আহাদুর রহমান: রাস্তার দু’ধারে গাছের সারি। এক একরের বেশি জায়গা জুড়ে সারি সারি বিভিন্ন জাতের বনজ বৃক্ষ। বলছি ‘ক্লিন সাতক্ষীরা গ্রিন সাতক্ষীরা’র রূপকার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের কথা। এ রকম উদ্যান জেলা প্রশাসকদের কার্যালয়ে খুব কমই আছে।
কম বেশি সাড়ে পাঁচশ’র অধিক বনজ গাছ আছে এখানে। প্রধানত মেহগনি, শিশু, দেবদারু, ইউক্যালিপটাস, নারিকেল, সুপারি গাছ এখানে আছে। জেলার বিভিন্ন প্রান্তের মানুষের আনাগোনা এ জায়গায়। জেলা প্রশাসকের কার্যালয় এবং জেলা ও দায়রা জজ আদালতে প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষের আগমন ঘটে। যাদের বেশির ভাগের অপেক্ষা বা বিশ্রামের জায়গা হিসেবে ব্যবহৃত হয় এ উদ্যানটি। তবে সমস্যা হয় বর্ষা মৌসুমে। বর্ষার পানি নিষ্কাশনের পথ না পেয়ে জমা হয় এখানে। তখন ভোগান্তি পোহাতে হয় কাজ মেটাতে আসা ব্যাক্তিদের। পানি জমে এ উদ্যানের বেশ কিছু গাছ মরেও গেছে।
মূল উদ্যানে ছিল প্রায় তিন শতাধিক গাছ। পানি জমে মরতে মরতে এখন আর ২২৭টি আছে। এছাড়াও রাস্তার ধারে লাগানো ছিল প্রায় দুই শতাধিক গাছ। এখন অবশিষ্ট আছে ১৪২টি।
জেলা জজ কোর্টে আসা আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, যখনই এখানে আসি এই গাছের ছায়ায় এসে বসি। এখানে বসলেই মনে শান্তি পাই। একটু ভীড় থাকলেও ভাল লাগে। কিন্তু এখন এখানে দাঁড়ানোর মত পরিবেশ নেই। সবখানে কাদা আর পানি।
বঙ্গবন্ধু পেশাজীবি পরিষদের কোর্ট শাখার সভাপতি ও জেলা মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক মনোরঞ্জন বন্দোপাধ্যায় জানান, উদ্যানটিতে প্রতিদিনই বহুমানুষের ভীড় হয়। প্রত্যেক বর্ষার সময় দেখি একদিন বৃষ্টিপাত হলে দুই থেকে তিনদিন পানি জমে থাকে। তখন সবারই ভোগান্তি হয়। এ ছাড়াও জমা পানির কারনে মশারও উপদ্রব লক্ষনীয়। তবে যদি উদ্যানটিতে বালি বা মাটি ফেলে ভরাট করা হয় তাহলে হয়তোবা এ সমস্যা থেকে পরিত্রান পাওয়া যাবে।
জেলা নাগরিক কমিটির সদস্য জহুরুল কবীর জানান, জায়গাটি খুবই পরিবেশবান্ধব। অনেক রকম বনজ বৃক্ষ আছে এখানে। মূলত: নিচু জায়গা হওয়ার কারণে এখানে পানি জমে। সেই সাথে অব্যবস্থাপনার ফলে এখানকার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। গাছও মারা যাচ্ছে, সাথে পাশের রাস্তাটিও নষ্ট হচ্ছে। এখানে বাচ্চারা বিকালে খেলা করত যা এখন বন্ধ। কোর্টে আসা মানুষরা এখানে বিশ্রাম নিত যা আপাতত বন্ধ। তবে জায়গাটি ভরাট করলে হয়তো পরিস্থিতির উত্তোরণ ঘটতো।
অফিস পাড়া হিসেবে পরিচিত জেলা প্রশাসক ও জেলা জজ আদালতের সম্মুখে অবস্থিত এ উদ্যানটি জেলার সকলের কাছেই প্রিয় একটি জায়গা। উদ্যানটির জমা পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করলে অথবা মাটি বা বালি দিয়ে উঁচু করলে হয়তো এ পরিস্থিতি থেকে পরিত্রান পাওয়া যাবে। এখানে আসা দর্শনার্থিরা এ বিষয়ে জেলা প্রশাসকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।