আকরামুল ইসলাম:
করোনা সংক্রমণের পর আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন চিকিৎসকরাও। সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে আইসোলেশন ওয়ার্ডে করোনা সন্দেহে চার দিন ভর্তি রয়েছে এক রোগী। আইইডিসিআরকে বার বার বলেও এখনো পর্যন্ত তার কোন নমুনা সংগ্রহ বা পরীক্ষা-নিরীক্ষার কোন ব্যবস্থা করা হয়নি। এসব নিয়ে ক্ষোভে ফেঁটে পড়েছেন চিকিৎসকরা।
বলছেন, কোন সেফটির ব্যবস্থা নেই। কিছুই নেই, এই মুহূর্তে কি করবো। আমারও পরিবার আছে। করোনা রোগীর সেবা ও প্রস্তুতি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার অসীম কুমার সরকার তার ফেসবুকে স্টাটাস দিয়েছেন।
ফেসবুক স্টাটাসে তিনি লেখেন (হুবহু তুলে ধরা হলো) : আগেই বলছিলাম, করোনা আর ডেঙ্গি এ দেশে মারাত্বক আকার ধারণ করবে। এবার বলছি,এই বার দেশে একটা নাটক শুরু হবে। করোনার মতো মারাত্বক রোগের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ করতে সরকারের কার্যত কোন পদক্ষেপই নাই। সব ছিলো ভাওতাবাজী। আস্তে আস্তে সব ভাওতাবাজী বের হচ্ছে। একটা মাস্ক দিতে গিয়া টাকার অভাব পড়ে। কিন্তু কোটি টাকার গাড়ী কিনতে সমস্যা নাই। এখন শুরু হবে ডাক্তারের ভুল ধরা। কোন প্রকার প্রোটেকশন ছাড়া এই রোগের চিকিৎসা করা সত্যিই অসম্ভব। সবারই পরিবার আছে। শুরু হবে ডাক্তারের ভুল ধরা। কিন্তু কোন ডাক্তার বলতেছে না, তারা চিকিৎসা দিবে না। বরং খুবই বেসিক নিড, একটা পিপিই চাই। কিন্তু পিপিই তো দূরে থাক, মাস্কই নাই। এই অবস্থায় কিছুটা দূরত্ব তৈরী হওয়াটায় স্বাভাবিক। আর সেটা নিয়া বাজিমাত করবে মিডিয়া, আর কিছু ধান্ধাবাজ আমলা, নেতা। শেষ কথা হবে “সব দোষ ডাক্তারদের।
ফেসবুকে নিজের ক্ষোভ আর দুঃখ প্রকাশের পর যোগাযোগ করা হয় সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার অসীম কুমার সরকারের সঙ্গে। তিনি জানান, একটা গ্লাবস, একটা মাক্স আমি নিজের টাকায় কিনেছি। অথরিটি বলছে, সব ধরণের প্রস্তুতি রয়েছে। কিন্তু কি প্রস্তুতি রয়েছে আপনারাই বলুন। সদর হাসপাতালের আইসোলেশনে একজন রোগী ভর্তি রয়েছে। আইইডিসিআরকে বার বার বলেও কোন ফল হয়নি। এখন আর ফোন দিলে রেন্সপন্স নেই।
তিনি বলেন, আমাদের কোন প্রটেকশনের ব্যবস্থা নেই। এখন চাকরির থেকে নিজের জীবন বাঁচানো দায় হয়ে পড়েছে। আমারও পরিবার আছে। কয়েকজন ডাক্তার যদি আক্রান্ত হয়ে পড়ে তবে টোটাল হেলথ সিস্টেমটাই বন্ধ হয়ে পড়েছে। কোন স্টাফই তার পাশে যাবে না। সবারই পরিবার আছে। দেশের এই ক্রাইসেস মুহূর্তে রোগীদের সেবা দিতে পারলে আমাদের ভালো লাগে। কিন্তু কোন সেফটি নিয়ে আমরা চিকিৎসা দিবো। আমার কোন সহকর্মী আক্রান্ত হলে তার কোন পরীক্ষা-নিরীক্ষায় হবে না। অথচ তাকে কাজে পাঠানো হবে। এই পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছি আমরা চিকিৎসকরা।
এদিকে, সাতক্ষীরা জেলাব্যাপী হোম কোয়ারেন্টাইনে নেওয়া হয়েছে ৬৯০ জনকে। আর বিভিন্ন দেশ থেকে ফিরেছেন ৬৮৬৮ জন।