কালিগঞ্জ (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি: পুলিশ, বিজিবি, আনসার, র্যাব, স্ট্রাইকিং ফোর্স ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট’দের উপস্থিতিতে কঠোর নিরাপত্তার মাধ্যমে কালিগঞ্জ উপজেলার ৫টি ইউনিয়নে উপ নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। এর মধ্যে কুশলিয়া ও মৌতলা ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে, কৃষ্ণনগর ইউনিয়নে মেম্বর পদে এবংবিষ্ণুপুর ও তারালী ইউনিয়নে মহিলা মেম্বর পদে নির্বাচন হয়। বৃহস্পতিবার গতকাল সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
কুশুলিয়া ইউনিয়নের ফলাফল:
নির্বাচনে কুশুলিয়া ইউনিয়নের ৯টি কেন্দ্রে ৪৮টি বুথে ১৮ হাজার ১শ’ ২৪জন ভোটারের মধ্যে ৮ হাজার ৪শ’ ১১ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে। এর মধ্যে ২শ’৮৬টি ভোট বাতিল হয়। কুশুলিয়া ইউনিয়নে উপজেলা বি,এন,পি’র সহ সভাপতি শেখ এবাদুল ইসলাম স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে ঘোড়া প্রতীকে ৬হাজার ৮শ’ ৮২ ভোট পেয়ে বেসরকারীভাবে নির্বাচিত হয়েছে। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও জেলা আওয়ামীলীগের সদস্য সাতক্ষীরা জর্জ কোটের এপিপি এ্যাডঃ মোজাহার হোসেন কান্টু নৌকা প্রতীকে পায় ১হাজার ১শ’ ৪৩ ভোট।
মৌতলা ইউনিয়নের ফলাফল:
মৌতলা ইউনিয়ন পরিষদের ৯টি কেন্দ্রে ৪২টি বুথে ১৫ হাজার ১শ’ ১১জন ভোটারের মধ্যে ৭হাজার ৫শ’ ৬৯জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে। এর মধ্যে ৪৮টি ভোট বাতিল হয়। নির্বাচনে আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী কাজী রফিকুল ইসলাম বাটুল স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আনারস প্রতীক নিয়ে ৪ হাজার ৮শ’ ৩৭ ভোট পেয়ে বেসরকারীভাবে নির্বাচিত হয়েছে। তার নিকট তম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামীলীগের মনোনিত প্রার্থী যুবলীগ নেতা শেখ মাহাবুবুর রহমান সুমন নৌকা প্রতীক নিয়ে ২হাজার ৭শ’ ৩২ ভোট পায়।
কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের ফলাফল:
কৃষ্ণনগর ইউনিয়ন পরিষদের ৬নং ওয়ার্ডের সাধারণ সদস্য পদে তপন রায় মোরগ প্রতীকে ৯শ’ ৭ ভোট পেয়ে বেসরকারীভাবে নির্বাচিত হয়েছে। তার নিকট তম প্রতিদ্বন্দ্বী নুর হোসেন তালা প্রতীকে পেয়েছে ৬শ’ ৫৮ভোট।
বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের ফলাফল:
বিষ্ণুপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৪,৫ ও ৬নং সংরক্ষিত ওয়ার্ডের মহিলা সদস্য পদে পূর্ণিমা রানী মন্ডল বই প্রতীকে ১ হাজার ৩শ’ ৪ ভোট পেয়ে বেসরকারীভাবে নির্বাচিত হয়েছে। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সুফিয়া খাতুন পায় ৪শ’ ২৭ ভোট।
তারালি ইউনিয়নের ফলাফল:
তারালী ইউনিয়ন পরিষদের ১,২ ও ৩নং সংরক্ষিত ওয়ার্ডের মহিলা সদস্য পদে লিপিয়া খাতুন তালগাছ প্রতীকে ১ হাজার ৫শ’ ৮৪ ভোট পেয়ে বেসরকারীভাবে নির্বাচিত হয়েছে। তার নিকটততম প্রতিদ্বন্দ্বী থানা আওয়ামীলীগের সভানেত্রী জেবুন্নাহার জেবু সূর্যমূখী প্রতীকে পেয়েছে ৫শ’ ৯১ ভোট।
ইউএনও’র বিরুদ্ধে অভিযোগ:
কুশুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের উপ-নির্বাচনে আওয়ামীলীগের দলীয় প্রার্থী এ্যাডঃ মোজাহার হোসেন কান্টু ভোটে অনিয়ম ও কারচুপি অভিযোগ করে আওয়ামীলীগের দলীয় প্রার্থীর পরাজিত করার অভিযোগ করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সরদার মোস্তফা শাহিনের বিরুদ্ধে। তিনি সাংবাদিকদের বলেন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের দলীয় প্রার্থীকে হারানোর জন্য তিনি সকাল ৮টার পরিবর্তে ৯টার সময় ভোট শুরু করেন। তিনি শাসক দল আওয়ামীলীগকে ঘৃণা করে বি,এন,পি’র খালেদা তারেকের অনুসারী হয়ে আওয়ামীলীগের নির্বাচনী ক্যাম্পে যেয়ে আওয়ামীলীগ নেতা কর্মীদের মারপিট ও বিতাড়িত করেন। এব্যাপারে তিনি বলেন আমি তার বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশন, কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগ, প্রধান মন্ত্রী, ডি,আই,জি, পুলিশ সুপার এবং জেলা প্রশাসকের নিকট লিখিত অভিযোগ করেও কোন প্রতিকার পাইনি। এছাড়াও তিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সরদার মোস্তফা শাহিনের বিরুদ্ধে আরও বলেন তিনি এখানে যোগদান করার পর থেকেই নিজেকে প্রধানমন্ত্রীর চেয়েও ক্ষমতাধর ব্যক্তি মনে করেন। যার কারণে বিগত উপ নির্বাচনে কৃষ্ণনগর ইউনিয়ন পরিষদে আওয়ামীলীগের দলীয় প্রার্থীর এবং উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের দলীয় প্রার্থীর ভরাডুবি হয়।
এপ্রসংগে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সরদার মোস্তফা শাহিন তার অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন উল্লেখ করে বলেন, আমি বর্তমান সরকারের নির্বাচন কমিশনের অধীনে এবং কমিশনের নির্দেশে দায়িত্ব পালন করেছি। অবৈধ সুবিধা দিয়ে তাকে বিজয়ী করার ব্যবস্থা না করার কারণে তিনি আমার বিরুদ্ধে নানাবিধ অপ্রচার চালিয়ে সাধারণ জনগণকে বিভ্রান্ত করছেন।