক্ষীরার শ্যামনগরে ডজন মামলার আসামী হুমায়ুনের বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবীতে মানবন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে রমজাননগর ইউনিয়নবাসী। বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টায় শ্যামনগর প্রেসক্লাব চত্বরে মানববন্ধন শেষে থানা ঘেরাও করে অত্যাচারী হুমায়ুন কবিরের বিচার দাবি করে এলাকাবাসী।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন শ্যামনগর উপজেলার রমজাননগর ইউনিয়নের ভেটখালী গ্রামের জি.এম. আল-ফারুক, সুনীল বৈদ্য, হিমাংশু জোয়াদ্দার, মনো মিস্ত্রীসহ আরও অনেকে।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, রমজাননগর ইউনিয়নের বাসিন্দা হুমায়ুনের অত্যাচারে এলাকার মানুষ অতিষ্ট। হামলা, মামলা দিয়ে নানা রকম হয়রানি চালিয়ে যাচ্ছে। তার মামলার ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না। কয়েকদিন আগে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করলেও পুলিশের উপরও হামালা চালিয়েছে। পুলিশ যখন নিরাপত্তা পায় না তখন আমরা গ্রামের সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা কোথায়। আমরা নিরাপত্তা চাই।
মানববন্ধনে সুনীল বদ্দি বলেন, আমাদের মন্দির দখল করে নিয়েছে এই হুমায়ুন। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ হয়েও আমরা নিরাপত্তা পাচ্ছি না।
রমজাননগরের অত্যাচারী হুমায়ুনের হাত থেকে বাঁচতে মানববন্ধন থেকে প্রশাসনের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন এলাকাবাসী। শ্যামনগর প্রেসক্লাব চত্বরে মানববন্ধন শেষে রমজাননগর ইউনিয়নের শত শত গ্রামবাসী থানা ঘেরাও করে অবস্থান কর্মসূচী পালন করে।
শ্যামনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নাজমুল হুদা বলেন, রমজাননগর গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে হুমায়ুনের বিরুদ্ধে থানায় ১৮টি মামলা রয়েছে। সেসব মামলা বিচারাধীন রয়েছে। সম্প্রতি তাকে তিনটি মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ প্রশাসন সোচ্চার রয়েছে। নির্যাতিত কোন মানুষ তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ, গত ২ই জুন ২০২০ মঙ্গলবার বেলা সাড়ে বারটার দিকে শ্যামনগর থানা পুলিশের একটি টিম হুমায়ন কবীরকে তার নিজ বাড়ি থেকে আটক করে। ডজনের অধিক মামলার আসামী হুমায়ুন এর বিরুদ্ধে সদ্য দায়ের হওয়া ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ সর্বশেষ তিনটি মামলায় জামিনে না থাকায় পুলিশ তাকে গ্রেপ্তারে অভিযান চালায়। আসামী হুমায়ুনকে আটককালে হুমায়ুনের ভাই আলী হায়দারের নেতৃত্বে তার পরিবার ও পাড়াপড়শীরা পুলিশের উপর হামলা করে। যদিও পুলিশ হুমায়ুনকে আটক করতে সমর্থ হয় তথাপি পুলিশের উপ-পরিদর্শক আব্দুর রাজ্জাক মারাত্মকভাবে আহত হয়ে শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন। এছাড়া শ্যামনগর থানা পুলিশের আরও চার সদস্য হুমায়ুন বাহিনীর হামলায় সামান্য আহত হলেও তারা শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা নেন।
হুমায়ুনকে জেল হাজতে প্রেরন করা হলেও পুলিশের কাজে বাধাঁ প্রদান ও হামলার ঘটনায় শ্যামনগর থানায় কোন মামলা দ্বায়ের হয়নি। এই নিয়ে সাধারণ মানুষের মাঝে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। মানুষের মুখে মুখে একটাই কথা যেখানে পুলিশের নিরাপত্তা নেই, সেখানে সাধারণ মানুষ কিভাবে নিরাপত্তা পাবে ?