আক্তারুজ্জামান, সীমান্ত (কলারোয়া) প্রতিনিধি:
দেশের দক্ষিণ অঞ্চলীয় উপজেলা কলারোয়া। অন্যান্য এলাকার থেকে এখানকার পরিবেশ কৃষি তথা পশু পালনের জন্য সর্বাধিক উবর ভূমি। কলারোয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে উৎপাদিত খাদ্য শস্য, সবজি, মাছ যেমন দেশ-বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে তেমনি এই এলাকায় পালিত পশু দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বাজারজাত করনের মাধ্যমে দেশীয় অ-হিমায়ীত মাংসের চাহিদা পুরন করে জাতীয় অর্থনৈতিক উন্নয়নে ব্যাপক অবদান রাখছে।
কলারোয়া উপজেলার জনসাধারণ পশু পালনের দিকে ব্যাপকভাবে আকৃষ্ট হচ্ছে। কেউবা খামারের মাধ্যমে আবার কেউবা ঘরোয়া ভাবে আবার কেউ শখের বসে পশু পালন করে থাকেন। এতে করে পারিবারিক স্বাবলম্বী হওয়ার পাশাপাশি মোট জাতীয় সঞ্চয়ে ব্যাপক অবদান রাখতে সক্ষম হচ্ছেন ।
কলারোয়া উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম পর্যায়ে গরু মোটাতাজা করন, দুগ্ধ খামার তথা গাভী পালন, ছাগল মোটা তাজা করন, বিভিন্ন প্রকারের মুরগি পালন, পাখি পালন ইত্যাদি প্রকল্পের মাধ্যমে যুবসমাজ ভয়াবহ বেকারত্ব থেকে মুক্তি পাচ্ছে। আর এই বৃহৎ উপজেলাবাসীর পালিত পশু স্বাস্থ্য সুরক্ষায় নিরলসভাবে দায়িত্ব পালন করছে উপজেলা প্রাণীসম্পদ দপ্তর। এখানকার গৃহীত বিভিন্ন কার্যক্রম পশু স্বাস্থ্য সুরক্ষার পাশাপাশি জনসাধারণকে পশু পালনে অনুপ্রাণিত করে আসছে। উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তার মাধ্যমে উপজেলার জনসাধারণ বিনামূল্যে পশু স্বাস্থ্য সেবা, সিজনাল রোগ প্রতিরোধক কর্মসূচি গ্রহণ, জরুরি ঔষধ সরবরাহ সহ গবাদি পশুর জরুরি সমস্যার সমাধান করা হচ্ছে বলে জানান স্থানীয়রা।
উপজেলার পৌর সদরের মুরারীকাঠি এলাকার আমিরুল ইসলাম জানান, আমি নাম স্বর্বস্ব বেসরকারি ও অনভিজ্ঞ প্রাণী চিকিৎসকের সেবা নিয়ে আর্থিক ভাবে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিলাম। এরপর আমি আমার বন্ধু পেয়ারে আশেকে রাসূল সুমনের পরামর্শে উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ড. অমল কুমার সরকারের সাথে সাক্ষাৎ করি এবং তার পরামর্শ নিয়ে এখন আবার লাভজনক ভাবে পশু পালন করছি।
উপজেলার ছলিমপুরের গরুর খামারী ময়না জানান, আমি উপজেলা প্রাণীসম্পদ অফিসের সহযোগিতা না পেলে নিঃস্ব হয়ে যেতাম। গ্রাম্য হাতুড়ে ডাক্তারের অপচিকিৎসায় আমি প্রায় সর্বশান্ত হয়ে গিয়েছিলাম। সরকারের এমন কার্যক্রম যেন চলমান থাকে আমি এই প্রত্যাশা করছি ।
উপজেলা প্রাণীসম্পদ দপ্তরের সার্বিক কার্যক্রম সম্পর্কে জানতে চাইলে কলারোয়া উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ড. অমল কুমার সরকার ( পি এইচ ডি) জানান, কলারোয়া উপজেলায় পালিত পশু জাতীয় অর্থনৈতিক উন্নয়নে ব্যাপক অবদান রাখতে সক্ষম হচ্ছে। কলারোয়া উপজেলা প্রাণীসম্পদ দপ্তরের পশু স্বাস্থ্য সুরক্ষা মূলক কার্যক্রম, খামারী সচেতনতায় নানা ধরনের প্রশিক্ষণ কর্মশালা পরিচালনা, নিয়মিত উপজেলার প্রতিটি অঞ্চলে পরিদর্শনের মাধ্যমে সাধারণ খামারী ও গৃহপালিত গবাদি পশুর জরুরি পরামর্শ প্রদানের পাশাপাশি বিনামূল্যে স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও সরকার প্রদত্ত ঔষধ সামগ্রী বিনামূল্যে বিতরণ করা হচ্ছে ।
তিনি আরো বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে সরকার নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ করেছে । ঠিক তেমনি উপজেলার পশু স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও জরুরি সমস্যা বিবেচনায় হটলাইন সেবা চালু করা হয়েছে । এ ক্ষেত্রে দূর- দূরান্তের জনসাধারণ তাৎক্ষনিক ভাবে সরকারি সেবা গ্রহণ করছেন। এর পাশাপাশি আমরা উন্নতমানের বিভিন্ন প্রজাতির ঘাসের কাটিং সরবরাহ করে থাকি। যা খাওয়ানোর মাধ্যমে দুগ্ধ উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে ।