করোনা শনাক্তের পর আইসোলেশনে থাকা গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী এখন শারীরিকভাবে ভালো ও সুস্থ আছেন।
আজ মঙ্গলবার সকালে তিনি বলেন, ‘কোনো বিভ্রান্তিমূলক সংবাদ প্রকাশ না করার জন্যে সবার প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি। এখন পর্যন্ত আমি শারীরিকভাবে আলাদা কোনো সমস্যা বা জটিলতা অনুভব করছি না। ভালো আছি, সুস্থ আছি।’
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘গতকাল গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের উদ্ভাবিত কিটের প্রধান বিজ্ঞানী-গবেষক ড. বিজন কুমার শীল নিজেই অ্যান্টিজেন কিট দিয়ে আমার পরীক্ষা করেছেন। পরীক্ষায় করোনা শনাক্ত হয়েছে। প্রাথমিক অবস্থাতেই শনাক্ত হয়েছে। তা না হলে আমাকে যদি পরীক্ষার জন্যে অন্য কোনো বা একাধিক হাসপাতালে যেতে হতো, তাহলে আমার থেকে আরও অনেকে সংক্রমিত হতেন। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের কিটের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো, ৩ থেকে ৫ মিনিটে করোনা শনাক্ত করা যায়।’
তিনি বলেন, ‘আজ দুপুরে কিডনি ডায়ালাইসিসের জন্য আমাকে আবার গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে যেতে হবে। তখন অ্যান্টিবডি কিট দিয়ে পরীক্ষা করা হবে। ড. বিজন কুমার শীলই পরীক্ষাটি করবেন। যদিও দুই দিনে শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা খুব কম। আগামীকাল আবারও পরীক্ষা করতে হবে।’
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর করোনা শনাক্ত হওয়ায় যারা আতঙ্কিত হয়েছেন, তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘অসুস্থতা কোনো অস্বাভাবিক বিষয় না। যেকোনো মানুষেরই রোগ হতে পরে। আমারো করোনা শনাক্ত হয়েছে। আমরা কাজ করছি মানুষের জন্য। ১৯৭১ সালে অত্যন্ত সীমিত সামর্থ্য নিয়ে কাজ করলাম। যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশে গরিব মানুষের জন্যে কাজ শুরু করে আজ এই অবস্থানে পৌঁছালাম। আর আজ মহামারিকালে দেশের মানুষের জন্যে কিছু করবো না, করার চেষ্টা করবো না— তা তো হয় না। কেউ ভয় পাবেন না, আতঙ্কিত হবেন না। দোয়া করবেন, যাতে দ্রুত সম্পূর্ণ করোনামুক্ত হয়ে মানুষের জন্য কাজ করা অব্যাহত রাখতে পারি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি আবারো সরকার, ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) কর্তৃপক্ষের কাছে আহ্বান জানাচ্ছি, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের উদ্ভাবিত কিটের দ্রুত অনুমোদনে উদ্যোগ গ্রহণ করুন। আমরা জেনেছি, বিএসএমএমইউ এখন পর্যন্ত ৩০০ কিট পরীক্ষা করেছে। কোনো কিটের কার্যকারিতা পরীক্ষার জন্য সংখ্যা হিসেবে ৩০০ খুব কম নয়। এরকম মহামারিকালে ৩০০’র চেয়ে বেশি নমুনা পরীক্ষা করার দরকার আছে বলেও আমি মনে করি না। সুতরাং এখন পর্যন্ত যতসংখ্যক কিটের কার্যকারিতা পরীক্ষা হয়েছে, তার ভিত্তিতেই বিএসএমএমইউ চাইলে প্রতিবেদন দিয়ে দিতে পারে।’
‘আমি দাবি জানাচ্ছি ও অনুরোধ করছি, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের কিটের ব্যাপারে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া হোক। আমরা তো অর্থ আয় বা ব্যবসার জন্যে অনুমোদন চাইছি না। দেশের মানুষকে মহামারি থেকে রক্ষায় কাজ করতে চাইছি। বাংলাদেশের জনসংখ্যার তুলনায় সরকারের পরীক্ষার সক্ষমতা তো খুবই নগণ্য। পরীক্ষা করে শনাক্ত করা না গেলে পরিস্থিতি কতটা ভয়ঙ্কর হতে পারে, তা কি আমরা এখনো বুঝতে পারছি না?’, যোগ করেন ডা. জাফরুল্লাহ।